• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

দর্শনার্থীহীন চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথিদের আনাগোনা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২০  

করোনাভাইরাস মানুষের জীবনে মৃত্যুর রূপ নিয়ে উপস্থিত হলেও রাজধানীর চিড়িয়াখানার প্রাণিদের জন্য বড় ধরনের স্বস্তি বয়ে এনেছে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশজুড়ে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দর্শনার্থীদের আনাগোনা বন্ধ। তাই নিভৃত যাপনে সংসার বাড়ছে জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রাণিদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরুর পর থেকে সব প্রতিষ্ঠানের মতো জনসমাগম এড়াতে জাতীয় চিড়িয়াখানাও বন্ধ রয়েছে। দর্শনার্থীদের আনাগোনা না থাকায় দীর্ঘ চেষ্টার পরও যেসব পশুপাখির বাচ্চা হয়নি, এবার সেসব প্রাণির একাধিক বাচ্চা হয়েছে। এমনকি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দম্পতিও অপেক্ষা করছে  নতুন অতিথির।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, জিরাফ দম্পতির কোল জুড়ে এসেছে এক ছেলে সন্তান। এই দুর্যোগে জন্ম হওয়ায় তার নাম দেওয়া হয়েছে দুর্জয়। এ নিয়ে জিরাফের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯টিতে।

সাধারণ ছুটিতে হরিণ মোট দশটি বাচ্চা দিয়েছে। দীর্ঘদিন বাচ্চা না হওয়া জলহস্তিরও বাচ্চা হয়েছে। বাচ্চা হয়েছে জেব্রার, অ্যারাবিয়ান হর্সের; নতুন অতিথি এসেছে এমুর খাঁচায়। উটপাখি, ময়ূরও ডিম দিয়েছে। তাদের ঘরেও শিগগিরই নতুন অতিথিরা আসবে।

সন্তান হবে চিড়িয়াখানার রয়েল বেঙ্গল টাইগার দম্পতিরও। সব মিলিয়ে পুরো চিড়িয়াখানা জুড়ে এখন খুশির হাওয়া। এসব প্রাণিদের যারা নিয়মিত যত্ন করেন এসব ঘটনায় তারাও বেজায় খুশি।

সাধারণ ছুটিতে মানুষের আনাগোনা না থাকায় চিড়িয়াখানার প্রাণিদের প্রজনন নির্বিঘ্নে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কিউরেটর নুরুল ইসলাম। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময় প্রতিদিন মানুষের যাতায়াত থাকে, তখন খাবার দিলেও প্রাণিরা ঠিকভাবে খেত না। খাঁচার কোনায় চুপ করে বসে থাকতো ভয়ে। প্রচুর খাবার নষ্ট হতো। এখন তারা খাবার ফেলে দেয় না, ঘুরে বেড়ায়। প্রজনন অব্যাহত রেখেছে। যে কারণে অনেক প্রাণি বাচ্চা দিয়েছে। গর্ভবতী প্রাণিদের সুষম খাবার দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন খাঁচা পরিস্কার করা হচ্ছে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হচ্ছে।’

এদিকে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া চিড়িয়াখানা দুইমাস ধরে বন্ধ থাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা আয়ের সুযোগ হারিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, এখান থেকে সরকারি কোষাগারে ১২ কোটি টাকা আসে। সেদিক বিবেচনায় এই বন্ধ সময়ে লোকসান গুনছে চিড়িয়াখানা। সাধারণ সময়ে চিড়িয়াখানায় গড়ে ১০ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেন জনপ্রতি ৫০ টাকা টিকেটের বিনিময়ে।

কিউরেটর বলেন, ‘সাধারণ ছুটিতে যদিও লোকসান হচ্ছে কিন্তু এখানকার প্রাণিদের এমন উৎফুল্ল কোনদিন দেখিনি। সব প্রাণি ভালো আছে, সুস্থ আছে। নিয়মিত খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। সঙ্গীর সঙ্গে খেলা করছে। ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো যাতে দর্শনার্থীদের প্রাণিদের কাছাকাছি যাওয়া থেকে দূরে রাখতে।’

তিনি আরও জানান, সাধারণ ছুটিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রেখে বাকিদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। যারা ডিউটি করছেন তারা পিপিই পরিধান করে জীবাণুমুক্ত থেকে কাজ করছেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে ১৮৬ একর জায়গা নিয়ে রাজধানীর মিরপুরে গড়ে তোলা হয় জাতীয় চিড়িয়াখানা। এখানে ১৩১ প্রজাতির ২ হাজার ৭৭৮টি প্রাণি রয়েছে। প্রাণিদের মধ্যে ৮ প্রজাতির ৩৮টি মাংসাশী প্রাণি, ১৯ প্রজাতির তৃণভোজী বড় প্রাণি রয়েছে ২৭০টি। ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণির সংখ্যা প্রায় ২০০টি। আরও রয়েছে ১০ প্রজা

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা