• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

অ্যাপে কোরবানির পশু কিনবেন যেভাবে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২০  

কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র নয়দিন। অন্যান্য বছর এ সময় পশুর হাটগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এবার পশুর জমজমাট হাট বসছে না কোথাও। এ অবস্থায় রাজধানীর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ‘জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলি, পশুরহাট অ্যাপ-এর মাধ্যমে ঘরে বসে পশু কেনাবেচা করি’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে ডিজিটাল ‘পশুরহাট’ অ্যাপ চালু করেছে।

‘পশুর হাট’ অ্যাপটি গত ১৩ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। সিরাজগঞ্জ জেলায় উদ্ভাবিত হলেও রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলাতেই এই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই পশু কেনাবেচা করা যাবে। অন্য জেলাগুলো হলো- রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া ও জয়পুরহাট। পরবর্তীতে এটি সারাদেশে ব্যবহার উপযোগী করা হবে বলে জানা যায়।

অ্যাপটি গত কয়েক মাস ধরে অ্যাপটির উদ্ভাবন করেন সিরাজগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান। তার এ কাজে ঐকান্তিক সহযোগী হচ্ছেন- আইতুল আব্দুল্লাহ ও হাসানুর রহমান হাসানসহ এস সিরাজগঞ্জের এফ টেকনোলজিস লিমিটেড টিম।

অ্যাপটি যেভাবে কাজ করছে- অ্যাপটি মনিটরিংয়ের জন্য প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসন একজন করে ‘সুপার অ্যাডমিন’ নির্বাচন করে দেবেন। জেলা প্রশাসনের অ্যাডমিন তার অ্যাকাউন্ট হতে লাইভস্টক ‘অ্যাডমিন রোল’-এর ব্যবহারকারী তৈরি করে দিতে পারবেন। ‘সুপার অ্যাডমিন’ তাদের প্রদত্ত তথ্য যাচাই বাছাই করতে পারবেন। এছাড়াও বিক্রেতা এবং পশু সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য রিপোর্ট আকারে দেখতে পারবেন।

লাইভস্টক অ্যাডমিন নিজেও সব পশুর তথ্য যাচাই করবেন। তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা, সেটা দেখবেন। কোনো বিক্রেতা যদি রেজিস্ট্রেশন করেন তাহলে তার প্রদত্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সেটি লাইভস্টক অ্যাডমিনের কাছে পেনডিং অবস্থায় থাকবে। অ্যাডমিন সব সত্যতা যাচাই বাছাই করে বিক্রেতাকে অ্যাপ্রুভ করলে তিনি অ্যাপে সংযুক্ত হয়ে যাবেন।

অন্যদিকে, যেকোনো লাইভস্টক অ্যাডমিন তার অ্যাকাউন্ট থেকে বিক্রেতাকে যুক্ত করতে পারবেন। মূলত প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা বিক্রেতা হিসেবে যুক্ত হবেন। তবে কোনও বিক্রেতা নিজে অ্যাকাউন্ট খুললে লাইভস্টক অ্যাডমিন অ্যাপ্রুভ করে দিলে তার অ্যাকাউন্টটি সচল হবে।

বিক্রেতা তার অ্যাকাউন্টে লগইন করার পর প্রাপ্ত ড্যাশবোর্ড থেকে পশুর ছবি, ভিডিও, ওজন, গায়ের রং, প্রজাতি, বয়স, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ইত্যাদির তথ্য দিয়ে পশুর বর্ণনা পোস্ট করবেন। পরবর্তীতে কোনো পশু বিক্রি হলে সেটিও ড্যাশবোর্ড থেকে চিহ্নিত করে দিবেন।

অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্রেতাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ক্রেতার ইংরেজিতে প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারটি অ্যাপে ইউজার নেম হিসেবে ব্যবহার হবে।

অ্যাপে লগইন করার পর তার জেলার বিভিন্ন খামারির পশু বিক্রি করার পোস্ট দেখতে পারবেন। কোনো একটি পোস্টের লিংক এ ক্লিক করলে সেখান থেকে ওই পশুর ছবি ও ভিডিওসহ বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন এবং বিক্রেতার সাথে যোগাযোগের অপশন পাবেন। সেই অপশন থেকে ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলতে পারবেন অথবা অ্যাপের মাধ্যমে মন্তব্য করেও বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। বিক্রেতা আগ্রহী হলে ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে পশুটি ক্রেতার কাছে সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন।

অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড চালিত যেকোনো ডিভাইস থেকে অটো ইন্সটল করে অথবা ‘পশুর হাট’ ওয়েবসাইটটি (www.poshurhaat.com) ব্রাউজ করে যেকোনো ডিভাইস (মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট) থেকে ব্যবহার করা যাবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, অন্যান্য জেলাতেও ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়ছে। ঝালকাঠিসহ বেশ ক’টি জেলা এই অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছে। সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে অন্যান্য জেলাও অ্যাপে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেতে পারে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা