• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে চিংড়ির দামে হতাশ চাষিরা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২  

ভরা উৎপাদন মৌসুমে চিংড়ির দাম নিয়ে হতাশ বাগেরহাটের চাষিরা। তারা বলছেন, মাছের খাবারের দাম বেড়েছে কিন্তু সে তুলনায় চিংড়ির দাম পাচ্ছেন না তারা। অধিকন্তু কেজিপ্রতি চিংড়ির দাম কমেছে ১৫০-৩০০ টাকা। ‘সাদা সোনা’ খ্যাত চিংড়ি শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চিংড়ি চাষে অন্যতম শীর্ষ জেলা বাগেরহাট। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরেই বাগেরহাটের হাজার হাজার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস এই চিংড়ি চাষ। চিংড়ির উৎপাদনের ওপর নির্ভর করেই চলতে হয় তাদের পরিবারকে। শুধু তাই নয়, বাগেরহাটের উৎপাদিত চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর রাজস্ব আয় হয়। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই সাদা সোনা।

বাগেরহাটে ৭০ হাজারের মতো গলদা চিংড়ি ঘের রয়েছে। এতে সম্পৃক্ত প্রায় ৩৫ হাজার চাষি। জেলার উৎপাদিত চিংড়ির ৯০ শতাংশই ইউরোপসহ বিশ্বের ৩২টি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে সম্ভাবনাময় এ শিল্পে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ক্রমাগত মাছের খাবারের মূল্যবৃদ্ধি, মাছের পোনার দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে চরম সংকটের মধ্যে রয়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

চিতলমারী সদর উপজেলার পারডুমুরিয়া গ্রামের চিংড়ি চাষি শামীম শেখ বলেন, ‘মৌসুমের প্রথমে বাগদা চিংড়ির দাম বেশি ছিল। তখন বাজারে তেমন মাছ ছিল না। এখন ভরা মৌসুম। আমরা সবাই মাছ ধরছি। এই সময়ে এসে মাছের দাম একদম কমে গেছে। গেলো এক সপ্তাহে আকারভেদে প্রতি কেজি গলদা চিংড়িতে ১৫০-৩০০ টাকা দাম কমেছে।’

কচুয়ার চিংড়ি চাষি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘নানা দুর্যোগের কারণে প্রতিবছরই আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তারপরও ঋণ নিয়ে চিংড়ি চাষ করি। অথচ বিক্রির সময় দাম পাই না। অথচ দিন দিন মাছের খাবার ও আনুষঙ্গিক সবকিছুর দাম বাড়লেও বাগদার দাম কমছে।’

ফকিরহাট উপজেলার বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন রুবেল। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলে প্রচুর বাগদা ও গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। কিন্তু যারা উৎপাদন করেন মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে তারা লাভের মুখ দেখতে পারেন না। যখন বাজারে চিংড়ি বেশি থাকে, তখন কোম্পানির মালিকরা দাম কমিয়ে দেন। এ কারণে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েন।’

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, চিংড়ি উৎপাদনের জন্য সারা বছর যে টাকা ও শ্রম বিনিয়োগ করি দাম কমার কারণে সে তুলনায় মুনাফা অর্জন করতে পারি না। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারিভাবে বাজার মনিটরিংসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম সোহেল বলেন, মৎস্য বিভাগের পরামর্শ ও চাষিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গলদা-বাগদার উৎপাদন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। তবে দাম কিছুটা কমেছে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর রপ্তানি প্রক্রিয়া এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় চিংড়ির দাম কিছুটা কমেছে। তবে রপ্তানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে দাম বাড়বে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা