• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে কিন্ডার গার্টেন

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

বাগেরহাটের চিতলমারীতে নীতিমালা উপেক্ষা করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে কিন্ডার গার্টেন। এ উপজেলায় প্রতি বছর এর সংখ্যা বাড়ছে। চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী এখানে ৩৫ টি কিন্ডার গার্টেনের কথা বলা হলে এর সংখ্যা ৫০ টির অধিক। আর এসব কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষকদের শিক্ষার মান নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। তারা কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে করছে নানা বানিজ্য।

শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের মতে এসব রেজিস্ট্রেশন বিহীন কিন্ডার গার্টেনে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উপকারের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে বেশি। অতিরিক্ত বইয়ের চাপে ন্যুয়ে পড়ছে তাদের মেরুদন্ড। লেখা পড়ায় জমছে ভীতি।

চিতলমারী শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১১১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তারপরও এখানে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত মোট কিন্ডার গার্টেনের সংখ্যা ৩৫টি। এদের কেউ-ই নিবন্ধন পায়নি। এ বছর আরও বেশ কয়েকটি কিন্ডার গার্টেন চালু হয়েছে। এর বেশীর ভাগই চিতলমারী উপজেলা সদরে অবস্থিত। তবে বেসরকারি হিসেবে এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক কিন্ডার গার্টেন রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সারা দেশের কিন্ডার গার্টেনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেন। নীতিমালায় বর্ণিত বিভিন্ন ক্যাটাগরি পূর্ণ করে নিবন্ধন নিতে বলা হয় এসব কিন্ডারগার্টেনকে। নীতিমালায় কিন্ডার গার্টেন গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাস, স্থায়ী অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ, জাতীয় দিবস পালনসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এখানের চলমান কিন্ডার গার্টেনের ৯০ শতাংশেরই নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। রুম ভাড়া নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

এদের বেশির ভাগেই নেই অভিজ্ঞ কোন শিক্ষক। মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে এসব কিন্ডার গার্টেন। এখানে প্লে গ্রুপ থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। ক্লাস শেষে এসব কিন্ডার গাটের্নের বেশির ভাগই বিকেলে কোচিং সেন্টারের রূপ নেয়।

অভিভাবকরা বলেন, বছরের শুরুতেই শুরু হয় শিশুদের নিয়ে টানাটানি। প্রাথমিক শিক্ষায় বয়স নির্ধারণ করা হলেও কিন্ডার গার্টেনের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। প্রতিযোগিতা মূলকভাবে তাদের কাধে চেপে দেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ওই সকল বাণিজ্যিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না এবং মানছেন না কোনো সরকারি বিধিবিধান। চিতলমারীর যত্রতত্র চোখে পড়ে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে চটকদার সাইবোর্ড ও ব্যানার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, বই ব্যবসার সাথেও এই কিন্ডার গার্টেন গুলোর রয়েছে এক বিশাল মারপ্যাচ। যা অভিভাবকদের রক্তচুষে খাওয়ার মত।

এ ব্যাপারে শ্যামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ সাফায়েত হোসেন বলেন, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে গড়ে ওঠা কিন্ডার গার্টেন গুলোয় কচি শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক ও শাররিক নির্যাতন চালায় ওই সকল মানহীন শিক্ষকেরা। তারা তাদের দায়ভার চাপানোর জন্য নোট-গাইড ও অতিরিক্ত বইয়ে ভার চাপিয়ে দেয় শিক্ষার্থীদের উপর।

তবে চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় নিবন্ধনের জন্য আবেদিত কিন্ডার গার্টেনের সংখ্যা ৩৫ টি। তার জানা মতে এর কোনটিই নিবন্ধন পায়নি। এবছর আরও বেশ কয়েকটি কিন্ডার গার্টেন হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা