• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটের সেই অসহায় চার শিশুর পাশে দাড়াঁল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

মাকে হারিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটানো অসহায় চার শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বুধবার ওয়াবের প্রতিষ্ঠাতা, মানবিক পুলিশ সদস্য এসএম আকবর চার শিশুর হাতে উপহার, খাদ্যসামগ্রী এবং শিশুদের বাবার রোজগারের জন্য একটি গাভি ও মাছ ধরার জাল উপহার দেন। 

খাদ্য, বস্ত্র ও বাড়িতে বসেই রোজগারের উপায় হওয়ায় বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত রুইয়ার কুল গ্রামের দিনমজুর সুদাষ ব্রক্ষ্মার মুখে দীর্ঘ দিন পরে হাসি ফুটেছে।

এর আগে গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ‘মাকে হারিয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর’ শিরোনামে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। মা-হারা চার শিশুর অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন অনেকে।

ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত নিউজ ও ভিডিও চোখে পড়ে খুলনায় কর্মরত মানবিক পুলিশ সদস্য এসএম আকবরেরও। এরপর তিনি যোগাযোগ করে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন।

উপহার পেয়ে খুশি পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া সজল বলে, অনেক দিন পরে নতুন জামা-কাপড় পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে। অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ছোট ভাই-বোনের দেখার লোক আসলে আমি আর বোন স্বর্ণালী আবারও স্কুলে যেতে পারব।

ADVERTISEMENT

শিশুদের বাবা সুদাষ ব্রক্ষ্মা বলেন, স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে খুব বিপদে ছিলাম। না পারছিলাম কাজে যেতে, না পারছিলাম সংসার চালাতে। খুব কষ্টে দিন কেটেছে। এখন আমার ঘরে খাবার আছে, কিছু টাকাও পেয়েছি। দেশ-বিদেশের মানুষ আমার জন্য এত কিছু করবে স্বপ্নেও ভাবিনি। আগের দিন দুইজন ভাই এসে নতুন জামা-কাপড়, খাবার, মাছ ধরার জাল আর গরু দিয়ে গেছে। বিদেশ থেকে এক ভাই বাড়ির কাজের জন্য লোকও রেখে দেবে বলেছে। আশা করি, আমি সন্তানদের ভালোভাবে মানুষ করতে পারব।

ওয়াবের প্রতিষ্ঠাতা মানবিক পুলিশ সদস্য এসএম আকবর হোসেন বলেন, আমরা প্রথমে ঢাকা পোস্টে একটি সংবাদ দেখতে পাই। চারটি শিশুর বাসায় খাবার নেই। মা মারা গেছেন কিছু দিন আগে। বাবা খুব কষ্টে লালন-পালন করেন বাচ্চাদের। এই ছবিটি দেখার পরে আমার খুব খারাপ লাগে। এরপর আমি শিশুদের বাবা সুদাষ ব্রক্ষ্মার সঙ্গে কথা বলে কী চান জানতে চাই। তখন তিনি মাছ ধরার জন্য জাল ও গরু পেলে ভালো হবে বলে জানান। তার প্রস্তাব অনুযায়ীই গরু ও জাল এবং শিশুদের জন্য খাবার-পোশাক উপহার হিসেবে পৌঁছে দিয়েছি। পাশাপাশি যে কোনো প্রয়োজনে পরিবারটির পাশে থাকারও আশ্বাস দেন এই মানবিক পুলিশ সদস্য।

প্রসঙ্গত, এক বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হন সুদাষ ব্রক্ষ্মার স্ত্রী ঝর্ণা বিশ্বাস। দিনমজুর সুদাষের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তাই খুব একটা চিকিৎসা করাতে পারেননি স্ত্রীর। দেড় মাস আগে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় মারা যান ঝর্ণা। এরপর থেকে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতে থাকে সুদাষ ও তার চার সন্তানের। চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় সজলের বয়স ১১ বছর, এরপর মেয়ে স্বর্ণালীর বয়স ৭ বছর, ছোট ছেলে সকালের বয়স ৩ বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স ১১ মাস। তবে তাদের অসহায়ত্ব নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরে এখন আগের চেয়ে ভালো আছে পরিবারটি।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা