• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বাগেরহাটে দুই বছরের সন্তানকে নিয়ে দুই দিন অনশনে গৃহবধু

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৩  

কচুয়া উপজেলায় স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদে অধিকার বঞ্চিত এক গৃহবধু সন্তানকে নিয়ে গত দুই দিন ধরে শশুর বাড়িতে অনশনে রয়েছেন। এসময় তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে অনশনকালে ভুক্তভোগীরা এই অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের বারদাড়িয়া গ্রামের নজু কাজী ওরফে নজরুল ইসলামের বাড়িতে অনশনকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে গৃহবধু ছাদিয়া আক্তার জানান, তিনি রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের মেয়ে। নজু কাজীর ছেলে রেজাউল ইসলামের সাথে তার সামাজিকভাবে ২০১৯ সালের জুন মাসে বিয়ে হয়। শশুর বাড়ির নানা নির্যাতনের প্রেক্ষিতে সে স্বামীর সাথে ঢাকায় চলে যায়। ঢাকায় তার স্বামী একটি মাদ্রাসায় কাজ করে এবং অধিকাংশ সময় নিখোঁজ থাকে। ইতোমধ্যে তাদের মেয়ের জন্ম হয়। সম্প্রতি ছাদিয়া লোকমুখে শুনতে পায় তার স্বামী রেজাউল বাড়িতে ফিরে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। তাই সে ঢাকা হতে সোমবার (১৯ জুন) সকালে দুই বছর বয়সী মেয়ে আমেনাকে কোলে নিয়ে শশুর নজু কাজীর বাড়িতে উপস্থিত হয়।
তখন নজু কাজী তাকে জানায়, তার ছেলের (রেজাউল) দ্বিতীয় বিয়ে করে কোথায় থাকে তা সে জানেনা। একথা শুনে ছাদিয়া ওই বাড়িতে না খেয়ে অবস্থান (অনশন) নেয়। তাকে ঘর হতে মেরে বের করে দেয়া হয়। সে শশুরের ঘরের বাইরে উঠোনে অনশনে বসে থাকে। এরপর নজু কাজী তার নিকট অত্মীয় স্থানীয় ধোপাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মকবুল হোসেনের মাধ্যমে স্থানীয় চৌকিদার রিয়াদকে দিয়ে বাড়ি হতে বের করে দেয়ার প্রচেষ্টা করে। কিন্তু ছাদিয়া তার স্বামীর সাথে দেখা না করে এবং বিচার না পেয়ে কোথাও যেতে নারাজ।
ছাদিয়ার শশুর নজু কাজী জানান, তার ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করার আগে প্রথম বউয়ের অনুমতি নিয়েছে কিনা তিনি জানেন না। তবে তিনি শুনেছেন ছাদিয়ার সাথে তার ছেলের তালাক হয়ে গেছে। তার বাড়িতে সোমবার থেকে অবস্থান নিয়ে ছাদিয়া কিছুই খায়নি। এই অবস্থায় তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে চৌকিদারের মাধ্যমে তাকে বাড়ি হতে বের করার চেষ্টা করেন বলে স্বীকার করেন। তবে তারা কোন অত্যাচার করছেন না বলে জানান।
এদিকে ঢাকা হতে শশুর বাড়ি ফিরে ছাদিয়ার অনশন ও নির্যাতনের খবর পেয়ে নজু কাজীর বাড়ি উপস্থিত হন ছাদিয়ার মামা জাকির হোসেন। তিনি জানান, স্বামী হারা হয়ে তার ভাগ্নি বিচারের দাবিতে অবস্থান ও অনশন করতে পারে। তাই বলে তাকে অত্যাচার করতে হবে? রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপরাধের অভিযোগ আছে। তার ভাগ্নি ও ভাগ্নির সন্তানের সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে তিনি এর সঠিক বিচার চান।
ধোপাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মকবুল হোসেন জানান, নজু কাজী তাকে জানায় তার তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধু তাদের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। তাই তিনি চৌকিদারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। চৌকিদার সোমবার দিবাগত রাতে ওই নারীকে তার আত্মীয়ের বাড়ি পৌছে দেয়। মঙ্গলবার সকালে সে আবার নজু কাজীর বাড়িতে অনশনে আছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে কোন পক্ষই তার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনের দিক বিবেচনা করে মিমাংসার চেষ্ঠা করবেন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা