• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছে বাগেরহাটে অবস্থান করা কোরিয়ান শিশুটি

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২  

মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাগেরহাটে অবস্থান করা ১১ বছর বয়সী এক কোরিয়ান শিশুকে দেশটিতে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস। বুধবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশুটিকে দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি ও উপকনসাল কিম জং-কিয়ের কাছে হস্তান্তর করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

শিশুটির নাম জান জিনু। বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের সুন্দরঘোনা পশ্চিম পাড়া গ্রামে শিশুটি তার মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর গ্রামের বাড়িতে ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার পাসপোর্ট থাকার পরও ‘মো. জিনু শেখ’ নামে শিশুটির জন্মনিবন্ধন করিয়ে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল।

সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সোহেল পারভেজ বলেন, শিশুটির বাবা জান ইয়োন জুন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি শিরিনা বেগমকে বিয়ে করলে সেখানে জান জিনুর জন্ম হয়। তার পর থেকে তাঁরা কোরিয়ায় ছিলেন। শিশুটির জন্মের কয়েক বছর পর তার বাবা মারা যান। এর কয়েক দিন পর শিরিনা বেগম কোরিয়াপ্রবাসী বাগেরহাটের শেখ মিজানুর রহমানকে বিয়ে করেন। শিশুটি কোরিয়ায় তাঁদের সঙ্গে ছিল।

শিশুটির দক্ষিণ কোরিয়ার পাসপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর শিশুটি বাংলাদেশে আসে। এরপর মুন্সিগঞ্জে নানাবাড়ি ঘুরে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর বাড়ি বাগেরহাটে যায়। করোনা শুরু হওয়ায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা কোরিয়ায় ফিরে যেতে পারেননি। তখন থেকে তাঁরা বাগেরহাটে অবস্থান করছিলেন।

মিজানুর রহমানের মা রাজিয়া বেগম বলেন, ‘করোনার কারণে আমার ছেলে ও তার স্ত্রী কোরিয়ায় ফিরতে পারছিল না। গত বছরের ডিসেম্বরে তারা দুজনে ওই ছেলেকে আমাদের কাছে রেখে কোরিয়ায় চলে যায়। এর পর থেকে শিশুটি আমাদের কাছে। কিছুদিন হলো শিশুটির মায়ের ভাই পরিচয়ে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে শিশুটিকে মুন্সিগঞ্জে দিয়ে আসতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শিশুটিকে নিরাপদ হেফাজতে রাখতে আবেদন করি।’

সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, সম্ভবত কোরিয়ায় ফিরে শিশুটির মা ও মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ফলে তার মা শিশুটিকে বাগেরহাটে রাখতে চাচ্ছিলেন না। এ জন্য কোরিয়া দূতাবাসের মাধ্যমে শিশুটিকে ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে শিশুটিকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে কোরিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন তাঁরা।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা ও দায়রা জজ (শিশু আদালত-১) সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এস এম রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে শিশুটিকে কোরিয়ান দূতাবাস কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুরে তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা