• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

কয়েকটি নিয়মেই সারবে যন্ত্রণাদায়ক একজিমা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০২০  

মারাত্মক এক ব্যাধি হলো একজিমা। অনেকের মতে, এই রোগটি নাকি একেবারে নির্মূল করা যায় না। তবে এখন আর এই রোগের নিরাময় অসম্ভব নয়। শুধু মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। 

চর্মরোগ হিসেবে পরিচিত এই রোগটি হলে ত্বকে জ্বালা, ফেটে যাওয়াসহ চুলকানি হতে পারে। আক্রান্ত স্থান এসময় শুকিয়ে খসখসে হয়ে যায় ,কখনো আবার ফোসকা বা ঘা তৈরিও হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় এরই নাম অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস।

কেন হয় একজিমা?

এখনো পর্যন্ত চিকিৎসকরা এই সমস্যার নির্দিষ্ট কারণ জানতে পারেননি। তবে অনেক চিকিৎসক মনে করেন জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের সমন্বয়েই এই অসুখ হয়। বাবা-মায়ের একজিমা থাকলে সন্তানেরও হতে পারে। পরিবেশগত বা বাহ্যিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

> সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, ডিসইনফেকট্যান্ট, ফলের রস, মাংস, আনাজপাতি থেকে প্রদাহজনিত সমস্যা।

> ধুলা, পোকামাকড়, পোষ্য, ফুলের রেণু থেকে অ্যালঅর্জি হওয়া।

> বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের জীবাণুর মাধ্যমে।

> অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, বেশি আর্দ্রতা বা আর্দ্রতার অভাব, বেশি ঘাম হওয়ার কারণেও একজিমা হতে পারে।

> দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদামজাতীয় তেলবীজ, সয়াবিন, আটা-ময়দার খাবার খেলেও হয়।

> উদ্বেগ বা মানসিক চাপ থেকে একজিমা হয় না, তবে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রদাহ আরো বাড়িয়ে তোলে।

> গর্ভাবস্থা বা পিরিয়ড চলাকালীন হরমোনের মাত্রা ওঠানামাতেও নারীদের একজিমার লক্ষণ বাড়তে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল একজিমা কাউন্সিলের সদস্য ভারতের বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্দীপন ধর জানান, ৯০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সের আগে এবং ১০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সের পরে এই রোগের লক্ষণ শুরু হয়। অন্যদিকে ৬০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে দুই বছরের কম বয়স থেকে, ৮০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের নিচের শিশুরা একজিমায় আক্রান্ত হতে পারে।  বড়দের ক্ষেত্রে এমন হওয়াকে বলা হয় অ্যাডাল্ট অনসেট একজিমা। প্রধানত এটি একটি পেডিয়াট্রিক ডিজিজ।

একজিমায় ছোটদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় সেগুলো হলো- মাথার স্ক্যাল্পে বা গালে র‌্যাশ। তার থেকে ছোট ছোট জলফোস্কা, হাঁটু, কনুই, ঘাড়, গলা, নিতম্বে র‌্যাশ, প্রচণ্ড চুলকানি থেকে চামড়া খসখসে এবং পুরু হয়ে যাওয়া ইত্যাদি হতে পারে। আবার অতিরিক্ত চুলকানির ফলে বাচ্চার ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। 

বড়দের ক্ষেত্রে র‌্যাশের প্যাচগুলো ছোটদের তুলনায় অনেক বেশি শুষ্ক, খসখসে হয়। সারা শরীরের যেকোনো এক বা একাধিক জায়গায় প্যাচ তৈরি হতে পারে। স্থায়ী চুলকানি এবং সেখান থেকে ত্বকে সংক্রমণ বা ঘায়ের সৃষ্টি। মনে রাখবেন, একজিমায় চুলকানি হবেই। তবে চুলকালে বা ঘষলে ক্রমশ তা বাড়ে।

একজিমার সুস্থ থাকার জন্য

একজিমার সমস্যা কমাতে রোজকার জীবনে অবশ্যই মেনে চলা দরকার কিছু নিয়ম। এগুলো মেনে চললে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ত্বকের অনেক সমস্যাই আর কষ্ট দেয়ার জায়গায় পৌঁছতে পারে না-

> সবসময় হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। গোসলের পর শরীরে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

> নরম সুতির জামাকাপড় ব্যবহার করুন। পোশাক নিয়মিত পরিষ্কার রাখাও জরুরি। এড়িয়ে চলতে হবে খসখসে, অমসৃণ ধরনের টাইট ফিটিং পোশাক।

> খেয়াল রাখতে হবে সাবান যেন মৃদু প্রকৃতির হয়। তীব্র ক্ষারযুক্ত সাবান ত্বকের সব পানি টেনে নিয়ে খসখসে করে তোলে।

> সবসময়ে হাতের নখ যেন ছোট করে কাটা থাকে। একজিমার চুলকানি বেশিরভাগ সময়েই নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয়। হাতে নখ ছোট করে কাটা থাকলে সংক্রমণের ভয় কমবে।

> নারকেল তেল, অ্যালোভেরা জেল অথবা আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারেও উপকার পাবেন। এগুলো সারা ত্বকে, বিশেষ করে আক্রান্ত স্থানগুলোয় অবশ্যই ব্যবহার করা যেতে পারে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা