• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

চিতলমারীতে সেচ্ছাশ্রমে বিশাল বাঁশের সাঁকো নির্মান শুরু

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১  

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারীতে সেচ্ছাশ্রমে বিশাল বাঁশের সাঁকোর নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় দু’পারের দুই বিভাগের দুই শতাধিক মানুষ এ নির্মান কাজে অংশ গ্রহণ করেন। নির্মাণ কাজ চলবে মাস ব্যাপী। শুধু সেচ্ছাশ্রমই নয়, তাঁরা সেচ্ছায় নগদ টাকা ও বাঁশ এবং গাছ দিচ্ছেন এ কাজের জন্য। দুই পারের দুই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোমি যুবকের নেতৃত্বে পূর্ণগতিতে এ সাঁকোর নির্মান কাজ এগিয়ে চলছে। যুবকদের সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে প্রবীনরাও কাজে নেমেছেন। স্বতস্ফূর্ত এ কাজে যেন কারো কোন ক্লান্তি নেই।

সরেজমিনে জানা গেছে, এপারে খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের চরবানিয়ারী গ্রাম। ওপারে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিমবানিয়ারী গ্রাম। দুপারে মধ্য দিয়ে বলেশ্বর নদী বহমান। মরা নদীতে প্রায় ৪০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল বিশাল এক বাঁশের সাঁকো। সেই সাঁকো এখন চলাচলের একেবারে অনুপযোগি। প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে দুই পারের কমপক্ষে ২০ গ্রামের ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ পারাপার হন। সরকারের বহু দপ্তরে ছোটাছুটি করেও সাঁকোটি মেরামত বা ওই স্থানে ব্রিজ নির্মানের কোন ব্যবস্থা হয়নি। তাই স্থানীয় যুবক দেবাশিষ মন্ডল, তপন কুমার বাইন ও আলমগীর শেখ উদ্যোগ নেন পুরানো সাঁকোর নঁকশা (ডিজাইন) পাল্টিয়ে নতুন করে শক্তমজবুত একটি সাঁকো নির্মান করার। সেই অনুযায়ী তাঁরা আলাপ করেন বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য অপূর্ব মন্ডল নিত্যা ও পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য কমলেশ মন্ডলের সাথে। দুই ইউপি সদস্য ও এতে একমত পোষণ করেন। তাঁদের নেতৃত্বে শুরু হয় নবীন ও প্রবীনদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক। বৈঠকে সাঁকো নির্মান কমিটি গঠন করা হয়। করা হয় নির্মান পরিকল্পনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাঁকোটিতে নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। যা গ্রামবাসিরা নিজেরাই ব্যায় করবেন। শ্রমিক হিসেবে কাজ করবেনও নিজেরা। বহুদিনের কল্পনা-জল্পনা শেষে শুক্রবার সকাল ১০ টায় দু’পারের দুই বিভাগের দুই শতাধিক মানুষ এ নির্মান শুরু করেন।

চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য অপূর্ব মন্ডল নিত্যা ও মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কমলেশ মন্ডল বলেন, বহু পুরানো এ সাঁকোটির সাথে দুই পারের কয়েক হাজার মানুষের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ও ভাগ্য জড়িত রয়েছে। দু’পারের মানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে হলে এ সাঁকো ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই। সরকারের বহু দপ্তরে ছোটাছুটি করেও সাঁকোটি মেরামত বা ওই স্থানে ব্রিজ নির্মানের কোন ব্যবস্থা হয়নি। তাই দুই পারের গ্রামবাসিদের সাথে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর নতুন নঁকশা অনুযায়ী বাঁশের সাঁকো নির্মানের কাজ শুরু করেছি। কাজ পরিচালনার জন্য কমিটি রয়েছে। কমিটিতে দুইজন শক্ত কোষাধ্যক্ষ রয়েছেন।

বাঁশের সাঁকো নির্মান কমিটির কোষাধ্যক্ষ রমেন্দ্র নাথ রায় ও সহকারি কোষাধ্যক্ষ ধনঞ্জন বালা বলেন, আমাদের এ সাঁকোটি কমপক্ষে ৩০০ ফুট লম্বা। এটি নির্মানে ৫ লাখ টাকার বেশী ব্যয় হবে। দুই পারে ৬০০ পরিবার রয়েছে। পরিবারে ধরণ বুঝে সর্বনিম্ন পরিবার প্রতি ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি পরিবার থেকে সাধ্য অনুযায়ী বাঁশ এবং গাছ দিবেন। আর শ্রমতো রয়েছে। এভাবেই নির্মান হবে এ বিশাল সাঁকোর কাজ। নির্মান কাজ সম্পূর্ণ হতে এক মাস সময় লাগবে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা