• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

‘ক্ষুদ্র’ কোরআনের বড় ইতিহাস, সংস্পর্শে মুসলিম হয়েছে ক্যাথোলিক পরি

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৩  

মাত্র দুই সেন্টিমিটার চওড়া। এক সেন্টিমিটার মোটা। এত ছোট্ট আকারে পবিত্র কোরআনের একটি কপি আছে আলবেনিয়ার মারিও প্রুশি’র পরিবারে। এই ধর্মীয় গ্রন্থকে তারা মনে করেন ঐশ্বরিক বাণী। এর মধ্যে আছে অলৌকিকত্ব, সব সমস্যার সমাধান।

বিশ্বে এ পর্যন্ত কোরআন শরীফের সবচেয়ে ছোট আকারের যতগুলো কপির সন্ধান মিলেছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। যুগের পর যুগ আলোচিত কোরআনটি একটি সিলভার বক্সের ভিতর সুরক্ষিত রয়েছে। বাক্সটিতে ময়লা জমে কালো হয়ে গেছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

ইউরোপের দেশ আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানা শহরের একটি পরিবার ক্ষুদ্র এই কোরআনটি কয়েক প্রজন্ম ধরে সংরক্ষণ করছে। তারাও মুসলিমদের মতো অজু করেই পবিত্র কোরআন হাতে নেন। বহু বছর ধরে মারিও প্রুশি (৪৫) নামের এক ব্যক্তি সেই রীতি পালন করে চলেছেন। প্রথমে ‍অজু করেন, এরপর ক্ষুদ্র কোরআনটি ধরে চুমু খান আর গভীর মমতায় একবার কপালে ছোঁয়ান। তারপর শুরু করেন তিলাওয়াত।

মারিও প্রুশির বলেছেন, আমাদের পবিত্র দায়িত্ব মনে করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সুরক্ষিত রেখে চলেছি এই কোরআন। এর লেখা খালি চোখে পড়া যায় না। এটা তেলাওয়াত করতে ছোট একটি আতশি কাচ লাগে। তাও ওই বাক্সটির মধ্যে দেয়া আছে। এ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা না থাকার কারণে ঠিক কোন সময়ে ছাপা হয়েছে এই কোরআন তা বলা মুশকিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কোরআনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। রুপার একটি বাক্সের মধ্যে এটা রাখা হয়। সেই বাক্সটির রংও কালো হয়ে গেছে। বৈজ্ঞানিক বিচার-বিশ্লেষণের অনুপস্থিতিতে কোরআনটি ঠিক কতটা পুরোনো সেটা নিশ্চিত না হওয়া কঠিন। তবে এল্টন কারাজ নামের তিরানা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কোরআন বিশেষজ্ঞের মতে, ৯০০ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র গ্রন্থটি ১৯ শতকের।

তবে শুধুমাত্র আকৃতিই কোরআনটির একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিষয় নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি বিস্ময়কর ইতিহাস। যে ইতিহাস মারিও প্রুসির মুখে উঠে এসেছে। প্রুসি বলেন, তাদের পরিবার ছিল ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। মারিও প্রুশির কথায়, ‘কসোভোর জোকোভিকা অঞ্চলে মাটি খোঁড়ার সময় তার প্রো-পিতামহ অক্ষত অবস্থায় একটি মরদেহ খুঁজে পান। সেই মরদেহের ওপর ছিল কোরআনটি।’ এটি পাওয়ার পর তার প্রো-পিতামহ ক্যাথলিক থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন।

মারিও প্রুসির দাদা ১৯৩০ সালের দিকে আলবেনিয়ার রাজা কিং জগের সেনাবাহিনীর একজন অফিসার ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি আরবি পড়তে পারতেন। তিনি প্রতি রাতে বন্ধুদের আমন্ত্রণ করে কোরআনটি থেকে বিভিন্ন আয়াত পড়ে শোনাতেন।

কয়েক বছর পর আলবেনিয়ায় কমিউনিস্ট শাসন শুরু হয়। কমিউনিস্ট নেতা এনভার হোক্সা দেশে ধর্ম চর্চা নিষিদ্ধ করেন। সকল ধর্ম পালনকারীদের জেলে ভরেন। সেই সময় কোরআনটি রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল। কারণ এর আকার ছিল অনেক ছোট।

২০১২ সালে মারিও প্রুশির পিতা মারা যান। এর অল্প পরেই উত্তরাধিকার সূত্রে কোরআনটি চলে আসে মারিও প্রুশির হাতে। তিনি বলেন, এই ধর্মীয় গ্রন্থ অসীম কাহিনি, আশীর্বাদ এবং অলৌকিকত্বে ভরা। আমার কাছে খুব পছন্দের এই গ্রন্থ।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা