ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে বাড়তি অর্থ প্রদানের আহ্বান শেখ হাসিনার
ষাট গম্বুজ টাইমস
প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২০
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য বাড়তি অর্থ ও প্রযুক্তির সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জি-২০ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারী থেকে উত্তরণে প্রতিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনানশিয়াল টাইমসে প্রকাশিত শেখ হাসিনার নিবন্ধটি পাঠকদের জন্য অনূদিত আকারে তুলে ধরা হল।
বাংলাদেশের জন্য পানি হল জীবন-মরণ সমস্যা।
আমার দেশ হল বড় বড় নদী, বিস্তৃত উপকূল ও বিপর্যয় মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম মানুষের দেশ। কিন্তু ২০২০ সাল আমাদের অভূতপূর্ব পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মে মাসে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান পথে রেখে গেছে ধংস চিহ্ন এবং তারপর মৌসুমি বৃষ্টি দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে পানিবন্দি করে ফেলে। এই দুর্যোগে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়; ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।
পানি যখন আপনার বাড়িতে ঢুকে পড়ে, আপনার জিনিসপত্র নষ্ট করে, নামার সময় দূষণ আর রোগ ছড়িয়ে যায়, সেই পরিস্থিতি খুব কঠিন। আর তা দ্বিগুণ কঠিন হয়ে পড়ে যখন একই বছরে কোভিড-১৯ এর মত মহামারী দেখা দেয়। স্যানিটেশন ও মহামারী প্রতিরোধে অপরিহার্য পরিষ্কার পানি পাওয়াই কঠিন হয়ে যায়।
ঢাকায় বসে যখন আমি লিখছি, তখন ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মা অববাহিকার পানি নেমে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের শঙ্কার মধ্যেও আমার দেশের জনগণ তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছে।
বন্যা থেকে বাঁচতে আর কী করা যায়, তা আমরা মূল্যায়ন করে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে আমরা আরও প্রস্তুত অবস্থায় থাকতে পারি, সে পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বরাবরের মতোই। কারণ বাংলাদেশে আমাদের সব সময়ই ‘পরের বারের’ কথা ভাবতে হয়; জলবায়ু সঙ্কট বিরাম দেয় না।
যেসব দেশ নিজেদের জলবায়ু সঙ্কট থেকে সুরক্ষিত মনে করে, যেসব ব্যাংকার আর অর্থদাতারা মনে করেন যে তারা বিপদ এড়িয়ে যেতে পারবেন, তাদের আমি সতর্ক করে বলতে চাই: আপনারা তা পারবেন না। কোনো দেশ বা ব্যবসা যে একলা টিকতে পারে না, তা এই কোভিড-১৯ দেখিয়ে দিয়েছে। বৈশ্বিক সঙ্কট আমরা কেবল ঐক্যবদ্ধ চেষ্টার মধ্য দিয়েই মোকাবেলা করতে পারি। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ যে সহজ, তা এর মধ্যেই আমাদের সামনে প্রতিভাত হয়েছে। ২০২০ সাল এমন এক বছরে পরিণত হয়েছে, যখন বিজ্ঞানীদের কথায় কান না দিয়ে আমাদের আর উপায় নেই।
পুরো গ্রহজুড়ে এক জরুরি পরিস্থিতি এখন চলছে; জলবায়ু, স্বাস্থ্য ও প্রকৃতির ত্রিমুখী সঙ্কটের মুখোমুখি আমরা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি বাড়ছে, সঙ্কট আরও বাড়িয়ে তুলছে।
প্রকৃতির রুদ্র মূর্তি বাংলাদেশ শুধু একা দেখছে না। এ বছর আগুনে পুড়েছে অ্যামাজন, অস্ট্রেলিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া ও সাইবেরিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, ক্যারিবীয় অঞ্চল ও এশিয়ার বড় অংশ ঘূর্ণিঝড় ও হারিকেনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে। আগামী বছরের জলবায়ু সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ যুক্তরাজ্যও এবার বন্যার শিকার হয়েছে।
মানুষের কর্মকাণ্ড টেকসই না হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের গতি বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্যা, বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড়, তাপদাহ, ভূমিধস ও খরা এসে আরও বেশি ভয়াবহতা নিয়ে। এসব সঙ্কট খাদ্য নিরাপত্তাকেও ঝুঁকিতে ফেলছে। এসবে দুর্যোগের ক্ষতির মাত্রা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বাড়লে অনেক ছোট ছোট দ্বীপ ও উপকূলীয় দেশ তলিয়ে যাবে। গলে যাওয়া হিমবাহ থেকে বন্যা পর্বতের পাদদেশের দেশগুলোতে বিপর্যয় ডেকে আনবে। কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু শরণার্থীতে পরিণত হবে। এতো বিশাল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষমতা পৃথিবীর নেই।
কার্বন নিঃসরণের প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী জি-২০ দেশগুলো, যখন একদম তলার ১০০টি দেশ মিলে মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ নিঃসরণের জন্য দায়ী। বড় নিঃসরণকারীদের দায়িত্বও বেশি; বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি (প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায়) দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখতে প্রয়োজনীয় প্রশমণের উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে বড় অবদান তাদেরই রাখতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলির জন্য বাড়তি অর্থ ও প্রযুক্তির সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জি-২০ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে চরম আবহাওয়া মোকাবেলা করার সর্বোত্তম প্রস্তুতি যাদের আছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। আমরা দেয়াল গড়ে তুলছি, শ্বাসমূলীয় উদ্ভিদের বনানয়ন করছি এবং সমস্ত সরকারি কাজে দুর্যোগ কাটিয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি জুড়ে দিচ্ছি।
তবে এই লড়াই আমরা একা করতে পারব না। ৬৪টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন চলতি সপ্তাহে এই গ্রহের জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে একটি চুক্তিতে সই করেছে। এসব দেশে প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের বসবাস। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশের প্রতিনিধিত্ব করে এসব দেশ। সেখান থেকে আমাদের যেটা করতে হবে, তা হল অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক পর্যায়ে অভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গীকারে আসা।
পরবর্তী জলবায়ু সম্মেলন, জি-৭ ও জি-২০ সভার আয়োজক হিসেবে যুক্তরাজ্য ও ইতালিকে অবশ্যই এই লক্ষ্য অর্জনে প্রচেষ্টা চালাতে হবে, যার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ব্যাপক বিস্তৃত আর্থিক সহায়তার প্যাকেজও থাকবে।
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সিইও, সিএফওসহ সব স্তরের বিনিয়োগকারীদের এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সাধারণ একটি অবস্থানে আসা খুবই জরুরি, কারণ প্রকৃতি যদি এমনভাবে বদলে যায়, যে আমাদের সুরক্ষা দেয়ার মত অবস্থা আর প্রকৃতির না থাকে, তাহলে ক্ষতিটা হবে আমাদের সবার। বাংলাদেশে যখন কিছু ঘটে, তা লন্ডন ও নিউইয়র্কের শেয়ার বাজারকেও তো প্রভাবিত করে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে বাঁচার সুযোগ কারও নেই। একমাত্র প্রতিকার হলো- সরকারী নীতি ও ব্যবসায়িক চর্চার পদ্ধতিগত পরিবর্তন; কার্বন নিঃসরণ উচ্চ থেকে নিম্ন মাত্রায় যাওয়া এবং গ্রহের ওপর অত্যাচার না করে যত্ন নেয়া।
কোভিড-১৯ এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভিভিড ইকোনিক্সের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর এর প্রভাব হবে মিশ্র। সবুজ পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেয়ায় আমি ইইউকে স্যালুট জানাই। বাংলাদেশেও আমরা সেরকমই পরিকল্পনা করছি এবং আমি আশাবাদী অন্যান্য সরকার এবং ব্যবসায়ী নেতারাও এগিয়ে আসবেন। কর্মসংস্থান অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে। তবে সেই কর্মসংস্থান পরিকল্পনা যেন ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে করা হয়, আগামী দশকগুলোর কথা ভেবে মজবুত ভিত্তি তৈরি করা হয়, সেটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারী ও প্রকৃতির ধ্বংসযজ্ঞ সবার জন্যই হুমকি। এগুলো মোকাবেলায় আমাদের একটি সাধারণ সমাধানের দিকে পৌঁছাতে হবে: গড়তে হবে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও নিরাপদ বিশ্ব।
যেমনটি আমরা বাংলায় বলি, ‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না’। আমাদের এমন কিছু করা উচিত হবে না, যার ফল পাল্টানো যাবে না।
- জনপ্রিয় ডাচ অভিনেতার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ. চলছে তোলপাড়
- বৃষ্টির জন্য মোংলায় ইসতিসকার নামাজ ও মোনাজাত
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, উত্তাল ইসরাইল
- মুক্তির আগেই ইতিহাস গড়ে ১০০০ কোটির ব্যবসা পুষ্পার
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- ইসরায়েল হামলা চালালে এবার বৃহত্তর পাল্টা হামলা হবে: ইরান
- শাওয়ালের ৬ রোজার গুরুত্ব
- ‘ও সাকি সাকি’ গান: এখনো ফিজিওথেরাপি নেন নোরা ফাতেহি
- গরম আরও বাড়তে পারে, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টিপাত বাড়ার আভাস
- সুপারির খোলের পরিবেশবান্ধব প্লেট, বাটি, ট্রে, ফুড বক্স
- শ্রীলঙ্কার রানপাহাড়, বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিততে হবে বাংলাদেশকে
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে
- শরীরের ওপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন, ভাগ্যক্রমে বাঁচল কিশোরী
- ‘আম্মু, তোমাকে ভালোবাসি’, ডেঙ্গুতে মৃত মাকে ছোট্ট আইয়ানের চিঠি
- বিয়ে করছেন কঙ্গনা, পাত্র কে?
- মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
- হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ
- বিগ বস` বিজয়ী এলভিশ গ্রেপ্তার
- মুশতাক দম্পতি টিকটক করলে সমস্যা নেই
- শৈলকুপায় মাটি খুঁড়ে মিলল ১৫ পবিত্র কোরআন শরিফ
- মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দেয় ৭ মার্চের ভাষণ: প্রধানমন্ত্রী
- দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা গ্রহণযোগ্য নয়
- চলতি মাসেই কমছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম
- রমজানে ভোক্তাদের যেন হয়রানি না হয়: প্রধানমন্ত্রী
- ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস অফিস এখন অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির আখড়া
- ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্নীতি, ডেপুটি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি
- আগুনে পুড়লো পরিবারের পাঁচ সদস্য, পড়ে রইলো ভিসা-পাসপোর্ট
- সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশ
- আমাদের পুলিশ আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
- গরম আরও বাড়তে পারে, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টিপাত বাড়ার আভাস
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে
- ‘ও সাকি সাকি’ গান: এখনো ফিজিওথেরাপি নেন নোরা ফাতেহি
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট
- সুপারির খোলের পরিবেশবান্ধব প্লেট, বাটি, ট্রে, ফুড বক্স
- শ্রীলঙ্কার রানপাহাড়, বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিততে হবে বাংলাদেশকে
- ইসরায়েল হামলা চালালে এবার বৃহত্তর পাল্টা হামলা হবে: ইরান
- শাওয়ালের ৬ রোজার গুরুত্ব
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, উত্তাল ইসরাইল
- মুক্তির আগেই ইতিহাস গড়ে ১০০০ কোটির ব্যবসা পুষ্পার
- বৃষ্টির জন্য মোংলায় ইসতিসকার নামাজ ও মোনাজাত
- জনপ্রিয় ডাচ অভিনেতার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ. চলছে তোলপাড়