• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই শতাধিক কর্মী-সমর্থক আহত

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৩০, শরণখোলায় ৭০, মোরেলগঞ্জে ২০, মোংলায় ৫০, রামপালে ১০, চিতলমারী ১০, মোল­াহাটে ৫ এবং ফকিরহাটে অন্তত ১০ জন রয়েছে। এসব ঘটনায় বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা এবং ৩জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বিজয়ী সদস্য প্রার্থী আনিস শেখ এবং পরাজিত প্রার্থী আব্দুল লতিফের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। পরবর্তীতে আহতদের উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুর ইসলাম।

এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিন থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত শরণখোলা উপজেলায় একাধিক সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঁচ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় শরণখোলা থানায় ৪টি মামলা হয়েছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে উপজেলায় কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত শরণখোলা থানায় ৪টি মামলা হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এসময়ের মধ্যে মোংলা উপজেলায় সদস্য প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে  আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মোংলার চিলা ইউনিয়নে ৫ নং ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বার প্রার্থী বেল­াল হোসেনের নেতৃত্বে বর্তমান মেম্বার আবদুল হালিমের সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়। এসময় আহত হন বেশ কয়েকজন। হামলার ঘটনায় চারজনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর ভোটের দিন উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে ও সুন্দরবন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে  সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

এছাড়া রামপাল, মোরেলগঞ্জে, ফকিরহাটে সহিংসতায় অন্তত ৪০ আহতের খবর পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষের উপর হামলা ও হুমকীর অভিযোগে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের (বাদুরতলা) নবনির্বাচিত সদস্য মো. শাহিন আজাদকে আটক করেছে পুলিশ।

২৩ সেপ্টেম্বর মোরেলগঞ্জের বলইবুনিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী জুলফিকার আলী শেখের দুই পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। এসময় হামলায় তার ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন শেখ(৪৮) গুরুত্বর আহত হন। দুইজনকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জুলফিকার আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় প্রতিপক্ষের উপর হামলা ও হুমকীর অভিযোগে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের (বাদুরতলা) নবনির্বাচিত সদস্য মো. শাহিন আজাদকে আটক করা হয়।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুর ইসলাম জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর জুমআর নামাজের আগ মুহুর্তে শেখরা জামে মসজিদের সামনে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে হালকা কথা কাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটির সূত্র ধরে এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশকয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায়  একটি মামলা হয়েছে এবং দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচন পরবর্তী জেলায় যেসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো আমরা খুবই গুরত্বের সাথে দেখেছি। সংঘর্ষের ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পরবর্তীতে আর কোন অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে এ জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা