• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

নেইমারের ১০০-তে চার মিনিটে তিন গোলের ‘ম্যাজিক’

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২১  

ত্রিফলা আক্রমণভাগ নতুন কিছু নয়। নিকট অতীতে রিয়াল মাদ্রিদে ‘বিবিসি’ ও বার্সেলোনায় ‘এমএসএন’ জুটি দেখা গেছে। আক্রমণভাগে তাদের তিন খেলোয়াড় একসঙ্গে জ্বলে উঠলে পুড়ে খাক হতো প্রতিপক্ষ। কাল মঁপেলিয়ে যেমন পুড়ল পিএসজির ত্রিফলায়—নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও মাউরো ইকার্দি। ব্রাজিল, ফ্রান্স ও আর্জেন্টাইন সম্মিলনে চার মিনিটে ৩ গোলের দেখা পেয়েছে ফরাসি ক্লাবটি।

কিন্তু এই তিন গোল ব্যবধানে পিএসজি জেতেনি। এমবাপ্পে জোড়া গোল করায় ৪–০ গোলে হারতে হয়েছে মঁপেলিয়েকে। এই জয়ে ২১ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠল পিএসজি। দুইয়ে থাকা লিঁলের চেয়ে ৩ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে মরিসিও পচেত্তিনোর দল

অবশ্য পিএসজি এখনো পচেত্তিনোর দল হয়ে উঠতে পারেনি। টমাস টুখেল কোচের চাকরি হারানোর পর কিছুদিন হলো তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আর্জেন্টাইন এই কোচ। এখনো পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এর মধ্যে আবার কোভিড–১৯ হানা দিয়েছিল তাঁর শরীরে। সপ্তাহখানেক সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে থাকতে হয়েছে আইসোলেশনে। সেখান থেকে কাল প্রথমবারের মতো ডাগআউটে ফিরেছিলেন পচেত্তিনো। দুর্দান্ত জয়টা তাঁর জন্য নেইমারদের উপহার।

ওদিকে মঁপেলিয়ে মাঠে নামার ২০ মিনিটের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখেছে। না, তখনো নিজেদের জাল থেকে বল কুড়াতে হয়নি। ১৯ মিনিটে নিজেদের বক্সের খানিকটা বাইরে পিএসজি ফরোয়ার্ড এমবাপ্পেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন অতিথি দলটির গোলরক্ষক জোনাস ওমলিন। এমবাপ্পে যখন বল ধরতে ছুটে আসছিলেন, তখন তাঁর সামনে শুধু ওমলিন–ই ছিলেন। গোলের সুযোগ ছিল যথেষ্ট। বিপদ টের পেয়েই এমবাপ্পেকে স্লাইডিং ট্যাকলে ফেলে দেন ওমলিন। ভিডিও অ্যাসিসট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) তাঁর এই অপরাধ ক্ষমা করেননি।

একজন বেশি নিয়ে খেলার এই সুবিধার সদ্ব্যবহার করতে বেশি দেরি করেনি পিএসজি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ১১ মিনিট আগে আনহেল দি মারিয়ার ডিফেন্স চেরা পাস থেকে এমবাপ্পে দারুণ এক ‘চিপ’ করেন মঁপেলিয়ের বদলি নামা গোলরক্ষক দিমিত্র বেরতাউদের মাথার ওপর দিয়ে। গোল!

বিরতির পর সেই মাহেন্দ্রক্ষণের দেখা পায় পিএসজি। ৬০ থেকে ৬৩—এই ৩ মিনিটে মঁপেলিয়েকে স্রেফ কাঁপিয়ে ছেড়েছে প্যারিসের ক্লাবটি।

শুরুটা করেন নেইমার। পিএসজির হয়ে নিজের শততম ম্যাচকে রাঙিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ডান প্রান্ত থেকে এমবাপ্পের ক্রস পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো নেইমার। বক্সের একেবারে মাঝে নেইমারকে কীভাবে অরক্ষিত রাখতে পারলেন মঁপেলিয়ের ডিফেন্ডাররা, সেটি অবশ্য ভাবনার বিষয়। সে যা-ই হোক, ঠান্ডা মাথায় নিজের শততম ম্যাচের স্মারক গোলটি পেয়ে যান পিএসজির প্রাণভোমরা।

নেইমারের গোলের ঠিক এক মিনিট পরই প্রায় ‘কার্বন কপি’ গোল করেন ইকার্দি। পার্থক্য শুধু ডান প্রান্ত থেকে আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির ক্রস প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লাগায় বক্সে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইকার্দি বল পেয়ে যান। নেইমারের মতো নিচু শট নয়, বাতাসে ভাসিয়ে গোল করেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। ৬৩ মিনিটে নিখুঁত প্রতি আক্রমণ থেকে গোল পেয়ে যান এমবাপ্পে। ইকার্দির ‘ফাইনাল পাস’ ধরে নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন ফরাসি তারকা।

পিএসজির হয়ে ১০০ ম্যাচে এ নিয়ে ৮১ গোল করলেন নেইমার। এর পাশাপাশি আরও ৪৬টি গোল বানিয়ে দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ ক্লাবটির হয়ে ১২৭ গোলে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ২ জানুয়ারি পচেত্তিনো কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেঁত এঁতিয়েনের সঙ্গে ড্র করেছিল পিএসজি। কিন্তু তারপর এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ জিতল ক্লাবটি।

পচেত্তিনো জানালেন ডাগআউটে ফিরতে পেরে তাঁর অনুভূতি, ‘ভালোই লাগছে সবার সামনে থাকতে পেরে। ভালো ম্যাচ হলো। আজ আমাদের সমন্বয়টা (নেইমার, এমবাপ্পে ও ইকার্দি) ঠিক হয়েছে, দেখা যাক সামনে এই ছকে থাকতে পারি কি না।’

এমবাপ্পের ফর্মে ফেরা পিএসজির জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তি হতে পারে এ ম্যাচে। প্রথম কুড়ি মিনিটের মধ্যেই দুটো গোল করতে পারতেন তিনি। এমবাপ্পের পারফরম্যান্সেও সন্তুষ্ট পচেত্তিনো, ‘এ ম্যাচের আগেই আমি এমবাপ্পের খেলায় সন্তুষ্ট। ভালো লাগছে যে সে গোল পেয়েছে। স্ট্রাইকারের আত্মবিশ্বাসের জন্য গোল পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা জানতাম এটা স্রেফ সময়ের ব্যাপার।’

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা