• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

পশুর হাট ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২০  

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র চারদিন। ঈদকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে রাজধানীতে বসেছে পশুর হাট। এসব পশুর হাট ঘিরে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

নিয়ম অনুযায়ী ঈদুল আজহার ৫ দিন আগে থেকেই হাটে পশু কেনা-বেচার জন্য আনা হয়। কিন্তু এবার রাজধানী ঢাকার সব অস্থায়ী হাটগুলোতে নির্ধারিত সময়ের আগেই আসতে শুরু করে কোরবানির পশু। 

রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৭টি স্থানে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। এর মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় ৬টি পশুর হাট। এই পশুর হাটগুলোর মধ্যে একটি স্থায়ী হাট এবং ৫টি অস্থায়ী। 

স্থায়ী হাটটি বসেছে গাবতলীতে। অস্থায়ী হাটগুলো হলো- উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গায়; কাওলা শিয়াল ডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গায়; ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গায়; ভাটারা (সাইদ নগর) পশুর হাট এবং উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গায়।

অন্যদিকে ডিএসসিসি এলাকায় বসেছে ১১টি হাট। উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; হাজারীবাগে ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির মাঠ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা; সাদেক হোসেন খোকা মাঠের পাশে ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা; আমুলিয়া মডেল টাউনের খালি জায়গা; রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ; কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা; আফতাব নগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই; এফ জি এইচ ও সেকশন-১ ও ২–এর খালি জায়গা; মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা এবং ধুপখোলা মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গাতে হাটগুলো বসেছে। 

এদিকে কোরবানির এসব পশুর হাট কেন্দ্রিক বেশকিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। 

পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে থাকছে–

১। কোরবানির পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা
২। পশুর হাট কেন্দ্রিক সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
৩। প্রতিটি পশুর হাটে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন
৪। প্রতিটি পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন
৫। পশুর হাট কেন্দ্রিক মানি এস্কর্ট ব্যবস্থা
৬। কন্ট্রোল রুম এবং প্রতিটি থানায় মানি এস্কর্ট টিম স্ট্যান্ডবাই
৭। কোরবানির পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন
৮। পশুর হাটের চৌহদ্দির বাইরে হাট বসতে দেয়া হবে না
৯। বলপূর্বক পশুবাহী ট্রাক/নৌকা আটকিয়ে অন্য হাটে নামানো যাবে না
১০। নির্ধারিত হারে হাসিল আদায় নিশ্চিত করতে হবে
১১। হাসিলের হার বড় ব্যানার/ফেস্টুনের মাধ্যমে দৃশ্যমান রাখতে হবে
১২। জাল টাকার বিস্তার রোধ ও পশুর হাটে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, পকেটমার ও অন্যান্য অপরাধীদের তৎপরতা বন্ধ করতে কার্যকারী ব্যবস্থা
১৩। পশুর বিক্রয়লব্ধ টাকা ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ তৎপর থাকবে
১৪। অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুম ও ওয়াচ টাওয়ারে জন্য সচেতনতামূলক ব্যানার স্থাপন
১৫। পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা ও জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপন
১৬। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে অনলাইনভিত্তিক বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে পশু বিক্রির জন্য উৎসাহিত করা
১৭। সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম ও ভেটেরিনারি অফিসার (পশু ডাক্তার) নিয়োজিত করা
১৮। হাট এলাকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
১৯। পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা এবং ফায়ার টেন্ডার মোতায়েন রাখা
২০। ইজারাদারদের প্রতি কিছু দায়িত্ব পালনে নির্দেশনা দেয়া হয়। 

নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে-

নির্ধারিত তারিখের পূর্বে হাটে পশু না আনা, চৌহদ্দি বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা, চৌহদ্দির বাইরে হাট না বসানো, পশু বহনকারী ট্রাকের সামনে হাটের নাম ব্যানারে লিখে রাখা, এক হাটের পশু অন্য হাটে না নামানো, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, হাট এলাকায় সিসিটিভি স্থাপন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা, জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা, পর্যাপ্ত সংখ্যক সেচ্ছাসেবক দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ নিয়োগ করা, টাকা পরিবহনে পুলিশের মানি এস্কর্ট সেবা গ্রহণ করা, হাটের মধ্যে স্থায়ী খাবারের দোকান স্থাপন করা এবং কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি সম্পর্কে সচেতন করতে লিফলেট দেয়া ও মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা।

এদিকে আজ মঙ্গলবার থেকেই রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সোমবার ইজারাদারদের নিয়ে সভা হয়েছে। সেখানে ইজারাদারদেরকে আমাদের শর্তাবলী যাতে কঠোরভাবে পালন করা হয় সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই সে সব শর্তাবলী প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে আমরা হাটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব। কেউ ইজারার শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রমসহ অন্যান্য বিষয় তদারকির জন্য আটটি মনিটরিং টিম গঠন করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রত্যেক টিমে মন্ত্রণালয়ের একজন করে উপসচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা