• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

রামপালে ৮৩ খাল খননে চ্যালেঞ্জের মুখে পাউবো

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

৮৩টি খাল ও নদী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খনন করতে গিয়ে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এসব মোকাবেলা করে সম্ভব না হলে আবারও মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ প্রটোকল চ্যানেলটি হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অগ্রাধীকার এ মেগা প্রকল্পটি ৭ শত ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। যা গত ২০১৮ সালের জুনে শুরু হয়েছে এবং ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ হবে।

আর কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে নানাবিধ সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।

বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জানা গেছে, দীর্ঘসময় খাল ও নদীগুলো সংস্কার না করা, অধিক হারে পলি জমে ভরাট হওয়া, খাল ও নদীতে অপরিকল্পিতভাবে শত শত ছোট ব্রীজ, কালভার্ট, কাঁচা-পাকা রাস্তা নির্মান করা, মাটি রাখার জায়গার অভাব, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নির্মাণ করা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নদী-খালের সাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করা, ভরাট হয়ে যাওয়া খাল ও নদীগুলোতে প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় ব্যক্তি মালিকানা জমি রেকর্ড করা, ভূমিহীনদের জন্য খাস জমি বন্দবাস্ত প্রদান ও আবাসন প্রকল্প নির্মান করা, খননের সময় মামলা-হামলা ও ভয়ভীতি প্রদান করে খননে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাসহ নানান চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

এসব কারণে খনন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, ৮৩ টি খাল ও নদীর মোট ৩ শত ১০ কিলোমিটার খনন করে ১৪৭.৫ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি নদীর ৫৭.৫৮৩ কিলোমিটার ও ৭৮ টি খালের ২৫৫.৪১৭ কিলোমিটার খনন করা হবে।

গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী খনন কার্যক্রম শুরু করে। তাদের কার্যক্রম সন্তোষজনক না হওয়ায় পরবর্তীতে ৮৩ টি নদী ও খালের মধ্য থেকে ৪৬ টি তাদের অনুকূলে রেখে বাকি ৩৭টি অন্যান্য ঠিকাদারদের মাধ্যমে খনন কার্যক্রম শুরু করা হয়।

ইতিমধ্যে ২৯ টি খালের প্রায় ৮০ কিলোমিটার খনন করে ৩০ লক্ষ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করে খালগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪ টি নদী ও ২৫ টি খাল খনন চলমান রয়েছে।

চলমান ওই সব খাল থেকে আরও প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফরের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।

গত ২০ মাসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো এক তৃতীয়াংশের বেশি মাটি খনন করেছে। বাকি প্রায় ১ কোটি ঘনমিটার মাটি মাত্র ১৭ মাসে উত্তোলন করতে হবে। এটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট কুদরত-ই বলেন, মংলা বন্দর সচল, সুন্দরবন রক্ষা, এই এলাকার পরিবেশ-প্রতিবেশ সুরক্ষা এবং মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌ পথে যান চলাচলের জন্য নাব্যতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এটা করতে হলে চ্যানেল সন্নিহিত নদী ও খাল খনন করে দ্রুত খুলে দিতে হবে। খনন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হলে এ মেগা প্রকল্পের কোনো সুফল মিলবে না। পরিপূর্ণভাবে এর সুফল পেতে হলে শাখা নদী ও শাখা খালের পাশাপাশি জোয়ার ভাটার প্লাবন ভূমি তৈরি করতে হবে। তা না হলে খালগুলি আবার ভরাট হয়ে যাবে।

কাজের গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় জনগনকে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, খাল খননের শুরুতেই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। আমরা দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করছি। আশাকরি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক এ মেগা প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন বলেন, আমরা যথা সময়ের মধ্যে খাল ও নদীগুলি উন্মুক্ত করে এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যক্রমের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারী করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কাজে যাতে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় এজন্য জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে খনন কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা