নারী দিবস কীভাবে এলো?
ষাট গম্বুজ টাইমস
প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২০
দিনটি ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। ঘটনাস্থল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর। রাস্তায় নেমে এলেন সুঁচ কারখানার একদল নারী শ্রমিক। শ্রমিকদের নানা সুযোগ-সুবিধা আর অধিকার নিয়ে তাদের এ প্রতিবাদ।
নাজমুল শামীম লিখিত ‘মানবাধিকার ও নারী অধিকার’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, সুঁচ কারখানার নারী শ্রমিকরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টায় আনা, কাজের অমানবিকতা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ কয়েকটি দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিবাদে অধিকাংশ সময়েই যেটা দেখা যায়, এক্ষেত্রেও তাই হলো। সেই মিছিলে চলল সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। আন্দোলন করার অপরাধে গ্রেপ্তার হন বহু নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একইদিনে গঠন করা হয় পৃথিবীর প্রথম শ্রমিক ইউনিয়ন ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’।
অপরদিকে শ্রমিক দিবসের ইতিহাস থেকে জানা যায়, শ্রমিক দিবসের শুরুটা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ১ মে। সেখানেও শ্রমিকেরা ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। সেদিকটি বিবেচনায় বলা যায় শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে প্রথম সরব প্রতিবাদ করেছিলেন নারী। তাও আবার পুরুষদের প্রায় ২৯ বছর আগে।
এই দুই আন্দোলনের ফলে ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের একটি সম্মেলন। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ১ দিন ছুটির বিধি রেখে তৈরি হলো প্রথম শ্রম আইন।
জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ও রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিন (১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আয়োজিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ৮ মার্চ দিনটাকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন তিনি)
ফারজানা আফরিন লিখিত ‘নারী : অধিকার ও সংগ্রাম’ গ্রন্থ থেকে নারী দিবসের ইতিহাসে জানা যায়, ১৯০৮ সালে নিউ ইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্রাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। সেসময় ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিক, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহাগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হতে লাগল। এরপর ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ নারী দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় রাষ্ট্রসংঘ। তারপর থেকেই পৃথিবীজুড়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।
নারী দিবসের ভাবনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মিনহাজ রহমান বলেন, নারী যদি রাষ্ট্র, সমাজসহ পরিবারে পিছিয়ে থাকে তাহলে গোটা সমাজ ব্যবস্থার ওপরই তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নারীকে সম-অধিকার সম্পন্ন মানুষ হিসেবে বিবেচনা না করার প্রবণতা সমাজ ও দেশকে পেছন দিকেই টেনে নেয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানোই সভ্যতা ও সংস্কৃতির দায়। এই দায় রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজেরও। এই নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যে দিন জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সবক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা প্রদানের দিন। এ দিনে বিশ্বের নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করেন এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করেন। যাতে করে আগামী দিনগুলো তাদের জন্য আরো বেশি গৌরবময় হয়ে ওঠে।
বিশ্বে এখন নারী দিবস পালন করা হচ্ছে, এতে নারীরা কী ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিউলী আক্তারের ভাষ্য, বিশ্বে নারী দিবস মহা ধুমধামের সাথে উদযাপিত হয় কিন্তু তারপরও বাল্যবিয়ে, যৌতুকসহ নানাবিধ কারণে এখনও অনেক নারী নির্যাতিত হন। কখনও কখনও দিতে হয় জীবন। ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে এবং গ্রাম্য সালিশদারদের হিংস্র থাবায় এখনও ক্ষতবিক্ষত হন নারী। নিরাপদে চলাফেরা করাও অনেক সময় দুষ্কর হয়ে ওঠে। এই অবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কর্মক্ষেত্রেও নারীর বৈষম্য সেভাবে কমেনি। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকারও নারী- এমন অভিযোগ ওঠে প্রায়ই।
নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে আন্তর্জাতিক নারী বর্ষ হিসেবে পালন করে এবং এছাড়া ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। নারী বর্ষের অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৯ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত নারীদের মর্যাদায় ম্যাক্সিকোতে প্রথম বিশ্ব সম্মেলন আহবান করা হয়েছিল
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকদের বেশিরভাগই নারী। আর কৃষিক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ অতীত থেকেই রয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও নারী অর্থনৈতিক বঞ্চনার শিকার। নারীরা এসব থেকে মুক্তি লাভ করলেই কেবল নারী দিবসের সার্থকতা অর্জিত হবে।
কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফরিদা আক্তার খানম বলেন, কর্মক্ষেত্রে, গৃহে কোথাও আজও নারী সমঅধিকার পায় না। আজও অনেক পরিবারে মেয়ে সন্তানকে বোঝা মনে করা হয়। বাল্যবিবাহ প্রচলিত আছে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের আরো অনেক দেশে। নারীশিক্ষা এখনও সর্বজন স্বীকৃত ব্যবস্থা নয়। উচ্চ শিক্ষিতা নারীর বিয়ে, ক্যারিয়ার নিয়ে চলে নানা কটু কথা। চাকরিক্ষেত্রে নানা বৈষম্যের সাথে যোগ হয় যৌন হয়রানি। অভিযোগের সুরাহা হয় না, বরং নারীকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এজন্য নারীর প্রতি সম্মান দেখানো হলেই কেবল নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। দিবসটি নারীকে সচেতন করে তোলার কাজটি সুচারুভাবে করছে। নারীকে বাদ দিয়ে একটি সুষম সমাজের কথা চিন্তা করা যায় না। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমঅধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সমাজই হচ্ছে একটি আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা।
মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার নারী উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু নারীকে সম্পত্তিতে ন্যায্য অধিকার দেয়ার বিষয়টি এখনও মীমাংসিত নয়। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। নারী সমাজের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে কোনো অবস্থায়ই একটি সুষম সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সময় এসেছে সব অন্যায়-অবিচার দূর করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার। বর্তমান সরকার একটি পরিপূর্ণ নারীবান্ধব সরকার।
১৯৭৭ সাল থেকে বাংলাদেশে নারী দিবস পালন করা হয়। উল্লেখ্য, বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। চীন, মেসিডোনিয়া, মাদাগাস্কার, নেপালে শুধুমাত্র নারীরাই এই দিন সরকারি ছুটি উপভোগ করেন।
- জনপ্রিয় ডাচ অভিনেতার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ. চলছে তোলপাড়
- বৃষ্টির জন্য মোংলায় ইসতিসকার নামাজ ও মোনাজাত
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, উত্তাল ইসরাইল
- মুক্তির আগেই ইতিহাস গড়ে ১০০০ কোটির ব্যবসা পুষ্পার
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- ইসরায়েল হামলা চালালে এবার বৃহত্তর পাল্টা হামলা হবে: ইরান
- শাওয়ালের ৬ রোজার গুরুত্ব
- ‘ও সাকি সাকি’ গান: এখনো ফিজিওথেরাপি নেন নোরা ফাতেহি
- গরম আরও বাড়তে পারে, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টিপাত বাড়ার আভাস
- সুপারির খোলের পরিবেশবান্ধব প্লেট, বাটি, ট্রে, ফুড বক্স
- শ্রীলঙ্কার রানপাহাড়, বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিততে হবে বাংলাদেশকে
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে
- শরীরের ওপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন, ভাগ্যক্রমে বাঁচল কিশোরী
- ‘আম্মু, তোমাকে ভালোবাসি’, ডেঙ্গুতে মৃত মাকে ছোট্ট আইয়ানের চিঠি
- বিয়ে করছেন কঙ্গনা, পাত্র কে?
- মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
- হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ
- বিগ বস` বিজয়ী এলভিশ গ্রেপ্তার
- মুশতাক দম্পতি টিকটক করলে সমস্যা নেই
- শৈলকুপায় মাটি খুঁড়ে মিলল ১৫ পবিত্র কোরআন শরিফ
- মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দেয় ৭ মার্চের ভাষণ: প্রধানমন্ত্রী
- দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা গ্রহণযোগ্য নয়
- চলতি মাসেই কমছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম
- রমজানে ভোক্তাদের যেন হয়রানি না হয়: প্রধানমন্ত্রী
- ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস অফিস এখন অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির আখড়া
- ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্নীতি, ডেপুটি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি
- আগুনে পুড়লো পরিবারের পাঁচ সদস্য, পড়ে রইলো ভিসা-পাসপোর্ট
- সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশ
- আমাদের পুলিশ আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
- গরম আরও বাড়তে পারে, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টিপাত বাড়ার আভাস
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে
- ‘ও সাকি সাকি’ গান: এখনো ফিজিওথেরাপি নেন নোরা ফাতেহি
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট
- সুপারির খোলের পরিবেশবান্ধব প্লেট, বাটি, ট্রে, ফুড বক্স
- শ্রীলঙ্কার রানপাহাড়, বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিততে হবে বাংলাদেশকে
- ইসরায়েল হামলা চালালে এবার বৃহত্তর পাল্টা হামলা হবে: ইরান
- শাওয়ালের ৬ রোজার গুরুত্ব
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, উত্তাল ইসরাইল
- মুক্তির আগেই ইতিহাস গড়ে ১০০০ কোটির ব্যবসা পুষ্পার
- বৃষ্টির জন্য মোংলায় ইসতিসকার নামাজ ও মোনাজাত
- জনপ্রিয় ডাচ অভিনেতার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ. চলছে তোলপাড়