• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে পান চাষে কৃষকের ভাগ্য বদল

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২১  

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে পতিত উঁচু জমিতে, বাড়ির পাশে, বিভিন্ন গাছে কিংবা বাড়ির উঠোনে পান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এতে এক দিকে চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি, অন্য দিকে স্বাবলম্বী হচ্ছে এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবার। তবে বাজারে পানের দাম বেশি ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষের প্রতি ঝুঁকছে স্থানীয় চাষিরা।

 

উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অসংখ্য পানের বরজ রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত পান উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ, খুলনা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে । এরই মধ্যে উপজেলার চুনখোলা, আটজুড়ি, গিরিস নগর, সরসপুর, উত্তর আমবাড়ি, গাংনী, পুরাতন ঘোষগাতী বিভিন্ন এলাকার মানুষ পান চাষ করে বদলে দিয়েছে গোটা উপজেলার অর্থনীতি। পাশাপাশি পান চাষিরাও তাদের শ্রম কাজে লাগিয়ে বদলে দিচ্ছে তাদের পরিবারের ভাগ্য।

 

উপজেলার উদয়পুর সদর ইউনিয়ন ও চুনখোলা ইউনিয়নে দুইটি পানের হাট রয়েছে। উদয়পুর সদরে প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং চুনখোলা ইউনিয়নে শনিবার ও মঙ্গলবার হাট বসে। ওই হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে পান ক্রয় করেন। উদয়পুর সদরে প্রতিহাট বারে প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকা এবং চুনখোলা হাটে ৩-৪ লক্ষ টাকার পান বিক্রি হয়।

 

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর উপজেলায় ১৪২ হেক্টর জমিতে পানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। কৃষকরা জানায়, প্রতি একর জমিতে পানের উৎপাদন ব্যয় পাঁচ-ছয় লাখ টাকা, আর তা বিক্রি হয় ১০-১২ লাখ টাকায়।

 

উপজেলায় সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ শতাধিক পান চাষি রয়েছে। উপজেলার চুনখোলা গ্রামের পান চাষি উদ্ধব রায়, বরেন হীরা, বাবুল বিশ্বাস, জানান পান চাষাবাদের এক-দেড় মাস যেতেই বরজের বিক্রির মতো পান ফুটে ওঠে। বর্ষা মৌসুমে পানের উৎপাদন একটু বেশি হয়। এ জন্য কোনো কাজের লোক রাখতে হয় না।

 

অবসর সময়ে ব্যয় করে এই বরজের পেছনে। এতে বরজ থেকে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করতে সক্ষম হয় তাঁরা।

 

উপজেলার গিরিস নগর গ্রামের পান চাষি মাধবচন্দ্র রায় জানান, পান লাভজনক ফসল। উৎপাদন খরচের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় বরজ পাল্টে দিয়েছে তার অভাবের সংসারের চিরচেনা স্মৃতি। পানের এই আয় থেকেই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি স্বাবলম্বী হচ্ছে তারা। কিনেছে ফসলি জমিও।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অনিমেষ বালা জানান, পান চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে পান চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এবার উৎপাদিত পান থেকে প্রচুর আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

পানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে কৃষকদের বিভিন্ন স্পে ও জৈব বালাই নাষক ছেটানোর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তা ছাড়া পান চাষ করতে গিয়ে কৃষক বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হলে খুব দ্রুত তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।’, তিনি বলেন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা