• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাংলাদেশ-ভারত জলসীমায় আটকা শত শত লাইটার জাহাজ

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশ-ভারত সুন্দরবনের অভ্যন্তরীণ আন্তর্জাতিক নৌ প্রটোকলভুক্ত রুটে সব ধরনের লাইটার জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। 

মোংলা-আংটিহারা-ঘষিয়াখালী অভ্যন্তরীণ চ্যানেল দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতগামী শত শত লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন দু’দেশে অবস্থানকারী বিপুল সংখ্যক নৌযান কর্মচারী। কবে নাগাদ এ রুট আবার চালু হবে তা নিশ্চিতভাবে কোনো সংস্থা জানাতে পারেনি। 

এদিকে চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মচারীরা লোকালয়ে যাতায়াত না করতে পারায় প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি, খাবার, রসদ, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন সংকটে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ভারতের অংশে প্রায় দুই শতাধিক ও বাংলাদেশ অংশের মোংলা বন্দর ও আংটিহারায় প্রায় দুইশ’ লাইটার জাহাজ অবস্থান করছে। 

এদিকে বাংলাদেশ-ভারত সুন্দরবনের অভ্যন্তরীণ রুটে সব ধরনের লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকলেও মোংলা বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে লাইটার জাহাজসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করছে। এছাড়া মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সব জাহাজ ও জেটিতে যথারীতি পণ্য ওঠানামাও করছে। 

জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশনা মোতাবেক গত ২৪ মার্চ থেকে সাময়িকভাবে ভারতের কলকাতা, বজবজ ও হলদিয়া বন্দরে সঙ্গে মোংলা বন্দরের পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আর্ন্তজাতিক নৌ প্রটোকলভুক্ত সুন্দরবনের অভ্যন্তরীণ এ রুট দিয়ে ভারতগামী সব ধরনের লাইটার জাহাজ (কার্গো, কোস্টার ও ট্যাংকার) চলাচলও বন্ধ করা হয়েছে। তবে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের অভ্যন্তরীণ অন্যান্য জায়গায় পণ্যবাহী নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের মোংলা শাখার মো. ফিরোজ আলম মাস্টার জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশ-ভারত অভ্যন্তরীণ আন্তর্জাতিক রুট দিয়ে লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য দু’ দেশে বোঝাই বা খালাসে যাওয়া প্রায় ৪ শতাধিক লাইটার জাহাজ উভয় স্থানে আটকা পড়ে রয়েছে। দেশের মধ্যে মোংলা বন্দর ও আংটিহারায় প্রায় দু’শতাধিক লাইটার জাহাজ ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে ভারতের অংশে প্রায় দু’শতাধিক লাইটার জাহাজ বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ভারতে অবস্থানরত লাইটার জাহাজের স্টাফরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন। তাদের নৌযানে থাকা খাবার ও পানি ফুরিয়ে গেছে। ভারত সরকার লকডাউন করে দেওয়ায় স্টাফরা নৌকায় লোকালয়ে যাতায়াত করতে পারছে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নিতে পারছে না। 

বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের মোংলা শাখার সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন মিন্টু জানান, মোংলা বন্দরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল থেকে যখন লাইটার শ্রমিকরা পণ্য বোঝাই বা খালাসে যায় তখন নৌযান স্টাফদের করোনাভাইরাস রোধে প্রয়োজনীয় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, মোংলা বন্দরে আগত সামুদ্রিক জাহাজগুলোর নাবিকরা অধিকাংশই বিদেশি। এসব জাহাজগুলো মূলত বিদেশ থেকেই পণ্য খালাসে মোংলা বন্দরে আসে। বিদেশি জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে দেশীয় নৌযান স্টাফদের পণ্য লোড-আনলোডের সময় বিভিন্ন ইস্যুতে মেলামেশা করতে হচ্ছে। এতে করে নৌযান স্টাফদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে। 

লাইটার জাহাজ শ্রমিক মো. হেলাল শিকদার বলেন, এ অবস্থায় দু’দেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক প্রটোকল রুটে পণ্য পরিবহনের নৌযানের নাবিকদের কষ্ট বেড়েই চলছে। বিশেষ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় রসদ সামগ্রী নৌযানে পৌঁছানোর দাবি জানান তিনি।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা