• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত দুবলার চরের শুঁটকিপল্

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৩  

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দুবলার চরের শুঁটকিপল্লি। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মাছ শুকানোর চাতাল, মাচা এবং আড়ায় থাকা কাঁচা ও আংশিক শুকনো মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কুইন্টাল মাছ। এতে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে শুঁটকি উৎপাদনকারী চারটি চরের পাঁচ শতাধিক জেলেঘর, দুই শতাধিক শুঁটকি সংরক্ষণের ঘর ও আলোরকোলের শতাধিক দোকানির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মালামাল মিলিয়ে আরও ক্ষতি হয়েছে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। এই ঝড়ে যে পরিমাণ শুঁটকি নষ্ট হয়েছে তাতে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শুঁটকিপল্লির সিও এবং ক্ষতিগ্রস্ত শুঁটকি ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।মাঝের কিল্লার সবচেয়ে বড় শুঁটকি ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের জাহিদ হোসেন বহদ্দার জানান, এবার সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছিল। কিন্তু তাদের কপাল খারাপ। মুহূর্তের মধ্যে ঝড়ে তাদের সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে গেছে। মাচা, চাতাল ও আড়ায় শুকাতে দেওয়া সব মাছ ভেসে গেছে। তার প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আলোরকোলের ব্যবসায়ী রামপালের আ. রাজ্জাক ও আবু তাহের জানান, তাদের একেকজনের প্রায় কোটি টাকার কাঁচা মাছ ও শুঁটকি নষ্ট হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে দুর্যোগে পড়ে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

আলোরকোল শুঁটকিপল্লি থেকে বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ মজুমদার ফোনে জানান, ঝড়ে মাচা ও আড়ায় থাকা সমস্ত মাছ কাগজের মতো উড়িয়ে নিয়ে গেছে। পুরো শুঁটকিপল্লি যেনো ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে মালামাল কুড়িয়ে নতুন করে ঘর, মাচা, চাতাল ও আড়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। পাহাড় সমান ক্ষতির বোঝা মাথায় নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।

দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শুঁটকিপল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিও) মো. খলিলুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘শনিবার সকালে শুঁটকি উৎপাদনকারী মাঝের কিল্লা, আলোরকোল, নারকেলবাড়িয়া, শেলারচরসহ চারটি চর পরিদর্শন করেছি। সব চরেই ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি মাচা, চাতাল ও আড়ায় থাকা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কুইন্টাল মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ঢেকে রাখা আংশিক শুকনো মাছে পানি লেগে পোকায় ধরেছে। এগুলো দিয়ে আর শুঁটকি হবে না।’

সিও (চার্জিং অফিসার) আরও বলেন, ‘ঝড়ের আগে সমুদ্র থেকে ধরে আনা বহু তাজা মাছ সাগরে ফেলে দিয়েছেন জেলেরা। তার সঠিক হিসাব নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে মৌসুমের প্রথম ঝড়ে মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে শুঁটকিপল্লিতে। কাঁচা মাছ, শুঁটকি ও অন্যান্য মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকার। নষ্ট হওয়া মাছ থেকে যে পরিমাণ শুঁটকি পাওয়া যেত তাতে আমাদের (সরকারের) রাজস্ব হতো ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাগরে এবার প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। সামনে বড় ধরনের কোনও দুর্যোগ না হলে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন মহাজনরা।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা