• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

চিতলমারীর চিত্রা নদী ও হক ক্যানেল ময়লার ভাগাড়ে পরিণত

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১  

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দুই পাড়ে কয়েকশ’ পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে। সেই সাথে কিছু নোংরা মানুষের খামখেয়ালীতে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কুরমনির সদ্য খননকৃত পাটনীবাড়ি খালের পানি প্রবাহ। তাই ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে পানি। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় এ উপজেলার তিনটি নদী ও ৫৫ টি খালের খনন কাজ কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছালেও পয়ঃবর্জ্য, নর্দমার ড্রেন অপসারণ এবং নদী ও খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে বলে পরিবেশবিদরা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে ৩ টি নদীসহ ৫৫ খালের খনন কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। বেশীর ভাগ খাল ও নদী খনন হলেও বর্তমানে চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের খনন কাজ শেষের দিকে। কিন্তু শুধু উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মরা চিত্রা নদী হক ক্যানেলের দুই পাড়ে কয়েকশ’ পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন রয়েছে। এছাড়া কিছু নোংরা মানুষের খামখেয়ালীতে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কুরমনির সদ্য খননকৃত পাটনীবাড়ি খালের পানি প্রবাহ। যা ভয়াবহ ভাবে পরিবেশকে দূষণ করছে। খাল খননের সাথে সাথে ওই সমস্ত পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় নদীর ও ক্যানেলের দু’পাড়ের বাসিন্দারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই পরিবেশবিদরা মনে করছেন নদী ও খাল থেকে পরিবেশ দূষণকারী এই পয়ঃবর্জ্য-নর্দমার পাইপ ও ড্রেন লাইন অপসারণ এবং ময়লা ফেলা বন্ধ না করায় সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে।

 

 

চিত্রা পাড়ের বাসিন্দা সমির মন্ডল, মিঠু বিশ্বাস, বলরাম বিশ্বাস, গৌরাঙ্গ বিশ্বাস, রুপালী বেগম, গাউছ গাজিসহ অসংখ্য মানুষ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, খাল খননের শুরুতে তারা প্রাণের স্পন্দন দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ এই পানি আর ব্যববহার যোগ্য থাকছে না। এছাড়া অনেকে তাদের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা এ খালে ফেলছে। তাদেরও কেউ বাধা দিচ্ছে না।

স্কুল শিক্ষক মোঃ সাফায়েত হোসেন, সাংবাদিক টিটব বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এ গুলো অপসারণ ও বন্ধে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এ উপজেলার মানুষের সীমাহীন পানির কষ্ট রয়েছে। তাছাড়া যারা পরিবেশ দূষণ করছে তারা অপরাধ করছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) খুলনা বিভাগীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসিনতার কারনে এ জাতিয় পরিবেশ বিধংসী কর্মকান্ড চলছে। যার কারণে পরিবেশ প্রতিবেশ চরম হুমকির মুখে। অবিলম্বে এসকল কর্মকান্ড বন্ধের জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে। তা রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিটন আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বিষয়টি সর্ম্পকে আমরা অবগত আছি। এ ঘটনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যারা এ ধরণের কাজের সাথে জড়িত তাদের নদী ও খাল দূষণ না করার জন্য অনুরোধ করব, বুঝাব। না শুনলে আমরা পরিবেশ দূষণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করব।

গেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, নদী ও খাল খননের দায়িত্ব আমাদের। এটি রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। তারপরও আমরা বিষয়টি’র খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা