• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

টিকার লাইনে নেই স্বাস্থ্যবিধি

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২১  

‘সকাল ৮টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড গরমে ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এখনও আমি টিকা পাইনি।’

দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের মধ্যে সোমবার সকাল থেকেই বাগেরহাট সদর হাসপাতালের কেন্দ্রে টিকা নিতে দেখা গেছে আগ্রহীদের ভিড়।

তবে তাদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। মুখে মাস্ক থাকলেও শারীরিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি লাইনে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন রেড ক্রিসেন্ট ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।

এ ছাড়া সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বয়স্ক ও নারীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বসার ব্যবস্থা এমনকি খাবার পানির ব্যবস্থাও ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. কে. এম হুমায়ুন কবির জানান, গত ১৭ জুন জেলায় চীনের সিনোফার্মের টিকা আসে ১৬ হাজার ৮০০ ডোজ। ১৯ জুন থেকে এ টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এ টিকা শুধু পুলিশ, মেডিক্যাল কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনা প্রতিরোধে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবকরা পেয়েছেন।

৮ জুলাই থেকে জেলায় গণটিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৯ জুলাই ২৩ হাজার ২০০ টিকা এসেছে উপজেলা পর্যায়ে দেয়ার জন্য। এ টিকা আটটি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল থেকে উপজেলাগুলোতে এ টিকা দেয়া শুরু হবে।

সিভিল সার্জন জানান, প্রথম ধাপে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন তারা অনেকেই টিকা পাননি। এরমধ্যে জেলায় করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতি তৈরি হয়েছে। এ কারণে টিকা নিতে মানুষের ভিড় বেড়েছে।

অতিরিক্ত মানুষের চাপের কারণে সদর হাসপাতালের করোনা টিকা কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা দুই থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুথের সংখ্যা বাড়ানো হলেও টিকা নিতে এসে অনেকে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সদর উপজেলা তালেশ্বর গ্রামের রুমিসা বেগম বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড গরমে ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এখনও আমি টিকা পাইনি।’

বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়া এলাকার শিক্ষক আবুল হাসনাথ স্বপন বলেন, ‘সকাল ৯টার সময় এসেছি। এখানে অনেক বয়স্ক ও বৃদ্ধরা রয়েছেন, যারা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখানে পানির ব্যবস্থাও নেই।’

খারদ্বার এলাকার হায়দার পাইক বলেন, ‘সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, কখন টিকা পাব জানি না। এখানে এত ভিড়ে আমরা বাধ্য হয়ে একজন অপরজনের গা ঘেষে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছি।’

শিথিল হয়ে পড়ছে লকডাউন

দেশব্যাপী চলমান কঠোর লকডাউন বাগেরহাটে দিন দিন ঢিলেঢালা হয়ে পড়ছে। শহর, হাট-বাজারসহ সড়কে লোক সমাগম ক্রমাগত বাড়ছে। আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না অনেকে।

প্রথম দিকে মাস্ক পরাসহ বিনা কারণে ঘোরাঘুরি না করলেও অনেকে এখন তা মানছেন না।

এর মধ্যেই জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৭৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৯৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৬১ জনে। আর সরকারি হিসাবে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০২ জন।

সোমবার পর্যন্ত জেলার ৭০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৫৮ জন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা