• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বেশিরভাগ নলকূপে উঠছে না পানি, দুর্ভোগ চরমে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১২ মে ২০১৯  

ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নরসিংদীর বেশিরভাগ নলকূপ দিয়ে পানি ওঠানো যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও গভীর নলকূপেও তোলা যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় পানি। তীব্র দাবদাহে এ অবস্থা আরও প্রকট হওয়ায়, দেখা দিয়েছে পানি সংকট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। পরিবেশগত নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, নরসিংদীতে সাধারণত পানির স্তর গড়ে ২২ থেকে ৬৫ ফুট গভীরে। বেশিরভাগ এলাকায় এ স্তরে পৌঁছালেই পানি পাওয়ার কথা। কিন্তু গত ১০-১২ বছর ধরে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে নীচে নেমে গেছে পানির স্তর। প্রতি বছর তীব্র দাবদাহে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এ অবস্থা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার বেশিরভাগ এলাকার অগভীর (৬১ মিটার পর্যন্ত) নলকূপে পানি ওঠা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে নরসিংদী শহর, মাধবদী শিল্পাঞ্চল, পলাশ উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় পানি সংকট চরমে পৌঁছেছে। সুপেয় পানির সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

শুধু অগভীর (৬১ মিটার পর্যন্ত) নলকূপেই নয়, কোনও কোনও এলাকায় পানি উঠে না গভীর (৬১ মিটারের অধিক) নলকূপেও। দেড়শ থেকে দুইশ ফুট গভীরেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে এসব এলাকার মানুষ প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করছেন পুকুর কিংবা ডোবা- নালার পানি। নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা না গেলে, অদূর ভবিষ্যতে পানি সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

নরসিংদীর পাঁচদোনা এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, ‘গ্রীষ্মে কোনও অগভীর নলকূপে পানি উঠে না। অন্য এলাকা থেকে খাবার পানি আনতে হয়। ব্যয়বহুল হওয়ায় সব মানুষের পক্ষে গভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভব হয় না। আমরা বেশ দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’

সদর উপজেলার দগরিয়া এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘টিউবওয়েল তো দূরের কথা, এখন বিদ্যুৎচালিত পানির পাম্পেও পানি পাওয়া কষ্টকর। বাধ্য হয়ে ১৮০-২২০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপন করতে হচ্ছে। যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।’

নরসিংদী শহরের বিলাসদী ব্যাংক কলোনি মহল্লার শাহিন মিয়া বলেন, ‘কয়েকদিন আগে থেকে পাম্পের সাহায্যেও পানি উঠানো যাচ্ছে না। পানির স্তর এতটাই নীচে নেমে গেছে যে, গভীর নলকূপ ছাড়া পানি পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এ ধরনের নলকূপ স্থাপন করতে প্রায় লাখ টাকার প্রয়োজন।’

যোগাযোগ করা হলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী বশির আহমেদ বলেন, ‘নরসিংদী শিল্প ও কৃষি সমৃদ্ধ একটি জেলা। শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত উত্তোলনের প্রয়োজন পড়ে। ফলে পানির স্তর দিনদিন আশঙ্কাজনকভাবে নীচে নেমে যাচ্ছে। আগামী ১০ বছরে এ অবস্থা আরও প্রকট হতে পারে। তবে নদী খনন এবং ভূ-উপরস্থ পানির দূষণরোধ ও ব্যবহার বাড়ানো হলে, এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতে পারে। এছাড়া বৃষ্টিপাত হলে এ অবস্থা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।’

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা