• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনের নতুন রেকর্ড

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯  

উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী ইকলোজিক্যাল জোন ‘করতোয়া ভ্যালি’ চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়েছে। গত বছর করতোয়া ভ্যালিতে প্রায় ৮৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২০৪ কোটি টাকা। এটি আগের বছরের উৎপাদনের চেয়ে প্রায় ৫৬ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ চা বোর্ডের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, আবাদের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে, এ বছর উৎপাদনের পরিমাণ আরো বাড়বে। ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০০ সালে পঞ্চগড় জেলার সমতলভূমিতে এই চা উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সীমান্তের ওপারে ভারতের জলপাইগুড়িতে চায়ের ভালো উৎপাদন হয় বিধায় ঠিক এপারেও চায়ের ফলন ভালো হবে, এমন সম্ভাবনা থেকেই এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। আর লক্ষ ছিলো পঞ্চগড়ের ওই এলাকার কর্মহীন দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন।

পরীক্ষামূলক পর্যায়ে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জিত হলে শুরু হয় বাণিজ্যিক উৎপাদন। পর্যায়ক্রমে আরো চারটি জেলা ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা অন্তর্ভূক্ত হয় এই প্রকল্পে। বর্তমানে ৫ জেলার ৭ হাজার ৬শ’ ৪৫ একর বা ৩ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে চায়ের চাষ হচ্ছে। প্রায় ৫ হাজার ক্ষুদ্র চাষী যুক্ত আছেন চা উৎপাদনের সাথে।

করতোয়া ভ্যালিতে উৎপাদিত চা প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে যুক্ত আছে ১৩টি কোম্পানী। এই চা কোম্পানীগুলো কৃষকদের কাছ থেকে চা-পাতা কিনে প্রক্রিয়াজাত করে চট্টগ্রামে অকশন হাউসে পাঠিয়ে দেয়।
ড. শামীম জানান, বাংলাদেশ চা বোর্ড ২০১৫ সাল থেকে উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র আকারে চা উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে। ২০২০ সালের মধ্যে আশপাশের জেলাগুলোর আরো ৫০০ হেক্টর জমিতে চা চাষ সম্প্রসারণের লক্ষে এই প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা খরচ করা হবে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার সোনাপাতিলা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, তিনি ২০০২ সালে ৫ একর জমিতে চায়ের আবাদ শুরু করেন। এখন তিনি ৫০ একর জমিতে চাষাবাদ করছেন। নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান করতে পেরেছেন।

পঞ্চগড় জেলার ক্ষুদ্র চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি আমিরুল হক খোকন জানান, নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এই অঞ্চলের চা বাগানগুলোতে। ভবিষ্যতে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাপকহারে কর্মসংস্থান বাড়ার সম্ভাবনাও অনেক উজ্জ্বল।

চা বাগানে কাজ করেন এলাকার অনেক নারী। তেতুলিয়ার বুলবুল, সফুরা, মরিয়ম, নার্গিস ও সেলিনার সাথে আলাপ করে জানা গেলো, তারা চা-পাতা তোলার কাজ করেন। প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। এতে করে তাদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা