• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

মাথার চুল পড়ে যায় কেন

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৩  

অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়াটা এক ধরনের জটিল অটোইমিউন রোগ। এতে মাথার বা দেহের চুল গোলাকৃতি হয়ে উঠে যায়। দেখতে মনে হয়, যেন কোনো পোকা চুল খেয়ে নিয়েছে। দেহের ইমিউন সিস্টেম এ ক্ষেত্রে ভুলক্রমে আমাদের হেয়ার ফলিকলকেই শত্রæ বলে চিহ্নিত করে। শ্বেতকণিকার মাধ্যমে তাকে নষ্ট করে দেয়। শ্বেতকণিকা হেয়ার ফলিকলকে আক্রমণ করলে চুল পড়ে যায়। কোনো ব্যথা বা অন্য উপসর্গ না হলেও রোগী হঠাৎ খেয়াল করে, মাথা বা দেহের কোনো জায়গা থেকে কিছুটা চুল উঠে জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেছে। এই ধরনের উপসর্গ দেখে সাধারণত রোগীরা খুবই ভয় পেয়ে যান। ফাঁকা জায়গায় হাত বোলালে অনেক সময় আশপাশের চুল হাতে উঠে আসে। মাথায় বেশি দেখা গেলেও ভুরু, দাড়িও আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের এই রোগ বেশি দেখা যায়। নারী-পুরুষ যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। পরিবারে কোনো সদস্যদের এ রোগ থাকলে অন্যদেরও হওয়ার আশঙ্কা থাকে, কারণটা জিনগত। তবে এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। এতে শরীরের আর কোনো অসুবিধা হয় না। তবে যাদের অন্য কোনো অটোইমিউন রোগ আছে, যেমন থাইরয়েড বা ডায়াবেটিস, তাদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ঘরোয়াভাবে এই রোগ প্রতিকারের কোনো উপায় নেই। তবে চাপ নেয়ার প্রয়োজন নেই। তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে চিকিৎসায় ভালো থাকা সম্ভব। একবার এই রোগ হলে দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হওয়া আশঙ্কা থেকেই যায়। অল্প স্থানে চুল চলে গেলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা সেরে যায়। এ রকম সমস্যা হলে চুল একটু ছোট করে কেটে নিলে সহজেই কেউ বুঝতে পারবে না। তবে অনেকটা জায়গাজুড়ে পড়লে এবং অনেক দিন ধরে এই রোগে ভুগলে আপনাআপনি সহজে সেরে যায় না। এ জন্য দ্রæত চিকিৎসার প্রয়োজন।
চিকিৎসা: ছোট জায়গায় চুল পড়লে ওই জায়গায় স্টেরয়েড ইনজেকশন দেয়া হয়। ছোট ছোট হালকা ইনজেকশন, তিন-চার সপ্তাহ অন্তর কয়েকটি ধাপে পুরো চিকিৎসা করতে হয়। স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খেতে বা মলম লাগাতে দেয়া হতে পারে। অনেকটা জায়গাজুড়ে আক্রান্ত হলে অনেক দিন চিকিৎসা চালাতে হয়, ফলাফল পুরো নাও আসতে পারে। টপিক্যাল সেন্সিটাইজার বলে কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, সেগুলো লাগাতে দেয়া হয়। দেহের অনেক জায়গাজুড়ে বা মাথাজুড়ে হলে অনেক সময় ইমিউনসাপ্রেসিভ ওষুধ যেমন সাইক্লোস্পোরিন বা মেথোট্রিক্সেট খেতে দেয়া হয়। ওষুধ লাগিয়ে আলট্রাভায়োলেট রশ্মি লাগানো বা ফটো কেমোথেরাপি আরেক ধরনের বিকল্প চিকিৎসা। তবে এসব চিকিৎসা অনেক দিন চালাতে হয়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে বলে রোগীকে সাবধানে থাকতে এবং রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি ফল নাও পেতে পারেন। এ ধরনের সমস্যা হলে দ্রæতই চর্মরোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।

ডা. জাহেদ পারভেজ, সহযোগী অধ্যাপক
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা