• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ায় খুশি সুন্দরবনের জেলেরা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নদীতে বিলকুল পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। এতে জেলেরা অনেক খুশি।দীর্ঘ দিন পর এমন মাছ পাওয়ায় জেলে পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে বলে জানান ৫ নম্বর কয়রার বাসিন্দা জেলে ইসমাইল।

তিনি বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন শিবসা নদী ও পশুর নদে মাছ ধরেন। তার জালে এখন অনেক মাছ ধরা পড়ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-ভেটকি, গলদা, বাগদা, চাকা চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছ দাঁতনে।

একই এলাকার জেলে হামিদের ছেলে আশিক বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও খালে এখন জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ছে। পাইকগাছার গড়াইখালি ফকিরাবাদ গ্রামের জেলে আব্দুল মান্নান বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে জাল ফেলেলেই দাঁতনে, কাইন, তাইরেল, ভেটকি, রয়না, পাঙ্গাস মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এতে জেলেরা ভীষণ খুশি।

মোংলার চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা গ্রামের জেলে বিজন বৈদ্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ, কাঁকড়া ধরা বন্ধ থাকায় সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবীরা মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন। অনেকে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে তারা নদ-নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পাওয়ায় ভীষণ খুশি। জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। এতে সবাই খুশি। তারা মনে করছেন, তাদের দুর্দিন কাটবে এবার।

তিনি আরও বলেন, যেন এভাবে বাকি মৌসুম জেলের জালে মাছ পড়ে। তাহলে ঋণের বোঝা শোধ হয়ে যাবে জেলেদের। একই এলাকার জেলে জাকির মোসাল্লী বলেন, পশুর নদে ইলিশের জাল ফেলেছি। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।

জানা গেছে, প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে গত জুলাই ও আগস্ট মাস পর্যন্ত বনের অভ্যন্তরের প্রবেশ ও সব প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেদের সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন খাল ও নদীতে পুনরায় মাছ শিকারের অনুমতি দেওয়া হয়। ইলিশ ধরার জালসহ চরপাটা জাল ও ভেপদি জাল দিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে নৌকা ও ট্রলারে মাছ ধরছেন জেলেরা। এ বছর জলদস্যুদের কোনো প্রকার ভয়ভীতি ছাড়ায় জেলেরা নিরাপদে-নির্বিঘ্নে মাছ ধরছেন। প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। বনাঞ্চলের এ জলাভূমির মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারাবছরই মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর বাকি অংশের নদী-খাল ও জলাভূমিতে পারমিটধারী জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। মৎস্য আহরণের উপর সুন্দরবন উপকূলের প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্ভর।

সুন্দরবন মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি সরদার লুৎফর রহমান বলেন, এখন জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ছে। কয়রার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার জেলে সুন্দরবনে মাছ ধরছেন। তবে অভায়রণ্যের ভেতর জেলেরা ডুকতে না পারায় আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না।

এদিকে, সুন্দরবনের নদী ও খালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় খুলনার বাজারগুলোতে মাছে সরবরাহ বাড়ছে। দামও কিছুটা কমছে।

খুলনার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্স পরিচালক মো. আবু মুসা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে নানা ধরনের মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। এতে বেশ খুশি জেলেরা। এর ফলে বাজারে দামও কমেছে মাছের। কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখেও।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা