• বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে সংক্রমণ ঝুঁকিতে টিকাগ্রহীতারা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২১  

সকাল থেকেই বাগেরহাট সদর হাসপাতালের গেটের সামনে নানা বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সবাই এসেছেন করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) দিতে। টিকা দিয়েই বাড়িতে ফিরবেন তারা। ভেতরে প্রবেশের কোনো জায়গা নেই। একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে মানুষের অত্যাধিক চাপ।

যারা ভেতরে আছেন, তারাও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অস্থির হয়ে উঠেছেন। একজনের পিঠে আরেকজন ধাক্কা দিচ্ছেন সামনে আগানোর জন্য। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা।

টিকা দিতে এসে উল্টো করোনায় সংক্রমিত হয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন টিকাগ্রহীতারা। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শুধু মেসেজ প্রাপ্তরাই না, যারা মেসেজ পাননি তারাও অনেকে এসেছেন টিকা নিতে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে চাপ বেড়েছে টিকাদান কেন্দ্রে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে, দুই দফায় সিনোফার্মের পাওয়া ২৮ হাজার ৪০০ টিকা রয়েছে বাগেরহাটে। নির্দেশনা অনুযায়ী ৮ জুলাই থেকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসংলগ্ন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঁচটি বুথে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। ৮, ১০ এবং ১১ জুলাই নিবন্ধিত ২ হাজার ৬৩০ জনকে টিকা দেওয়া হয়।

যাত্রাপুর থেকে টিকা নিতে আসা জালাল ফকির বলেন, এখানে চরম অব্যবস্থাপনা। এটা কি করোনার টিকাদান কেন্দ্র, নাকি সংক্রমণ কেন্দ্র? যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার চারপাশ থেকেই করোনার রোগীরা যাওয়া-আসা করছেন। কে সুস্থ, কে অসুস্থ তাও বোঝার উপায় নেই। সুস্থ মানুষও এখানে এলে করোনায় সংক্রমিত হয়ে বাড়ি ফিরবেন।

সোমবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রোদের তাপ সইতে না পেরে মাটিতে বসে থাকা মমতা রানী নামের একজন বলেন, ‘সেই ৭টার সময় এসে লাইনে দাঁড়ায়ছি। এখনো বুথ পর্যন্ত যেতে পারলাম না। এত লোক হবে জানলে আসতামই না। আরও ভয়ে আছি কী হয়। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ব মনে হচ্ছে।’

ফকিরহাট থেকে আসা অমিত ও রতন নামের দুই বন্ধু জানান, ‘ভাই মরে যাব লাইনে দাঁড়ায় থাকতে থাকতে। রোদে মাথা ঘুরাচ্ছে। মনে হয় না সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারব। এতদিন তো বাড়িতে ছিলাম। ভালো ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে টিকাদান কেন্দ্র থেকে আক্রান্ত হয়ে যাব।’

স্বেচ্ছাসেবকের কাজে নিয়োজিত রেড ক্রিসেন্ট বাগেরহাট ইউনিটের যুব প্রধান শরিফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, করোনা টিকাদান কার্যক্রমে শুরু থেকেই আমাদের ৫০ জন সদস্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। তবে মানুষের যে চাপ, সামলানো বেশ কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিদিন ৪০০ মানুষকে টিকা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আমরা চার শ মানুষকেই মেসেজ দিয়েছি। কিন্তু মেসেজ না পেয়েও কিছু মানুষ টিকা কার্ড নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। যার ফলে এই ভিড়ের সৃষ্টি হয়।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা