• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

প্রায়ই তলপেটে ব্যথা, কিডনিতে পাথর জমছে না তো?

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০  

জীবন-যাপনে অনিয়মের কারণেই দীর্ঘমেয়াদি রোগ-ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে। অনেকেই আছেন প্রয়োজনের তুলনায় পানি কম পান করেন। এ কারণে প্রস্রাবে ইনফেকশনসহ কিডনিতে পাথর জমতে পারে। 

আপনার কি প্রায়ই তলপেটে ব্যথা করে? এই ব্যথার কারণ হতে পারে মারাত্মক বলে জানান ভারতীয় ইউরোলজিস্ট অমিত ঘোষ। তার মতে, বারবার মূত্রনালি সংক্রমণ কিংবা তলপেটে ব্যথা হলে বুঝতে হবে পাথর বসে আছে কিডনিতে। তবে বেশিরভাগ সময়ে স্টোনের উল্লেখযোগ্য কোনো উপসর্গই থাকে না। অনেক সময় সময় স্টোন নিঃশব্দ ঘাতকের মতো মতো চুপচাপ বসে থাকতে পারে। যদি কিডনি থেকে বেরিয়ে পড়ে ইউরেথ্রা বা মূত্রনালিতে গিয়ে আটকে যায়, তাহলেই স্পষ্ট হবে এই গুপ্ত শত্রুকে।

ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ক্যালসিয়াম ফসফেট, ইউরিক অ্যাসিড স্টোনসহ নানা ধরণের পাথর কিডনিতে জমতে পারে। স্টোন হওয়ায় অন্যতম কারণ শরীরে প্রয়োজনীয় পানির অভাব। এছাড়া অক্সালেট জাতীয় স্টোনের ক্ষেত্রে অক্সালেট যুক্ত খাবার অনেক সময় স্টোনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে। যারা বাড়তি লবণ খান তাদেরও কিডনিতে স্টোন জমার ঝুঁকি বেশি। 

এছাড়াও বাড়তি ওজন, টাইপ-২ ডায়াবিটিস, গেঁটে বাত, হাইপার থাইরয়েডিজম সহ কিছু অসুখের কারণেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়ে। বেশিরভাগ সময়েই কিডনিতে পাথর জমলে তা বোঝা যায় না। তবে পাথরের আকার কিছুটা বড় হলে প্রস্রাব নালিতে এসে আটকে যায় তখন প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর জমলে কোমরের পিছন দিক থেকে তলপেট পর্যন্ত  তীব্র ব্যথা হতে পারে। এছাড়া প্রস্রাবের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান ইউরোলজিস্ট অমিত ঘোষ।

মূত্রনালি সংক্রমণের লক্ষণ

> মূত্রনালিতে সংক্রমণ হলে বারে বারে শৌচাগারে হয়। 

> প্রস্রাব চাপার চেষ্টা করলে ব্যথা ও অস্বস্তি শুরু হয়।

>  প্রস্রাব শুরু করার সময় প্রচণ্ড ব্যথা করে। 

> কখনো বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তও বের হতে পারে।  

> সামগ্রিকভাবে দুর্বল লাগে। আবার অনেকসময় খাবারে অরুচি হয়। 

> রক্তের কয়েকটি রুটিন পরীক্ষা করলেই এই অসুখ নির্ণয় করা সম্ভব। 

যেভাবে কিডনির পাথর নির্মূল করা হয়

অসুখ সম্পর্কে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিডনি স্টোনের আকার যদি খুব ছোট হয় তবে অনেক সময় প্রর্যাপ্ত জলপান করলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরোতে পারে আবার নাও পারে। লিথোট্রিপসি নামে এক বিশেষ পদ্ধতিতে কোনো রকম কাটা ছেঁড়া ছাড়াই শক ওয়েভের সাহায্যে কিডনি স্টোন গুঁড়ো করে দেয়া হয়। 

এরপর প্রচুর জল ও কমলালেবুর রস খেলে ইউরিন দিয়ে গুঁড়িয়ে যাওয়া স্টোন বাইরে বেরিয়ে যায়। এক সেন্টিমিটারের থেকে বড় স্টোন যদি পেলভিক অঞ্চলে থাকে সেক্ষেত্রে পারকিউটেনিয়াস নেফ্রোলিথোটমির (সংক্ষেপে পিসিএনএল) সাহায্যে  ছোট্ট একটা ছিদ্রের সাহায্যে স্টোন বার করে দেওয়া হয়। পিসিএনএল করে স্টোন বের দেওয়া সব থেকে কার্যকর চিকিৎসা।

যাদের কিডনিতে দুই সেন্টিমিটার আকৃতির স্টোন আছে এবং এর থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে সেক্ষেত্রে ছোট্ট সার্জারির সাহায্যে পাথর বের করাই সঠিক চিকিৎসা। কোমরের পিছনে ছোট ছিদ্র করে টেলিস্কোপ ও অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে পাথরবের করে দেয়া হয়। 

করোনা ভাইরাসের ভয়ে কোনো শারীরিক অসুবিধা ফেলে না রেখে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান করুন, বাইরে গেলে পানি সঙ্গে নিয়ে বের হতে ভুলবেন না। পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন, ভালো থাকুন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা