• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ত্রিভুজ প্রেমের জেরে খুন হলেন বাগেরহাটের বাবলু

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

বাগেরহাট সদর উপজেলার হালিশহর এলাকার বাসুদেব মন্ডলের ছেলে বাবলু মন্ডল (২১) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চর বানিয়ারী গ্রামে ভগ্নিপতি মহানন্দ মধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়। এর ৩ দিন পর ওই গ্রামের সমীর মন্ডলের মাছের ঘেরের পাশে হোগলা ক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নাজিরপুর থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি মামলা তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করে মাত্র ৩ দিনের মধ্যে একটি ক্লুলেস মামলার আসামি গ্রেপ্তাতারসহ হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গত শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর বাবলু মন্ডলের একমাত্র খুনি গোপাল মন্ডল শনিবার বিকেলে পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পল্লবেশ কুন্ডুর আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবাববন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

পিবিআই পিরোজপুরের পুলিশ পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমান জানান, ত্রিভুজ প্রেমের কারণে মুঠোফোনে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চর বানিয়ারী এলাকায় ডেকে নিয়ে বাবলু মন্ডলকে (২১) লাঠি দিয়ে মাথায় এবং কেচি (সিজার) দিয়ে বুকে আঘাত করে হত্যা করে তার বন্ধু গোপাল মন্ডল (২০)। গোপাল মন্ডল বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী বাওয়ালীপাড়া গ্রামের গোলক মন্ডলের ছেলে।

তিনি জানান, খুনের পর লাশ গুম করার জন্য বাবলু মন্ডলের পরিহিত প্যান্টের বেল্ট খুলে গলায় পেঁচিয়ে মরদেহ টেনে স্থানীয় সমীর মন্ডলের মাছের ঘেরের পাশে হোগলা ক্ষেতে ফেলে রাখেন গোপাল। এ সময় গলা থেকে বেল্টটি খুলে ওই হোগলা ক্ষেতে ফেলে দেন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাঠি স্থানীয় বিকাশ মন্ডলের মাছের ঘেরে ও কেচি (সিজার) একটি ডোবায় এবং নিহত বাবলু মন্ডলের ব্যবহৃত মোবাইলটি পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেন খুনি গোপাল মন্ডল। গ্রেপ্তারের পর তার তথ্য মতে সেগুলো উদ্ধার করে পিবিআই।

পিআইবি সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার হালিশহর এলাকার বাসুদেব মন্ডলের ছেলে নিহত বাবলু মন্ডল গত ২৯ জানুয়ারি স্বরস্বতি পূজা উপলক্ষে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চরবানিয়ারী গ্রামে ভগ্নিপতি মহানন্দ মধুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে কেউ তাকে ডেকে নেয়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ৮ ফেব্রুয়ারি ভগ্নিপতি মহানন্দ নাজিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই দিন বিকেলে নাজিরপুর উপজেলার পশ্চিম চরবানিয়ারী গ্রামের সমীর মন্ডলের মাছের ঘেরের পাশে হোগলা ক্ষেত থেকে বাবলু মন্ডলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ৯ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হলে পিবিআই পিরোজপুরের পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে গোপাল মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে। পিবিআইর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং প্রেমের কারণে বাবলু মন্ডলকে হত্যা করেছেন বলে জানান।

গোপাল মন্ডল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, ২ বছর ধরে একই গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। একপর্যায়ে বাবলু মন্ডল তার প্রেমে বাধাঁ হয়ে দাঁড়ায়। ওই মেয়েটিকে বাবুলও প্রেমের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি জানার পর তিনি বাবলু মন্ডলকে সর্তক করেন, কিন্তু বাবুল তার কথায় কর্ণপাত না করায় তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা