• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ফকিরহাটে কাবিটা প্রকল্পের কাজ এখন দৃশ্যমান

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

স্মার্ট ফকিরহাট বির্নিমাণে ফকিরহাট উপজেলা আরো একধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। কাবিটা প্রকল্পের কাচা মাটির রাস্তায় মাটি ভরাট কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ায় তা এখন দৃশ্যমান হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে তৃনমুলের সর্ব সাধারনের স্বাভাবিক চলাচল আরো তরান্বিত হবে। উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টা আর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। কাবিটা প্রকল্পের কাজ নিয়মানুযায়ী সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হওয়ার ফলে তৃনমুলের মানুষের মাঝে অস্বস্থি অনেকটা দুর করা সম্ভব হয়েছে। দেশের প্রতিটি উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে এধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হতো তাহলে কাঁচা মাটির রাস্তা নিয়ে জনসাধারনের যে দুর্ভোগ তা অনেকাংশে দুর করা সম্ভব হত।

উপজেলা প্রকল্প (পিআইও) বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা গেছে,২০২২-২০২৩অর্থ বছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে কাবিটা (সাধারন) প্রথম পর্যায়ে মোট ২৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম্যরাস্তার উন্নয়নে (মাটি ভরাট) ৩৪লক্ষ ৭৭হাজার ৭শত ৮৬টাকা ৭৯পয়সা বরাদ্ধ প্রদান করা হয়। এবং ২৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে তা সুষ্টুভাবে বন্টনও করা হয়। সে মোতাবেক স্বঃস্বঃ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা গ্রাম্যরাস্তায় মাটি ভরাট বা নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ পাই। কাজ পেয়েই নিদিষ্ট মেয়াদের আগেই তারা তাদের কাজগুলি সুসম্পন্ন করেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, প্রতিটি প্রকল্পের কাজ এত অল্প বরাদ্ধে এত ভাল করা হয়েছে, যা সত্যিই দৃশ্যমান ও নজর কাড়ার মত। ১নং বেতাগা ইউনিয়নের ১নং মাসকাটা ওয়ার্ডের অর্গানিক বেতাগার খানজাহান আলী গ্রাম্য সড়কের মোড় হতে ইনছান আলীর ডেয়ারী র্ফাম পর্যন্ত প্রায় ৩শত মিটার লম্বা বিলীন হওয়া ১টি রাস্তা পুনঃ নির্মাণ করা হয়েছে। যার উচ্চতা ৫/৬ফুট এবং চওড়া ১২হতে ১০ফুট পর্যন্ত। এখানে মোট বরাদ্ধ ছিল ১লক্ষ ৪৭হাজার ৩শত টাকা মাত্র। প্রকল্পের সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান তুহিন কাজটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

স্থানীয় আবেদা বেগম, তাসলিমা বেগম, মমতাজ বেগম জানান, এটি ছিল সরকারী হালট। এই রাস্তাটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় আমরা চলাচল করতে পারতাম না। উন্মুক্ত ওর্য়াড সভায় হাশেম আলী নামের জনৈক ব্যক্তি রাস্তাটি পুনঃ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা এনেছিলেন। তার প্রস্তাবনা আজ বাস্তবায়ীত হয়েছে আর তিনিও ক্ষমতায়িক হয়েছে।

২নং লখপুর ইউনিয়নের ৫নং জাড়িয়া মাইট কুমরা ওয়ার্ডের মুনসুর আলী খান এর বাড়ির সামনে হতে তানভীর রহমানের বাড়ি অভিমুখে একটি জনবহুল বিলীন হওয়া কাচা রাস্তা দীর্ঘদিন যাবৎ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সেই রাস্তাটি পূনঃ সংস্কার করার জন্য ২লক্ষ ১৯হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সেই রাস্তাটিও পূনঃ সংস্কার করা হয়েছে। তাসলিমা বেগম লতা সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা এই প্রকল্পের সভাপতি হিসাবে কাজটি তদারকি করেছেন। ৫নং বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের লালচন্দ্রপুর গ্রামের শাহীন সরদারের বাড়ীর সামনে হতে শরীক খাল অভিমুখে কাচা রাস্তাটি মাত্র ০৪ মেট্রিকটন গমের বরাদ্ধে পূনঃ সংস্কার করা হয়।

ঢালী আব্দুল খালেক ৯নং ওর্য়াড সদস্য এই প্রকল্পের সভাপতি হিসাবে কাজটি তদারকি করেছেন। এছাড়া ২নং লখপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মজিদ শেখের পানের বরজের সামনে হতে বকতিয়ার মোড়লের বাড়ী অভিমুখে ১লক্ষ ১০হাজার টাকা বরাদ্ধে প্রায় ৩শত মিটার লম্বা ও ১১/সাড়ে ১১ফুট চওড়া কাচা রাস্তাটি পূনঃ সংস্কার করেছেন, হারুনার রশিদ এই প্রকল্পের সভাপতি।

২নং খাজুরা ওয়ার্ডের শহীনের বাড়ী হতে আনোয়ারের বাড়ী অভিমুখে একটি বিলীন হওয়া কাচা রাস্তার উন্নয়ন। ১লক্ষ ৩৩হাজার ৪শত ৮১টাকা বরাদ্ধে রাস্তাটি পুনঃ সংস্কার করা হয়েছে। প্রকল্পের সভাপতি কবির মোড়ল বলেন, এই কাচা রাস্তাটি জনসাধারনের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। সেটি পূনঃ সংস্কার করায় এলাকাবাসির মধ্যে এখন স্বস্থি ফিরে এসেছে।

৪নং ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের পাগলা-দেয়াপাড়ায় শেখ শহীদুর রহমানের বাড়ীর সামনে হতে মুনসুর মাষ্টারের বাড়ি অভিমুখে কাচা রাস্তাটি ২লক্ষ ৫০হাজার টাকা বরাদ্ধে পূনঃ সংস্কার করা হয়েছে। যা দৃশ্যমান সুন্দরমানের হয়েছে। ইউপি সদস্য মোস্তাকিন বিল্লাহ প্রকল্পের সভাপতির দায়িত্বে থেকে এই কাজটি তদারকি করেছেন।

৬নং নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কামটা হাসমত শেখের বাড়ীর সামনে হতে বিল অভিমুখে বিলীন হওয়া ১টি কাচা রাস্তা পূনঃ সংস্কার করা হয়। প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা জেসমিন বেগম ১লক্ষ ৪৩হাজার ৩শত ১৪টাকা বরাদ্ধে কাজটি সুসম্পন্ন করেছেন। যা এখন দৃশ্যমান।

উপজেলা প্রকল্প (পিআইও) বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদা দিলরুবা সুলতানা’র সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রকল্পগুলি ভাগ করে দেওয়ার পর তা সর্বসময় উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন পর্যাবেক্ষন করেছেন। যে কারনে জনপ্রতিনিধিরা নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজগুলি সুসম্পন্ন করেছেন। উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও স্বঃস্বঃ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা সহযোগীতা করায় প্রকল্পের কাজগুলি অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে কিছুটা ভাল হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ’র সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে অতিগুরুত্ব দিয়ে উন্মুক্ত ওয়ার্ড সভায় আসা প্রস্তাবনা গুলি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেই তা সুষ্টু ভাবে বন্ঠন করেছি। শুধু তাই নয়, স্মাট ফকিরহাট উপজেলা গড়ার লক্ষে টেকসই ও উন্নয়নের লক্ষমাত্রা পূরণ করার জন্য চলাচলের অযোগ্য কাচা রাস্তাগুলিতে জনসাধারন যাহাতে চলাচল করতে পারেন, সেই বিষয়টি মাথায় নিয়েই কাজগুলি সম্পন্ন করেছি। কারণ বিলীন হওয়া কাচা রাস্তাগুলি পুনঃ সংস্কার করলে কৃষকদের উৎপাদিত সকল পণ্য সহজেই বাজারজাত করা সম্ভব হবে। এধারা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি সকল জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানান।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা