• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

মানুষকে ঘরে রাখতে `ভূতের` টহল

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২০  

সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে রাতের আঁধারে ভূত সেজে ভয় দেখিয়ে হলেও মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টা।

করোনাভাইরাসে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে অভিনব ব্যবস্থা নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশের কেপুর গ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা। রাতের আঁধারে ভূত সেজে ভয় দেখিয়ে হলেও মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টা করছেন তারা।

রাতের অন্ধকারে ফাঁকা সাদা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে সাদা ভূত। আর হঠাৎ তাদের দেখে ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এমন দৃশ্য দেখে মনে হতে পারে এটি কোন নাটক বা চলচ্চিত্র।

কিন্তু আদতে তা নয়, করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে ভয় দেখিয়ে হলেও মানুষকে ঘরে রাখতে ইন্দোনেশিয়ার জাভার কেপু গ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা শুরু করেছেন এমন অভিনব কায়দা। 

পুরো শরীরে সাদা কাপড় মুড়িয়ে, মুখে পাউডার মেখে ভূত সেজে তারা আচমকায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে ঘুরে বেড়ানো মানুষগুলোর সামনে। 

তাদের এই সাজ ইন্দোনেশিয়ার লোককাহিনীতে 'পোকং' নামেই খ্যাত। মৃত্যুর পর মানুষের আত্মা এভাবেই ভূতের বেশ ধরে আসে এবং পূর্ণিমার রাতে ঘুরে বেড়ায় এমনটাই বিশ্বাস কেপুর লোকজনের। করোনা প্রতিরোধে তাদের এই বিশ্বাসকেই কাজে লাগানো হয়েছে বলছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রধান। 

স্বেচ্ছাসেবী আনজার পানকানিংত্যাস বলেন, আমরা 'পোকং' ভয়ঙ্কর ও ভূতুড়ে হওয়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আমরা ভিন্ন কিছু একটা করতে চেয়ে এমন পথ বেছে নিয়েছি; ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছি। কারণ, ‘পোকং’ ভূতুড়ে এবং ভয়ংকর।

তাদের এমন উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন অনেকে। গ্রামবাসীরা জানায়, যখন থেকে পোকং রাস্তায় বের হওয়া শুরু করেছে ভয়ে বাচ্চারা ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আর এমন উদ্যোগের কারেণ সন্ধ্যার পর থেকে মানুসের যেখানে সেখানে ঘোরাও বন্ধ হচ্ছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন করা হলেও ইন্দোনেশিয়া এমন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে মানুষকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। 

কিন্তু কেপু গ্রাম প্রধানের কথায়, সেখানকার বাসিন্দারা এখনো কোভিড-১৯ এর মতো রোগের ব্যাপারে সচেতন না। তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে চায়। তাই তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বা ঘরে থাকার নির্দেশ মানানো কঠিন।

আর এ কারণেই এশিয়ার দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়তে থাকার এই সময়ে কেপুর মতো কিছু গ্রামের কর্তৃপক্ষ নিজেরাই নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২১৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৭৩ জন। এ সংখ্যা আরো বাড়ারই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা