• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ঢাকাকে ভালোবাসলে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করে মাত্র ৯ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ব্যবসায়ে যিনি প্রতিশ্রুতি ধরে রেখে সফলতা লাভ করতে পারে, তিনি রাজনীতিতেও প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবেন বলে মনে করেন আতিক। গত ৯ মাসে কিছু অর্জন থাকলেও তা অনেক কম বলে স্বীকার করেন তিনি।  অপরিকল্পিত ঢাকাকে সচল ও আধুনিক করার অঙ্গীকার নিয়ে ফের আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা উত্তরে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন তিনি। একান্ত সাক্ষাৎকারে  স্বপ্ন, পরিকল্পনা এবং সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে আতিকুল ইসলাম খোলামেলা কথা বলেছেন ষাটগম্বুজ বার্তার সঙ্গে।

আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়ে নগর উন্নয়নে কেন আসলেন?    

আতিকুল ইসলাম: ব্যবসা ব্যবসার জায়গায়, আর এটি হলো রাজনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে রাজনীতির আন্তঃসংযোগ আছে। যিনি ব্যবসাতে ভালো করেন, তিনি প্রতিশ্রুতিও রাখতে পারবেন।  ব্যবসা যখন করেছি তখন নিজস্ব লোক নিয়ে করছি, আর রাজনীতি যখন করছি সিটি করপোরেশন যখন চালাবো, সরকারি লোক নিয়ে চলতে হবে। সরকারি লোকদের মানসিকতা পরিবর্তন হচ্ছে ধীরে ধীরে। আমি মনে করি, মানসিকতা পরিবর্তন হলে এখানে ধীরে ধীরে  অর্থনীতি এবং রাজনীতিকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে আমরা সামনে এগোতে পারবো।

মেয়র হিসেবে গত ৯ মাসে আপনার এমন কী অর্জন,  যে জন্য মানুষ আপনাকে ভোট দেবে?

আতিকুল ইসলাম: আমাদের শহরটি হচ্ছে অপরিকল্পিত। এটিকে পরিকল্পিত করাই হলো মূল কাজ। এটি সবার সমন্বিত কাজ। সবাইকে মিলেই এগিয়ে আসতে হবে। আমরা করতে চাই— সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা।

সুস্থ  ঢাকা, সচল ঢাকা, আধুনিক ঢাকার প্রতিশ্রুতি

আমাদের ড্রেন যেগুলো আছে, সেগুলোতে যেন পানি আবদ্ধ হয়ে না থাকে, সবসময় তা দেখতে হবে। এজন্য আমরা মনে করি, জমে থাকা ড্রেনগুলোকে উদ্ধার করতে হবে। তারপর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা— এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বর্জ্য যেখানে ফেলা হয় সেটিও কিন্তু আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি থাকা অবস্থায় এই বর্জ্য থেকে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবো, সেটির কাজ এগিয়ে নিয়েছি ৯ মাসের মধ্যে।

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ পরিকল্পনা

প্রতিদিন ৩ হাজার ২০০ টন বর্জ্য হচ্ছে। আমাদের আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বর্জ্য পৃথকীকরণ। আমরা যেটা চিন্তা করেছি, সেটা হলো— নিকেতনে এসটিএস ও ময়লার গাড়ি যেগুলো আছে, সেগুলোকে দুটো ভাগ করে দিয়েছি। কারণ, আমরা দেখতে চাচ্ছি,  আমাদের বর্জ্যকে আপাতত শুষ্ক এবং ভেজা এই দুটো ভাগে ভাগ করলে কী দাঁড়ায়। পরীক্ষা হিসেবে আমরা নিকেতন এলাকাকে বেছে নিয়েছি। এজন্য আমি আমাদের নতুন যে প্ল্যান, আমিন বাজারের ল্যান্ডফিল, সেখানে একটা ইকো পার্ক তৈরি করছি। ইকো পার্কের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘুরবে। এখন হচ্ছে লিনিয়ার মেথডে, আমরা এখন ময়লা শুধু ফেলে দিচ্ছি।  সেটাকে আমরা একটি শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারবো, এটি অনেক বড় লাভজনক ব্যবসা। আমরা সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সুতরাং, বর্জ্য নিয়েও অনেক কাজ করার আছে।

ধুলারোধে মেকানিক্যাল সুইপিং

সকাল বেলা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঝাড়ু দেন, যারা দিচ্ছেন তাদেরও স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে। নগরবাসীকে আমি অত্যাধুনিক কনসেপ্ট দিতে চাই। আমার পরিকল্পনা হচ্ছে— আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ঢাকার সব রাস্তায় মেকানিক্যাল সুইপিং দিয়ে আমি কাজ করবো। সুস্থ ঢাকার জন্য আমাদেরকে সুস্থ থাকতে হবে।

হারিয়ে যাওয়া পার্কগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই

সুস্থ থাকার জন্য আমাদের হারিয়ে যাওয়া পার্কগুলোকে নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। সারাদিন একটি মানুষ অফিস করার পর বাসায় যখন আসেন, তখনতো তার ইচ্ছা হয় পরিবারকে নিয়ে কোনও পার্কে যাওয়ার।  নিরাপত্তার জন্য আমরা পার্কে সিসি ক্যামেরা বসাবো। পর্যাপ্ত লাইট থাকবে।  বিদেশে গেলে সুন্দর সুন্দর পার্কে দেখা যায়— রাতের বেলা পরিবার নিয়ে সবাই খেলছে। ঠিক সে ধরনের কনসেপ্টে ২৪টি জায়গা নির্ধারণ করে ফেলেছি। গত ৯ মাসে  ১৭টি পার্কের টেন্ডার আমি দিয়ে এসেছি। সেগুলোর কাজ শুরু হয়েছে।

৯ মাসের মূল সফলতা কালশি খাল উদ্ধার

আমি ৯ মাসে সেরকম কিছু দেখাতে পারিনি।  কালশি খালের কারণে আগে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যেতো, সেই কালশি খাল আমি  তৈরি করে ফেলেছি। সুতরাং, যেগুলো আমাদের সম্ভব ছিল অল্প সময়ের মধ্যে, ওগুলো করতে পেরেছি।

নতুন ইশতেহার কবে আসছে, কী কী বিষয়ে প্রাধান্য দিচ্ছেন?

আতিকুল ইসলাম: নতুন ইশতেহার খুব শিগগিরই আসবে। আমাদের যেসব স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা ছিল, সেগুলোর মধ্যে উত্তরা সাত নম্বর সেক্টরের পার্কটি সুন্দর করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লাইব্রেরি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট আমরা করে দেবো, যেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সেটা ব্যবহার করতে পারেন।

মাদকমুক্ত ঢাকার পরিকল্পনা

সমাজকে মাদকমুক্ত করতে খেলাধুলার কোনও বিকল্প নেই। এ কারণে আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে আন্তঃজেলা খেলাধুলার আয়োজন করবো।

আধুনিক পশু জবাইখানা

একটি আধুনিক পশু জবাইখানার ডিজাইন করে শেষ পর্যায়ে দিয়ে এসেছি। বাইরের দেশে মুসলিম দেশগুলোতে কোথাও রাস্তায় গরু জবাই করা হয় না। এগুলো ছোট ছোট ব্যাপার হলেও শহরের মধ্যে অনেক বড় প্রভাব ফেলে।

সিটি করপোরেশনে সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার

এসব কাজ তদারকি করতে আমি সিটি করপোরেশনে একটি সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার করেছি। রাস্তায় কোথায় ময়লা আছে, কোন ড্রেনের পানি উপচে পড়ছে, কসাইখানায় গরু কীভাবে জবাই দিচ্ছে— আমরা চাচ্ছি, পুরোটাকেই একটি আধুনিক ঢাকায় রূপান্তর করার জন্য।

ঢাকা সচল করার উদ্যোগ

আমরা সচল ঢাকা চাচ্ছি। কারণ, ঢাকা শহরে মানুষের গতির চেয়ে গাড়ির গতি কম হয়ে গেছে। এটাই বাস্তবতা এবং তা স্বীকার করতে হবে। সেজন্য বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। মেট্রোরেলের পাশপাশি এটা করতেই হবে।

দুইটা জায়গায় ঢাকা শহর অচল হয়ে আছে— বৃষ্টির পানিতে যানজট এবং জলজট। দুটাই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।  কোথায় কোথায় পানি জমে, এটা আমার জানা আছে। কীভাবে প্ল্যান করে পানিটাকে বের করবো, সেটার ডিজাইন করে ফেলেছি। এজন্যই বারবার বলছি যে , আমার অনুশীলন হয়ে গেছে, এখন বাস্তবায়নের সময়। কীভাবে করবো সেই পরিকল্পনাও করা শেষ।

 

সিটি করপোরেশনকে ডিজিটালাইজড করে দুর্নীতি কমানোর পরিকল্পনা

সিটি করপোরেশনের অফিসে গিয়ে দেখেছি— সাধারণ মানুষ আসছে, আমাদের কর্মকর্তাদের সামনে বসছে। তারা ট্যাক্স আদায় করছেন। কিন্তু এই কাজেও সাধারণ মানুষের ৩০-৪০ মিনিট সময় অপচয় হয়। আমি মনে করি, এটা ভোগান্তি। ঘর থেকে বের হয়ে তাকে সিটি করপোরেশনের অফিসে আসতে হচ্ছে, এটা ভোগান্তি। আবার ফেস টু ফেস কারও সঙ্গে বসলে সমঝোতার সুযোগ থাকে। যত বেশি সমঝোতা হবে, তত বেশি দুর্নীতি হবে, তত বেশি ভোগান্তি হবে। তাই আমরা একটি সফটওয়ার তৈরি করেছি। গত দুই মাসে সেটার মাধ্যমে ১১ কোটি টাকা ট্যাক্স চলে এসেছে। সাধারণ মানুষকে অফিসে যেতে হয়নি।  আমার কথা হচ্ছে, সাধারণ জনগণ সিটি করপোরেশনে যাবে না। আমরা আধুনিক প্রযুক্তির সেবা  দেবো।  অনলাইনের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স, সিটি ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্সের টাকাসহ যা যা আছে, সব ট্যাক্স নগরবাসীকে অনলাইনে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করবো।

জবাবদিহিতা নিশ্চিতের উদ্যোগ

আমি ৩৩৩ নম্বরের হটলাইন চালু করেছি। একটি অ্যাপস চালু করবো। সিটি হল মিটিং করবো প্রত্যেক মাসে। যদি নির্বাচিত হই, মেয়র হিসেবে আমি থাকবো মিটিংয়ে।  কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতা হবে এলাকার মানুষের সঙ্গে।  আমরা যেন জনবিচ্ছিন্ন না হই, আমরা যেন মনে না করি যে, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর দায়িত্ব শেষ। নির্বাচনে জয়লাভ করলে দায়িত্ব আগের চেয়ে অনেক বেশি বাড়ে। সুতরাং, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এই প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে গেলে এক এক এলাকার চাহিদা কিন্তু ভিন্ন। মোহাম্মদপুরে আমি গিয়েছি, সেখানে দেখেছি, দুই বাড়ির মাঝখানের রাস্তাকে বলা হয় ‘মেথর প্যাসেজ’। আমি বলেছি— এটা আর ‘মেথর প্যাসেজ’ থাকবে না, এটা হবে ‘সার্ভিস প্যাসেজ’। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। এই ধরনের কনসেপ্ট থেকে আমাদের বের হতে হবে। ৯ মাসে আমার দেখতে দেখতে সময় চলে গেছে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকাকে সাজাতে হবে নতুন আদলে। আমি ব্যবসা করি, জীবনে ৪৮টি মেশিন থেকে আজকে আমার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ হয়েছে ১২ হাজার মেশিনের। ১৯ হাজার শ্রমিক ভাইবোন নিয়ে আমার কর্মক্ষেত্র। আমাদের লক্ষ্য থাকতে হবে স্থির। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই লক্ষ্যে যেতে হয়েছে। একদিনে কিন্তু এই গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ হয়নি, ধাপে ধাপে অনেক চরাই উতরাই পার করে হয়েছে। কোনও কিছুই অসম্ভব না। আমি চিন্তাই করতে পারিনি, আমার এখানে এত মানুষ একদিন কাজ করতে পারবে। এখন আমার চিন্তা একটি আধুনিক ঢাকার। সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। এটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমি যদি মেয়র হই, আমিসহ আমার কাউন্সিলররা প্রতি বছর সম্পদের হিসাব জমা দেবো। আমরা মনে করি, আমাদের সেবা দিতে হবে জনগণকে। ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান করতে পারলে একটি আধুনিক ঢাকা আমরা গড়তে পারবো।

নতুন ১৮টি ওয়ার্ডকে সাজানোর পরিকল্পনা

উত্তরে যে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড, সেগুলোকে সুন্দর করে সাজাতে চাচ্ছি। সেখানে খেলার মাঠ থাকবে, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেট, ওয়েলবিয়িং সেন্টার ও কালচারাল সেন্টার থাকবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমরা মানসম্মত স্কুল করার চেষ্টা করবো। আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে ওয়ার্ডভিত্তিক যদি আমরা সুযোগ-সুবিধা করে দিতে পারি, তাহলে স্কুলের জন্য হলেও এক ওয়ার্ড থেকে আরেক ওয়ার্ডে কেউ যাবে না।

চ্যালেঞ্জ থাকবেই। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু যেখানে ৩২ লাখ লোক ভোট দেবেন একজন মেয়রকে এবং তিনি নির্বাচিত হবেন ৩২ লাখ লোকের প্রতিনিধি হিসেবে। অবশ্যই  তাদের সম্মান করতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষ কোনও চেয়ারম্যানকে ফোন করবে না, ফোন করবে মেয়রের কাছে।

যেহেতু ঢাকা একটি অপরিকল্পিত শহর, তাই অনেকগুলা কাজ একসঙ্গে করতে হবে।  আমরা অবশ্যই মনে করি, সুস্থ ঢাকার জন্য, খেলার মাঠ যেমন করতে হবে, যানজট-জলজট, আধুনিকায়ন, বায়ু দূষণতো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সুস্থ-সচল ঢাকার জন্য আমাদেরকে এই কাজগুলোর প্রতি ফোকাস দিতে হবে।

আপনি ড্রেন পরিষ্কার করার কথা বলছেন, খাল উদ্ধার না হলে ড্রেনের পানি কোথায় যাবে?

আতিকুল ইসলামপ্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে নদী উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। ড্রেনের পানি খালে যাবে, এই কাজটি আমাদের বের করে নিয়ে আসতেই হবে। আজকে নদী যখন উদ্ধার হবে, ঢাকার ভেতর দিয়ে যে খালগুলো গেছে, এগুলোও  উদ্ধার করতে হবে। আমি বসে থাকলে হবে না। এটা সম্ভব এবং শুরু করতে হবে, শুরু করলেই শেষ হবে।

আপনারা দেখেছেন কালশি খাল, সেখান থেকে বাইশটেকি খাল, বাউনিয়া খাল- তিনটি প্রকল্প ওয়াসা ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে। কালশি খাল উদ্ধার করে আমি তাড়াতাড়ি একটি টোটকা চিকিৎসা দিয়ে এলাকার সমস্যার সমাধান করে দিয়েছি।

প্ল্যান মোতাবেক কাজ করলে অবশ্যই জলাবদ্ধতামুক্ত ঢাকা শহর করা যায়।  সমস্যা যেটা ছিল সেটা হলো উদ্যোগ কে নেবে, সেটা নেওয়া শুরু হয়েছে।

আধুনিক ঢাকা গড়ে তোলার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ মনে করেন কিনা?

আতিকুল ইসলাম: ঢাকাকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে তৈরি করার জন্য প্ল্যান করা হয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেটা করতে পারিনি। আজকে যদি সেন্ট্রাল ডাক্টিং সিস্টেম থাকতো, তাহলে এই সমস্যাগুলো হতো না। কিন্তু আমরা সবাই এদেশের নাগরিক, আমরা যেখানেই জায়গা পাচ্ছি, করে ফেলছি। কালশি খাল যখন আমি পরিষ্কার করি সেখান থেকে আমি ৩৩টি জাজিম উদ্ধার করেছি। কালশি খাল থেকে আমি টেলিভিশন, ফ্রিজ, সোফা উদ্ধার করেছি। আমরা সবাই নাগরিক, সবাই যদি সুনাগরিক হই— তাহলে  অনেক দ্রুত  কাজ করতে পারবো। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।  সরকার করে দেবে, মেয়র করে দেবে, তা কিন্তু না। সবাই যদি এই প্রাণের শহর ঢাকাকে ভালোবাসি, আদরের শহর মনে করি—  তাহলে এই ঢাকা অনেক এগিয়ে যাবে।

নির্বাচনে আপনার প্রতিপক্ষকে কীভাবে দেখেন?

আতিকুল ইসলাম: নির্বাচনের সময় প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে যুদ্ধ থাকবেই। এটাকেই ভোট যুদ্ধ বলা হয়। এক ভাই এক দলে, আরেক ভাই আরেক দলে। কিন্তু সবাই এক মায়ের সন্তান। ঠিক একইভাবে আমি মনে করি, তাবিথ আউয়ালের বাবা একজন ব্যবসায়ী, আমিও ব্যবসায়ী। আমি বলেছি ‘চাচা-ভাতিজা’ আমরা। সুতরাং ভোটের যুদ্ধের ময়দানে আমরা অবশ্যই থাকবো। ভোটের মাঠে হবে কৌশলের খেলা। আমি রামপুরা যখন যাচ্ছিলাম, আমি সুন্দরভাবে গিয়েছি। যাওয়ার সময় দেখেছি রিকশার মধ্যে  আমার প্রতিপক্ষের গান বাজছে। ধানের শীষের নেতারা হেঁটে যাচ্ছেন। আমার সঙ্গেও অনেকে ছিলেন। আমরা সুন্দর করে একে-অন্যকে পাশ কাটিয়ে গেলাম। এই যে সহনশীলতার মনোভাব, এই রাজনীতিই সবাই চায়। আমি মনে করি, আমরা যত বেশি সহনশীল হবো,  ততই আমরা নিজেদের আপগ্রেড করতে পারবো। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি দল, যে দল গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে। যে দল  লাল-সবুজের পতাকা দিয়েছে। আমাদেরকে স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছে। সেই মহান পিতার জন্মশত বার্ষিকী সামনে। আমরা অবশ্যই মনে করি, আমরা সহনশীল হবো। একে- অন্যকে সম্মান করবো।

ইভিএম নিয়ে প্রতিপক্ষ প্রশ্ন তুলেছে, তাদের এই অবস্থানকে কীভাবে দেখছেন?

আতিকুল ইসলাম ওনারা যে ধরনের নির্বাচনই চান না কেন, আমি মনে করি— এটা ডিজিটাল যুগ, আমরা সবাই অনলাইন নির্ভর হচ্ছি। সুতরাং, এটা নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে, তারা কী ধরনের নির্বাচন চান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কী ধরনের নির্বাচন চায়, এটা নীতিনির্ধারক যারা আছেন, তাদের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। আমাদের নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কী ধরনের নির্বাচন চান।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা