• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

নদী-খাল খননে বাগেরহাটের প্রকৃতিতে প্রাণ ফিরেছে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২০  

বাগেরহাটে বিভিন্ন নদী ও খাল খননের ফলে আপন রূপ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতি।  জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন জেলার পাঁচ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।  বেড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন।  

অন্যদিকে নৌ পথে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের ফলে খরচ ও হয়রানি কমেছে কৃষকের।  খাল খননের ফলে খুশি এলাকাবাসী ও জন প্রতিনিধিরা।

এবছর বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৬/১ পোল্ডারে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অধীনে জেলার ফকিরহাট, কচুয়া, মোল্লাহাট, বাগেরহাট সদর ও চিতলমারী উপজেলায় বর্তমানে ৩৩টি খাল ও দুটি নদীর প্রায় একশ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে।  এর ফলে এবার বৃষ্টি মৌসুমে হয়নি কোন জলাবদ্ধতা।  স্বস্তি ফিরেছে চিংড়ি, সবজি ও ধান চাষিদের মনে।  

মোল্লাহাটের চাদেরহাট গ্রামের কৃষক নন্দবালা বলেন, ‘আমরা এখন নৌকায় করে ধান, মাছ ও সবজি আনতে পারছি।  এতে আমাদের অনেক খরচ কম হচ্ছে। '

সীমা মজুদার ও বাসন্তী বলেন, ‘ভৈরব নদী কাটার আগে প্রতি বছর অতিবৃষ্টিতে আমাদের বাড়ি ও ক্ষেত খামারে জল জমে থাকতো এবার আর কোন জল জমেনি।  আমরা এখন অনেক শান্তিতে আছি।  আমাদের ভিটায় এখন অনেক সবজি হয়।  আমরা মনে করি নদী ও খাল যেমন প্রাণ ফিরেছে, তেমনি আমরা নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। '

ফকিরহাট উপজেলার মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হিটলার গোলদার বলেন, ‘নদী ও খাল খননের ফলে আমাদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।  চিংড়ি শিল্পে এবং কৃষি ক্ষেতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে।  ভৈরব ও চিত্রা নদীসহ বিভিন্ন খাল খননে সময় মতো কৃষকরা পানি পাচ্ছে।  এখন ফসল ভাল হচ্ছে।  এবার সৃষ্টি হয়নি কোন জলাবদ্ধতা, অতিবর্ষণে নদী ও খালে পানি বের হওয়ায় ক্ষতি হয়নি চিংড়ি ঘেরের। '

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, ‘খাল খনন কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে এসে অনেক বাধাঁর সম্মুখিন হতে হয়েছে আমাদের।  তারপরও প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের কাজ সকলের সহযোগিতায় আমরা চলমান রেখেছি।  খালের দুই পাশে বনায়ন কাজও অব্যাহত রয়েছে। '

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘বাগেরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ৫৫টি খাল ও ৫টি নদী খনন সম্পন্ন করা হবে।  ইতোমধ্যে আমাদের ৩৩টি খাল ও দুটি নদী সম্পূর্ণভাবে খনন কাজ সমাপ্ত হয়েছে।  বর্ষার মৌসুম শেষ হলে পুনরায় অন্যান্য খাল খনন করা হবে। '

জানা গেছে, ৮০'র দশকে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদী ও খাল খনন করা হয়েছিল।  এরপর থেকে নানা অবৈধ স্থাপনা তৈরি, দখলবাণিজ্য, অপরিকল্পিত মাছ চাষের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে ভরাট হয়ে যায় খালগুলো।  ফলে ওইসব এলাকায় জলাবদ্ধতা, পানি নিষ্কাশন না হওয়াসহ জীবন যাপনে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল। 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা