• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

করোনায় বহুল ব্যবহৃত পালস অক্সিমিটার এর কাজ কি?

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২০  

করোনাভাইরাস পরিস্থিতে বিভিন্ন মেডিকেল যন্ত্রপাতির চাহিদা বেড়েছে। তেমনি একটি যন্ত্র পালস অক্সিমিটার। এটির নাম জানা থাকলেও অনেকেরই অজানা এর ব্যবহার ও কাজ সম্পর্কেও। এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক পালস অক্সিমিটার কাজ সম্পর্কে- 

পালস অক্সিমিটার কি?

এটি একটি বহনযোগ্য মেডিকেল ডিভাইস, যা দিয়ে মানুষের দেহে রক্তের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা মাপা হয়। ১৯৫৩ সালে সর্বপ্রথম এটি তৈরি করেন জার্মান চিকিৎসাবিদ কার্ল ম্যাথ। এ যন্ত্র দিয়ে ব্যথাবিহীনভাবে রক্তে অক্সিজেনের সম্পৃক্ততা পরিমাপ করা হয়।

কী কাজে ব্যবহার করা হয় এই যন্ত্র?

মানুষের রক্তে বিভিন্ন ধরনের রক্তকণিকা রয়েছে। তার মধ্যে লোহিত রক্তকণিকা অন্যতম। লোহিত রক্তকণিকা হিমোগ্লোবিন নামের একটি যুগ্ম প্রোটিন রয়েছে, যাতে উপস্থিত রয়েছে আয়রন। এই হিমোগ্লোবিন দেহে অক্সিজেনের বাহক হিসেবে কাজ করে। আর এ পরিবহনের সময় হিমোগ্লোবিন এবং অক্সিজেন পরস্পর সম্পৃক্ত বা সংযুক্ত অবস্থায় পরিবাহিত হয়। অক্সিজেনের এ যুগ্ম অবস্থাকে অক্সিজেন সম্পৃক্ততা বলা হয়। মূলত রক্তে কী পরিমাণ অক্সিজেন পরিবাহিত হচ্ছে, তা যন্ত্রটি দিয়ে মাপা হয়। দেহে অক্সিজেনের অবস্থা পরিমাপের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয় করা যায়। যেমন- সিওপিডি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি। যন্ত্রটি দিয়ে খুব সহজেই রক্তের সম্পৃক্ততা নির্ণয় করা যায়।

এটি দেখতে অনেকটা খেলনা ক্লিপের মতো। ক্লিপের মতো অংশটুকুর মধ্যে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তখন একটি আলো আঙুলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মূলত এই প্রবাহমান আলো দিয়েই রক্তে অক্সিজেনের সম্পৃক্ততা নির্ণয় করা হয়। পালস অক্সিমিটার একই সঙ্গে হার্ট রেট ও অক্সিজেন সম্পৃক্ততা নির্ণয় করতে পারে।

একজন সুস্থ মানুষের দেহের ৮৯ ভাগ রক্ত অক্সিজেন পরিবহন করে। এই অক্সিজেন পরিবহন প্রক্রিয়াই দেহের সুস্থতা বা অসুস্থতা নির্ধারণ করে থাকে। 

অর্থাৎ অক্সিজেন সম্পৃক্ততা নির্ণয়ের মাধ্যমে আপনার শারীরিক অবস্থা খুব সহজেই বলে দেয়া সম্ভব। যদি কারো দেহে ৯৫ শতাংশ অক্সিজেন সম্পৃক্ত হয়, তাহলে সেটিকে আদর্শ বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু অক্সিজেন সম্পৃক্ততা ৯২ শতাংশ এর নিচে হলে অক্সিজেন স্বল্পতা বা হাইপোক্সিয়া হয়ে যায়। অর্থাৎ রোগীর অসুস্থতার হারও বেড়ে যায়।

করোনায় যে কারণে ব্যবহার করা হয় পালস অক্সিমিটার

করোনাভাইরাসের আক্রমণের ফলে মানবদেহে ফুসফুস খুব সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে দেহে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমে যায়। রোগীর অবস্থা খুব দ্রুত আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছে যায়। তাই যদি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে রক্তে অক্সিজেনের সম্পৃক্ততার পরিমাণ নির্ণয় করে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ভেন্টিলেশন দেয়া হয়, এই ভেন্টিলেশন ঠিকমত কাজ করছে কি-না সেটিও পালস অক্সিমিটারের সাহায্যে পরীক্ষা করা যায়। যেটি করোনা রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা