• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই চলছে নদী পারাপার

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২৩  

বাগেরহাটে মোংলা নদীর পশ্চিম পাড়ে স্থায়ী বন্দর আর পূর্ব পাড়ে পুরাতন বন্দর। নদীর পশ্চিম অর্থাৎ স্থায়ী বন্দর এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন শিল্পকারখানা। আর পূর্ব পাড়ে আবাসিক এলাকা। শুধু জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার শ্রমিক ট্রলারযোগে ঝুঁকি নিয়ে এ নদী পার হন। অন্য পেশার আরও কয়েক হাজার মানুষকেও নানা কাজে ঝুঁকি নিয়ে এ নদী পার হতে হয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের সামনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদী পারাপার করছেন এসব ট্রলারচালকেরা। ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, অপেক্ষমান যাত্রীরা গাদাগাদি করে ট্রলারে পার হচ্ছেন। ট্রলার প্রতি সর্বোচ্চ ১৫ জন করে যাত্রী পারাপারের নিয়ম রয়েছে। তবে কল-কারখানাগুলো বিশেষ করে মোংলা ইপিজেড খোলা ও বন্ধ হওয়ার সময়ে ট্রলার প্রতি যাত্রী নেওয়া হয় ৮০-থেকে ৯০ জন। যাত্রীরচাপে ট্রলারগুলোতে পা রাখার জায়গা থাকে না। প্রায়ই ট্রলারে ট্রলারে ধাক্কা লেগে ঘটে দুর্ঘটনা। 
ইপিজেড কর্মী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘ভোরে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। না হলে নদীর ঘাটে যাত্রীদের ভিড় বেড়ে যায়। এতে কর্মস্থলে পৌঁছাতে অনেক সময় দেরি হয়। ভয়ে ভয়ে ট্রলারে চড়ি। মাঝিরা অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে থাকেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি মাত্র ঘাট থেকে হাজার হাজার মানুষের পারাপার খুবই কষ্টকর। বিশেষ এই সময়গুলোর জন্য নদী পারাপারে যদি মোংলায় অন্যান্য ঘাটগুলো ব্যবহার করা হতো তাহলে দুর্ভোগ কম হতো। গত সপ্তাহে ট্রলারের ধাক্কায় ঘাটের কাছে আমি নদীতে পড়ে যাই। এমন দুর্ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে।’
মোংলা থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন নুসরাত আক্তার। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় তার বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তার পৌঁছানো অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সকালে নদী পার হতে গিয়ে তাকে পড়তে হয় চরম বিপাকে। ভিড়ের মধ্যে আধা ঘণ্টা পর ট্রলার পর্যন্ত পৌঁছান তিনি। ট্রলারভর্তি যাত্রীদের সঙ্গে ভয়ে ভয়ে নদী পার হন। কিন্তু ট্রলারে ট্রলারে ধাক্কা লেগে নিজেকে সামলাতে গিয়ে হাত থেকে নদীতে পড়ে যায় তার লাগেজ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এভাবে নদী পার হওয়ার অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। এতো যাত্রী নিয়ে ডুবুডুবু ট্রলারগুলো চলছে, ভাবা যায় না।’
ট্রলারচালক আবুল কালাম বলেন, ‘ইপিজেড চলাকালীন সর্বোচ্চ ৩০ জন ও অন্যান্য সময়ে ১৫ জন যাত্রী নিয়ে নদী পারাপারের কথা থাকলেও সকালে ও সন্ধ্যায় সেটি আর ঠিক রাখা যায় না। কারণ সকালে কলকারখানায় যাওয়ার তাড়া থাকে আর বিকালে বাড়িতে ফেরার তাড়া। যাত্রীরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন আগেভাগে গন্তব্যে পৌঁছানোর। আমাদেরও এ সময় বাড়তি উপার্জন হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপংকর দাশ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে। মোংলা পোর্ট পৌরসভার মাধ্যমে দুপাড়ে নির্মাণ করা হবে বিকল্প ঘাট। এতে এ সমস্যা থেকে সাধারণ মানুষ দ্রুত মুক্তি পাবে।’
এ বিষয়ে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, ‘যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে নদীর পশ্চিম পাড়ে ঘাটনির্মাণ শুরু হয়েছে। এছাড়া পূর্ব পাড়ে আরও একটি ঘাট নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। এ দুটি ঘাট পুরোপুরি চালু হলে সমস্যার সমাধান হবে।’

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা