• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ষাট গম্বুজ বার্তা

এক ইস্যুতে বদলে গেছে সৌদি আরব ও তুরস্কের সম্পর্ক

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৪  

ত এক দশকে তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে আঞ্চলিক বহু ইস্যুতে সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও উভয় দেশই স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে যেন নিজেদের অবস্থানে অনড়। এই ইস্যুই দুই দেশের সম্পর্কের নতুন করে সীমারেখা তৈরি করে দিয়েছে।

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের আওয়াজ তুলে যাচ্ছে রিয়াদ ও আঙ্কারা। তবে মাঝে রিয়াদ-আঙ্কারার সম্পর্কে ভাটা পড়ে। তবে এখন আবার ভাঙা সম্পর্ক জোড়ায় মনোযোগী হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

গত কয়েক বছরে ধরে মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। এই ইস্যু যে দেশ সমাধান করতে পারবে, সে দেশই মুসলিম বিশ্বের নেতা হয়ে উঠবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই ফিলিস্তিন নিয়ে সৌদি আরব ও তুরস্কের আগ্রহের কমতি নেই।

এই ইস্যুতে মিসর ও ইরানও নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চলমান গাজা যুদ্ধে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাদ দিয়ে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে সমাধানে এক হচ্ছে মুসলিম এই দেশগুলো।

তুরস্কের জনগণের সমর্থন আদায়ে এরদোয়ান নিজেকে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের ইসলামিক স্থাপনার রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করে যাচ্ছেন। এজন্য পশ্চিমাবিরোধী অবস্থান নিয়ে ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের সহায়তাও দিয়েছে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু নিজের দেশেই সমস্যা এরদোয়ানকে ব্যস্ত রেখেছে, তাই ফিলিস্তিন ইস্যুতে সেইভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না তুরস্ক।

সৌদি আরবও ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিজের অবস্থান নিয়ে অনড়। এখন নিজ নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জোরালো হচ্ছে রিয়াদ ও আঙ্কারা।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরের তথ্যানুযায়ী, টানাপোড়নে কয়েক বছর কাটানোর পর সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের মে মাসে তুরস্ক সফর করেন সৌদি যুবরাজ। এ সময় তিনি এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এক দশকের উত্তেজনার পর কূটনৈতিক ক্ষত সারাতে মরিয়া হয়ে উঠতে দেখা যায় আঙ্কারাকেও। যার কারণে সৌদি বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে সৌদি আরব সফরের পর এরদোগান বলেছিলেন, আঙ্কারা ও রিয়াদ ‘একটি নতুন যুগের সূচনা করতে’ সব ধরনের রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইস্যুতে তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে মতপার্থক্য দুই দেশকে দূলে ঠেলে দেয়। ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সৌদির ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় আঙ্কারা ও রিয়াদের মধ্যে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে। তবে ২০২২ সালে এরদোয়ানের সৌদি সফর এবং একই বছর যুবরাজ মোহাম্মদের আঙ্কারা সফরে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে দুই দেশের সম্পর্ক। এখন ফিলিস্তিন ইস্যুতেও জোটবদ্ধ হচ্ছে দুই দেশ।

জানা গেছে, দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্ক আরো জোরদারে রোববার রাষ্ট্রীয় সফরে তুরস্ক পৌঁছেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। তুরস্কে পৌঁছানোর পর ইস্তাম্বুলের দোলমাবাচে প্রাসাদে প্রিন্স ফয়সালকে স্বাগত জানান এরদোয়ান।

সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, উভয় নেতা সৌদি-তুরস্কের সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর আগে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রিন্স ফয়সাল।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা