• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

জাহান্নামের শাস্তি ৭ দিন নির্ধারিত!

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২১  

জাহান্নামের শাস্তি কি ৭ দিন নির্ধারিত? দুনিয়ার বয়সও কি সাত দিন? এ শাস্তি ও সময়কাল নিয়ে আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে এমন ভিত্তিহীন উক্তি তুলে ধরেছে অভিশপ্ত ইয়াহুদি সম্প্রদায়। কুরআনুল কারিমে এমন ভিত্তিহীন উক্তির ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে ইয়াহুদিদের উক্তি ও কুরআনের সেই দিকনির্দেশনাই বা কী?

ইয়াহুদিরা বলে বেড়াতো, দুনিয়ার বয়স হলো ৭ হাজার বছর। প্রত্যেক হাজার বছরের পরিবর্তে আমরা একদিন জাহান্নামে অবস্থান করবো। সে হিসেবে আমরা (ইয়াহুদি) শুধু সাতদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব। আসলেই কী তাদের এ দাবি সঠিক?

আবার ইয়াহুদিদের কেউ কেউ বলতো, হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তুর পাহাড়ে অবস্থানকালীন সময়ে আমরা যে ৪০ দিন গরুর বাছুরের পূজা করেছি; সেই চল্লিশ দিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব। তারা তাদের অপরাধের ব্যাপারে জাহান্নামের শাস্তি নিয়ে আল্লাহ সম্পর্কে এ রকম ভিত্তিহীন উক্তি বা কথা বলে বেড়াতো।

ইয়াহুদিদের কথায় মনে হতো যে, তাদের সঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা ওয়াদাবদ্ধ। বাস্তবে বিষয়টি মোটেই এমন নয়। কুরআনুল কারিমের বর্ণনায় তা সুস্পষ্ট। যেখানে মহান আল্লাহ এভাবে ঘোষণা দিয়েছেন-
‘আর ইয়াহুদিরা বলেছিল যে, নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যতিত (জাহান্নামের) আগুন আমাদেরকে স্পর্শ করবে না। (হে রাসুল!) আপনি তাদেরকে বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ পাকের কাছ থেকে এমন কোনো অঙ্গীকার পেয়েছ; যার খেলাপ তিনি করবেন না। নাকি আল্লাহ তাআলা সম্বন্ধে এমন ভিত্তিহীন উক্তি করছো, যা তোমরা জান না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৮০)

‘না’, পৃথিবীর বয়স যেমন ৭ হাজার বছর নয়; আবার ইয়াহুদিদের অন্যায় অপকর্মের শাস্তিও ৭দিন বা ৪০ দিন হওয়ার দাবিও সঠিক নয়। এটি ইয়াহুদিদের ভ্রান্ত উক্তি। এ বিষয়টি কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।

প্রকৃতপক্ষে ইয়াহুদিদের এসব চিন্তা-ভাবনা একান্তই সুখ স্বপ্ন, কল্পনা প্রসূত অন্যায় আবদার। বেহেশত ও দোজখে প্রবেশের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা যে রীতি-নীতি ঘোষণা করেছেন তাই সঠিক ও সত্য। কেননা এটি সন্দেহাতীতভাবে সত্য যে, আল্লাহর কর্ম-নীতিতে এক চুলও কম-বেশি করা হবে না।

বিশ্বনবির প্রতি কুরআনের নির্দেশ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ইয়াহুদিরা যখন জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা তুলে ধরে এবং বলে আমাদের পর আপনার উম্মত আমাদের স্থলাভিষিক্ত হবে। তখন আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন-
‘(হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ তাআলার সঙ্গে এ সম্পর্কে কোনো চুক্তি সম্পাদন করেছ? যে তিনি সে চুক্তির খেলাফ করবেন না, অথবা তোমরা আল্লাহ তাআলার সম্পর্কে এমন কথা বলছো যার কোনো দলিল-প্রমাণ তোমাদের কাছে নেই।’

মুমিন মুসলমানের উচিত, ইয়াহুদি ও অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিভ্রান্তিমূলক কথা এড়িয়ে চলা। বিনা হিসেবে জান্নাত লাভে ধর্মের দোহাই দিয়ে আল্লাহর বিধান পালন থেকে দূরে না থাকা। বরং কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক জীবন পরিচালনার মাধ্যমে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সব ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর ধোঁকা ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন গঠন করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও চিরস্থায়ী জান্নাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা