• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

সাবেক শিবির নেতা ইশরাককে নিয়ে বিএনপির বিভক্তি চরমে

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

সিটি নির্বাচনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনকে নিয়ে দলটির বিভক্তি কাটছেই না। বরং নির্বাচনকে সামনে রেখে মহানগর বিএনপির এই দ্বন্দ্ব যেন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় শুরু থেকেই বিতর্ক ছিলো বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনকে নিয়ে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, দলের মধ্যে তাকে নিয়ে বিভক্তিও ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। রাজনৈতিকভাবে অপরিপক্ব এবং বয়স কম হওয়ায় সিনিয়র নেতারা ইশরাকের মনোনয়নের পক্ষে ছিলেন না।

সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণাগুলোতে দেখা গেছে, বিএনপির নেতা ও কর্মীদের মধ্যে নানা বিরোধ এবং গ্রুপিং। গত ১২ জানুয়ারি প্রচারণার সময় ঢাকা জজ কোর্টের সামনে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে যুবদলের দুটি গ্রুপ। জানা যায়, হাতাহাতিতে লিপ্ত দুটি পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষ ইশরাকের বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার অনুসারী; অপরক্ষটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের অনুসারী।

ঢাকা মহানগর বিএনপিতে খোকা ও আব্বাস গ্রুপের দ্বন্দ্ব একদম শুরু থেকেই। অতীতেও মেয়র নির্বাচন নিয়ে এই দুই পক্ষ সংঘাতে জড়িয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা আজও চলে আসছে। মির্জা আব্বাস গ্রুপটির ধারণা ছিলো, আব্বাসকে না হলেও তার স্ত্রী জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসকে বিএনপি থেকে মেয়রপ্রার্থী করা হবে। তবে শেষপর্যন্ত লন্ডনে তারেক রহমানকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে সক্ষম হন ইশরাক। এতে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ থাকলেও জনসমর্থন হারানো বিএনপি শুরুর দিকে চুপই ছিল।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশীদ জানান, ইশরাক হোসেন দেশের রাজনীতিতে অভ্যস্ত নয়। তিনি ছিলেন দেশের বাইরে। কেবল বাবার পরিচয়ে এভাবে হুট করে সিটি নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয়া ঠিক হয়নি। ছাত্রজীবনে শিবির করায় তাকে নিয়ে আগে থেকেই দলের মধ্যে বিভক্তি ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মির্জা আব্বাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এই বিএনপি বলেন, ‘কর্মীদের সঙ্গে তার (ইশরাক) আচরণও ভালো নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গেও মিশতে পারেন না। এমন অবস্থায় তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নামাও হবে বোকামি। তাই আপাতত কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রমেই অংশ নিচ্ছি না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিতে সাদেক হোসেন খোকার অনুসারী অংশটি জানিয়েছে, মির্জা আব্বাসের অনুসারীরা অনেক জায়গায় ইশরাক হোসেনের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। ধানের শীষের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে তারা বিএনপি প্রার্থীর নামে সংশয় সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ খোকার অনুসারীদের।

এ ব্যাপারে মির্জা আব্বাস গ্রুপের নেতা ও শাহজাহানপুরের ফজলে রুবাইয়াত (পাপ্পু) জানান, সম্প্রতি তারেকের হুমকি-ধামকিতে ইশরাকের প্রচারণায় যান আফরোজা আব্বাস। সেখানে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ইশরাক। এর ক্ষোভে আব্বাস গ্রুপের কর্মীরা এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন।

এর আগে ইশরাক জুরাইনে তার বাবা সদ্যপ্রয়াত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার কবর জিয়ারত করার পর একটি পথসভাতে অংশগ্রহণ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও সেই পথসভাতে অংশ নেন। পথসভা আয়োজনে তীব্র বিশৃঙ্খলা দেখে ইশরাকের সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাকে ধমকও দেন আব্বাস।

বিষয়টি জানার জন্য মির্জা আব্বাসকে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা