• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের ঘরগুলোতে ৩ মাসেই ফাটল!

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় 'জমি আছে ঘর নাই' প্রকল্পে হতদরিদ্রদের জন্য ২২টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গ্রামীন অবকাঠামো (টিআর) রক্ষণাবেক্ষণের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলের হতদরিদ্রোদের মাঝে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে এ ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে গৃহহীনদের অনেকেই এই ঘর পায়নি। যারা পেয়েছে তাদের গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। 

নির্মিত এসব ঘরের চালে, দরজা, জানালায় ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। পরিবহন ব্যয়ও উপকারভোগীদের বহন করতে হয়েছে। মেঝেতে বালির পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে মাটি। উপকারভোগীদের শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ করে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। উল্টো মিস্ত্রীদের দু-বেলা খাবার জোগাতে হয়েছে অসহায় এই পরিবারগুলোকে। অভিযোগ রয়েছে গৃহহীনদের বঞ্চিত করে অনেক স্বচ্ছল পরিবারকে দেয়া হয়েছে এসব ঘর। প্রতিটি ঘর অনকূলে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা করে ২২টি ঘরে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮২ টাকা।

রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের ছোট সন্যাসী গ্রামের শুকলা মন্ডল অসুস্থ স্বামী সন্তানকে বাঁচাতে মোংলা ইপিজেডে শ্রমিকের কাজ করেন। 'জমি আছে ঘর নাই' প্রকল্পের আওতায় তিনি দুর্যোগ সহনশীল একটি সেমিপাকা ঘর পেয়েছেন। ওই ঘরের জন্য পরিবহনের কথা বলে তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪৪ হাজার টাকা। একইভাবে উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের চাড়াখালী গ্রামের অসুস্থ আজাহার আলী শেখকে একটি ঘর করে দেয়া হয়েছে। ওই ঘর পেতে তাকেও গুনতে হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। 

এদিকে এসব ঘরগুলো মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই পিলারসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। মেঝে ও দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ঘরে লাগানো নিম্নমানের কাঠ কোথাও কোথাও বেকে গেছে। শুকলা মন্ডল ও আজাহারের স্ত্রী তাসলিমা বেগমের মতো অভিযোগ গৌরম্ভা ইউনিয়নের ছায়রাবাদ গ্রামের আকরাম শেখের স্ত্রী আফরোজা বেগম, বর্ণি গ্রামের ফিরোজ শেখের বিধবা স্ত্রী শিরিনা বেগমেরও। 

রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. নাহিদুজ্জামান জানান, মাত্র ৩ মাসে ঘরে ফাটল ধরার কথা না। বিষয়টি বাচাই বাছাই করে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল জানান, যে সমস্থ ঘরে ফাটল ধরেছে, তারা আমার কাছে অভিযোগ করলে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর কেউ পরিবহন খরচের কথা বলে টাকা নিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা