• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

জেলেদের আটকে নির্যাতন ও টাকা আদায়ের অভিযোগ বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

জেলেদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে পশ্চিম সুন্দরবনের ভদ্রা ক্যাম্পের ওসি (বন কর্মকর্তা) রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। জেলেরা জানান, টাকা আদায়ের জন্য এই বন কর্মকর্তা এমনই নির্যাতন করেছেন, যা বনদস্যুরাও করে না। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মোংলা প্রেস ক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের নির্যাতনের বর্ণনা দেন তারা। তবে কোনও জেলেকে আটকে নির্যাতন বা টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি রবিউল।

নির্যাতনের শিকার জেলে নির্মল, আলমগীর, নূর ইসলাম, বাসুদেব ও আল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, গত ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই স্টেশন ও ঢাংমারি স্টেশন থেকে বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে বনের অভ্যন্তরীণ খালে সাদা মাছ ধরার জন্য পাঁচটি নৌকা নিয়ে যাই। পরে পশ্চিম সুন্দরবনের ভদ্রা ক্যাম্পের ওসি রবিউল এবং ওই ক্যাম্পের ট্রলার মাঝি বাদশা ১০ জেলেকে ধরে ক্যাম্পে আটকে রাখেন। অবৈধভাবে মাছ শিকারের দোহাই দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। আমরা বন বিভাগের পাস পারমিট দেখালে, তারা আরও রেগে যান। এ সময় আমাদের নৌকায় থাকা সাড়ে তিন মণ কোরাল, কাইন ও জাবাসহ কয়েক প্রকার সাদা প্রজাতির মাছ রবিউল নিয়ে নেন।

তারা আরও বলেন, জেলে আল আমিন, নির্মল, আলমগীর ও রমেশ রায়ের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন ওসি রবিউল। একপর্যায়ে জলদস্যুরা আমাদের জিম্মি করেছে বলে বাড়িতে ফোন দিতে বলেন। নির্যাতনের ভয়ে আমরা বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে রবিউলকে টাকা এনে দিই। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওসির ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে দুপুর ২টা ৩১ মিনিটে ১৫ হাজার এবং ২টা ৩৬ মিনিটে আরেকটি নম্বরে ১২ হাজার ২৫০ টাকা পাঠায় আমাদের পরিবার। ওসির চাওয়া এক লাখ ৩০ হাজারের বাকি টাকা ভদ্রা ক্যাম্পের ট্রলার মাঝি বাদশার স্ত্রীর মাধ্যমে নেন।

জেলেরা জানান, ওই বন কর্মকর্তা জেলে ইয়াসির সরদারের কাছ থেকে ৩০ হাজার, শ্যামল সরদারের কাছ থেকে ৩০ হাজার, নির্মল রায়ের কাছ থেকে ৪০ হাজার এবং রমেশের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করেছেন।

নির্যাতনের শিকার এসব জেলের বাড়ি মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা ও গিলারখালকূল এবং খুলনার দাকোপের আমতলা ও ঢাংমারির ভোজনখালী এলাকায়।

এ ঘটনায় জেলেরা বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, ওসি রবিউলের কাছে জেলেদের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও জেলেকে আটকাইনি, কোনও জেলেকে নির্যাতন করিনি, টাকাও নিইনি।’ তবে ট্রলার মাঝি বাদশার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে খুলনা বন সংরক্ষক মঈন উদ্দিন খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও-কে (বিভাগীয় বন কর্মকর্তা) তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলবো।’

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা