• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

উপকূলবাসীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাবে ‘ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট’

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২০  

প্রাকৃতিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নানা দুর্যোগের সঙ্গে বসবাস উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটবাসীর। একদিকে লবণাক্ত পানি, অন্যদিকে গভীর ও অভীর নলকূপ সার্পোট না করায় এ অঞ্চলে সুপেয় ও নিরাপদ পানির সংকট চরমে। এ অবস্থায় নিরাপদ পানির চাহিদা মেটাতে বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় ৫ উপজেলায় বসানো হচ্ছে ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট। এ ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট ভূ-উপরিস্থ পানিকে শতভাগ জীবাণুমুক্ত করে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে সাধারণ মানুষের মাঝে। খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘ভূ-উপরিস্থ পানি পরিশোধনের মাধ্যমে রাঙামাটি, বাগেরহাট ও ফরিদপুর জেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ বাগেরহাট জেলায় ৭৫টি ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট স্থাপন কাজ শুরু হয়েছে। উপকূলের কচুয়া উপজেলায় ৯, মোরেলগঞ্জে ২৫, শরণখোলায় ১৮, মোংলায় ১৪ এবং চিতলমারী উপজেলায় ৯টি ইউনিট স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এ বছরের ৩০ আগস্টের সকল ইউনিটের কাজ শেষ হবে। আধুনিক প্রযুক্তির একটি ইউনিট স্থাপনে প্রায় ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হবে। পুকুর বা ভূ-উপরিস্থ যেকোনো উৎস থেকে বৈদ্যুতিক মটরের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করা হবে। ওই পানি কোনো রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ৪টি ধাপে পরিশোধনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরবরাহ ট্যাংকিতে যাবে। ওই ট্যাংকিতে পানি সরবরাহের জন্য দুটি ট্যাব থাকবে। এসব ট্যাব থেকে ১ মিনিটে ১৬ লিটার হিসেবে ঘণ্টায় ৯৬০ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাবে। যা ওই এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ করবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্প কাজ শেষে দেখভালের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি করা হবে। যারা এই ফিল্টেশন ইউনিটটিকে পরিচালনা করবেন। এদের মাধ্যমে এই ইউনিটের বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য মেইনটেন্যান্স ব্যয় পরিচালিত হবে।

শরণখোলা উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, সিডর ও আইলা বিধ্বস্থ সাউথখালী এলাকার মানুষ বর্ষা ও পুকুরের পানির উপর নির্ভর করতে হয়। এখানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে।  কয়েকটি পিএসএফ ছিল, যা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এই ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট বসানো হচ্ছে। আমাদের সুপেয় পানির চাহিদা মিটবে বলে আশা করছি। সম্প্রতি আম্পান ঝড়ে লবণ পানি ঢুকে তীব্র সুপেয় পানি সংকট দেখা দেয়।

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, জেলার সব থেকে বেশি লবণাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা শরণখোলা। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ সুপেয় পানির সংকটে ভোগে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট পানির চাহিদা মেটাবে। তবে চারটি ইউনিয়নের বিপুল পরিমান জনসংখ্যার এই উপজেলার জন্য ১৪টি ইউনিট যথেষ্ট নয়

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শরণখোলা উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী এসএম মেহেদী হাসান বলেন, উপজেলার ভূগর্ভস্থ পানি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুপযোগী। ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট এই উপজেলা মানুষের জন্য একটি সময় উপযোগী উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ভূ-উপরস্থি পানিকে ৪টি ধাপে পরিশোধনের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করা হবে। পরিশোধনের জন্য কোনো প্রকার রাসয়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হবে না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ফিল্টার করা হবে। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

বাগেরহাটের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এফ এম ইসমাইল হোসেন বলেন, বাগেরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ৭৫টি ন্যানো ফিল্টেশন ইউনিট স্থাপন করার কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ আগস্টের মধ্যে সব ইউনিটের কাজ শেষ হবে। প্রতিটি ইউনিট থেকে ঘণ্টায় ৯৬০ লিটার পানি পবে স্থানীয়রা। যা বিপুল জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাবে বলে জানান তিনি।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা