• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

৭০০ একর কৃষিজমি বাঁচাতে মরিয়া মোংলার মানুষ

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০২১  

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় পশুর নদ খননের বালু ফেলা হবে চিলা ইউনিয়নের ৭০০ একর কৃষিজমিতে। এতে ইউনিয়নের অন্তত সাতটি গ্রামের কৃষকদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশঙ্কা আছে সুন্দরবনসংলগ্ন ওই গ্রামগুলোর জীববৈচিত্র্যেরও হুমকিতে পড়ার।

রোববার দুপুরে ওই সাত গ্রামের শতাধিক মানুষ খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। পরে প্রেসক্লাবের সম্মেলনকক্ষে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা।

ওই সাত গ্রামের মানুষের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুন্দরতলা গ্রামের কৃষক আলম গাজী। তিনি বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা, তেলিখালী, আমতলা, গাববুনিয়া, কলাতলা, কেয়াবুনিয়া ও চিলা গ্রামের প্রায় ৭০০ একর কৃষিজমিতে পশুর নদ খননের নামে বালু ও নোনামাটি ফেলার পরিকল্পনা করছে। ওই জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বংশপরম্পরায় ধান ও মাছ চাষ করে এলাকাবাসী জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদ ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করে সেই বালু কৃষিজমিতে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ৭০০ একর কৃষিজমিতে ওই বালু ফেলা হবে।

ইতিমধ্যে গত ১৩ মার্চ থেকে কিছু এলাকায় জমির মালিকদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই বালু ফেলা শুরু হয়েছে। চলমান ড্রেজিং কার্যক্রমের কারণে চিলা ইউনিয়নের প্রবহমান কাটাখালী খাল ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুটি রাস্তা সম্পূর্ণরূপে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ড্রেজিং কার্যক্রমের আশপাশের বাড়ি-ঘর-আঙিনা বালুময় হয়ে গেছে।

আলম গাজী অভিযোগ করেন, গত ১৭ এপ্রিল সশস্ত্র অবস্থায় রাতের বেলায় তেলিখালী গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। জুলাই মাসের শুরু থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গুন্ডারা জমির মালিকদের কয়েক দফা হুমকি দিয়ে গেছে। তারা জমির মালিকদের মাছের ঘের শুকানোর কথা বলছে যেন ড্রেজিংয়ের বালু ফেলা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এখন সব কৃষকের মৎস্য খামারে লাখ লাখ টাকার মাছ রয়েছে। এ ছাড়া কৃষকেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন আমন ধান চাষ করার। সেই মুহূর্তে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গুন্ডাদের এমন কর্মকাণ্ডে কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ওই সাত গ্রামের লোকজন বিষয়টি বিবেচনা করে পশুর নদীর ড্রেজিংয়ের বালু অন্যত্র ফেলে কৃষিজমি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা এ বিষয়ে সরকার, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক কুদরত-ই-খুদার সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নূর আলমের পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এ রশীদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত, সিপিবি খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক ও বাপার সমন্বয়ক মো. বাবুল হাওলাদার, নারীনেত্রী শামীমা সুলতানা, বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা