• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

কুরবানি ও ঈদে যে চেতনায় উজ্জীবিত থাকে মুমিন

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২১  

আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আল্লাহর একত্ববাদের এ ঘোষণায় পবিত্র ঈদুল আজহা ও কুরবানিতে আত্মনিয়োগ করেন মুমিন মুসলমান। পাঁচ দিন ধরে তাওহিদ বা একত্ববাদের এ চেতনায় উজ্জীবিত থাকা মুমিন মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। যে চেতনা বছরজুড়ে জেগে

যে ঘোষণা উজ্জীবিত হয় মুমিন
اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَ اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر وَ للهِ الْحَمْد
উচ্চারণ : ’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’
অর্থ : ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’

৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার এ তাকবির পড়া মুমিন মুসলমানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।

এ দিনগুলোর বাকি সময় এ তাকবির মুমিন মুসলমানকে তাওহিদের চেতনায় উজ্জীবিত করে তোলে। মুমিন বান্দা খুঁজে পায় একত্ববাদের সঠিক ঠিকানা। আপন মনে পড়তে থাকে তাকবিরে তাশরিক।

আবার পবিত্র নগরী মক্কা, মিনা, আরাফাহ, মুজদালিফায় হজে অংশগ্রহণকারী ও অবস্থানকারীরা তালবিয়া পড়ে এ জানান দেয় যে-
لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ
لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ
اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ
لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ
> লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক,
> লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,
> ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক,
> লা শারিকা লাক।

তালবিয়ার অর্থ
>> আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত!
>> আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই।
>> নিঃসন্দেহে সব প্রশংসা ও সম্পদরাজি তথা নেয়ামত আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্যও আপনার।
>> আপনার কোনো অংশীদার নেই।

সুতরাং ইয়াওমে আরাফায় হজ, ঈদুল আজহা ও কুরবানির প্রতিটি ইবাদতে ঘোষিত তাওহিদ তথা একত্ববাদের ঘোষণা। এসবই মুমিন মুসলমানের ঈমান ও আমলে উজ্জীবিত হওয়ার অংশ। যে যতবেশি এগুলো পালন করবে, পাঠ করবে ঈমানি চেতনা ও মূল্যবোধে ততবেশি অগ্রসহর হবে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল আজহা ও কুরবানি ও হজের সময় তাকবির, তাহলিল, তাহমিদ ও তালবিয়ার মাধ্যমে নিজে যেমন মহান আল্লাহর কাছে একত্ববাদের ঘোষণা দিতেন। তেমনি সাহাবায়ে কেরামকেও তা পড়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।

এ দিনগুলোতে সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের উপর কুরবানি ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও প্রতি বছর কুরবানি করেছেন এবং অন্যদেরও কুরবানির আদেশ দিয়েছেন। হাদিসে ঘোষণা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’

সর্বোপরি ৯ জিলহজ থেকে তাকবিরে তাশরিকের বিধান এসেছে। ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার এ তাকবিরে পাঠ করা ওয়াজিব।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, বাকি দিনগুলোতেও তালবিয়া-তাকবিরে নিজেদের একত্ববাদের চেতনায় উজ্জীবিত করা। শিরক ও কুফরের সব চিহ্ন থেকে পরিচ্ছন্ন থাকা। ব্যক্তি পরিবার সমাজ তথা সর্বস্তরে শিরকমুক্ত চেতনায় তাকবির ও তালবিয়ার ঘোষণার মাধ্যমে নিজেদের গড়ে তোলা ঈমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জিলহজ মাসের এ দিনগুলোতে তাকবির-তালবিয়া পাঠের চেতনায় মজবুত ঈমানের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা