• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

খানজাহান আলী (রহ.) এর বসতভিটা খনন কাজ শুরু

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২২  

বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত স্থাপনা মুসলিম শাসক খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটা খনন শুরু করেছে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর। মাটির নিচে পাওয়া বিভিন্ন প্রত্মবস্তু পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে রেজিষ্ট্রেশন করে বিভিন্ন যাদুঘরে রাখা হবে। এই গবেষণার ফলাফল খানজাহান আলী (রহ.) এর আমলের বিভিন্ন স্থাপনার প্রত্মতাত্তিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে বলে জানিয়েছেন প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মোঃ যায়েদ।

প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, ১৯৮৫ সালে খানজাহান আলী (রহ) এর নির্মিত ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলী (রহ.) এর বসত ভিটা অন্যতম। বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হওয়ার পরেও দীর্ঘদিন ধরে খানজাহানের এই বসতভিটা অবহেলিত ছিল। স্থানীয়দের গো চারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছিল বসতভিটার ডিবিগুলো। ২০০০ সালের পরে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর এই বসত ভিটাকে প্রত্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব নির্ণয়ের জন্য কয়েক দফায় খনন করে। টিন সেডের একটি সাইড অফিসও তৈরি করে তারা। বিভিন্ন গ্রেডের সাতজন কর্মকর্তা ও অনিয়মিত ১৪ জন শ্রমিক এই খনন কাজ ও গবেষণায় অংশগ্রহণ করছেন। ৩১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া খনন কাজে ইতোমধ্যে মাটির নিচে ইটের দেওয়াল, সিমেন্ট ও বালুর তৈরি মেঝে, সুলতানি আমলে ব্যবহৃত মাটির তৈরি পানির পাত্র, মাটির ঢাকনাসহ নানা তৈজসপত্র ও প্রত্মবস্তু পাওয়া গেছে। এসব প্রত্মবস্তু দেখতে প্রতিদিন স্থানীয় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা আসছে এই বসত ভিটায়। সাড়ে ৬‘শ বছর আগের প্রত্মবস্তু দেখে খুশি তারা।

চাকুরীর সুবাদে রাজশাহী থেকে বাগেরহাটে আসা একটি প্রাইভেট কোম্পানীর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, প্রত্মতত্ত্বের উপর আমার আগে থেকেই আগ্রহ রয়েছে। এখানে খনন কাজ হচ্ছে শুনে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আসলাম। এখানে মাটির নিচের দেওয়াল ও মেঝে দেখে বুঝলাম সাড়ে ৬‘শ বছরের আগেও আমাদের পূর্ব পুরুষদের ইতিহাস সম্মৃদ্ধ ছিল। এটা নিজ চোখে দেখে খুবই ভাল লাগল। আমাদের ইতিহাস যে কত সম্মৃদ্ধ ছিল তা খানজাহান আমলে নির্মিত স্থাপনা দেখে বোঝা যায়।

প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার আল আমিন বলেন, আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে আমরা বিভিন্ন গ্রেডের সাতজন কর্মকর্তা এই গবেষণা কাজ করছি। এর সাথে খননের জন্য ১৪ জন অনিয়মিত শ্রমিক সকাল সাড়ে ৬টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কাজ করছে। এই কাজ খুবই শুক্ষ্মভাবে করতে হয়। একটু এদিক-ওদিক বা উল্টোপাল্টা হলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রত্মবস্তু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ৩১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া আমাদের এই খনন কাজ ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে। এর পরেও এই বসত ভিটা নিয়ে আমাদের গবেষণা চলমান থাকবে।

প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মোঃ যায়েদ বলেন, আমাদের খনন কাজের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূমির স্তর বিন্যাস, স্থাপত্য শৈলি ও কালানুক্রমিক সময় বের করা। খননের মাধ্যমে পাওয়া স্থাপনা, ইট ও তৈজসপত্রসহ নানা তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা গবেষনা করব। এছাড়া খননের মাধ্যমে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রত্মবস্তুর পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে রেজিষ্ট্রেশন করা হবে। প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশে এসব প্রত্মবস্তু যাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা