• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে ভাঙছে নদী, বিলীন হচ্ছে সড়ক-স্থাপনা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২২  

বাগেরহাটের রামপালে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, পাকা সড়কসহ নানা স্থাপনা।
জানা গেছে, রামপাল উপজেলার বগুড়া, ওড়াবুনিয়া ও হুড়কা গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া রামপাল ও কুমারখালী নদীভাঙনের ফলে গত দুই বছরে ২ কিলোমিটার এলাকার অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, গাছ-পালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জিওব্যাগ ফেলে প্রাথমিক ব্যবস্থা নিলেও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামপাল উপজেলা সদরের রামপাল নদীর ভাঙনে ওড়াবুনিয়া থেকে বগুড়া ব্রিজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক ও সড়কের পাশে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের যাতায়াতের পথ না থাকায় ফসলি জমি ও অন্যের বাড়ির মধ্য দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়া ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে রামপাল উপজেলা ডিগ্রি কলেজ, কৃষি অফিস, কালভার্ট, ব্রিজ ও খেলার মাঠ।
অপরদিকে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের রামপাল উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এলজিইডি নির্মিত সড়কের পাশের দুটি গ্রামের অসংখ্য ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে দুই গ্রামের অনেক বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর সরে যাওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির মৌসুম আসলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। এই দুই গ্রামের মানুষ ও তাদের জানমাল রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন।
ভাঙনে তিনবার ঘর হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ওড়াবুনিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, কয়েক বছরে তিনবার ঘর সরানো লেগেছে। আর ভাঙলে পরিবার নিয়ে ভাসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।
মনোয়ারা বেগম নামে এক নারী বলেন, নদীর পাড়ে আমরা থাকি। বৃষ্টি-জোয়ারে পানি উঠে সব তলিয়ে যায়।জোয়ারের পানি দুইবারই ওঠে। রান্নার চুলাও ডুবে যায়। আমরা খুব সমস্যায় আছি। সরকার যেন এই জায়গায় স্থায়ী বাঁধ দিয়ে দেয়।
স্থানীয় শাহিদা আক্তার বলেন, রাস্তা ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ায় ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কোনো রকমে বেঁচে আছি। ভাঙনের সময় যে দশ কেজি চাল দেয়, তা আমরা চাই না। আমাদের স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিন।
রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রামপাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্দেতর আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে থাকি। এছাড়া ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, যেসব এলাকায় ভাঙন বেশি সেসব এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য নতুন প্রকল্পের প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা