• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে টিকা পেল বাংলাদেশ

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২১  

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের হাতে ২০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন তুলে দেন।

ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেওয়া ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুই দেশের বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে এ টিকা পেল বাংলাদেশ। গতকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এ টিকা হস্তান্তর করেন। টিকা গ্রহণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

রাজধানীর রমনায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এর আগে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় টিকার প্রথম চালান। টিকা হস্তান্তর শেষে সংরক্ষণের জন্য তেজগাঁও ইপিআই স্টোরে নির্ধারিত তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে।

টিকা গ্রহণ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছিল। করোনার        টিকা উপহার দিয়ে ভারত আবার বন্ধুত্বের পরিচয় দিল। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি বলেন, চলতি মাসে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন ভারত থেকে বাংলাদেশে আসবে। তখন মোট ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে।

এ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। সারা দেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরুর সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এ উপহার বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করবে। ভবিষ্যতে দুই দেশের একসঙ্গে পথচলা সুগম হবে। বিশ্বের মধ্যে করোনা সংক্রমিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ২০তম অবস্থানে। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসনীয়। করোনার টিকা আমদানিতে আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী টিকা আমদানি করব। অনেক উন্নত দেশ এখনো টিকা পায়নি। সেখানে আমাদের দেশের জনগণের জন্য টিকা আনা হয়েছে।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পলিসি ‘প্রতিবেশী প্রথম’ অনুযায়ী ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরম বন্ধুর প্রমাণ দিয়েছে ভারত। এ সহযোগিতার মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। উপহারের এ টিকা ছাড়াও সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা কেনার চুক্তি করেছে। সেগুলোও দ্রুতই চলে আসবে। ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, আমাদের বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে এ টিকা বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। ভারতের জনগণকে শনিবার টিকা দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য বৃহস্পতিবার পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশের সরকার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে দেশের মানুষের ইমিউনিটি নিশ্চিত করেছে। মুজিববর্ষে বাংলাদেশের মানুষ সুস্থ, সবল থাকুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’ বিমানবন্দর থেকে দুটি ফ্রিজার ভ্যানে টিকার বাক্স নিয়ে রাখা হয়েছে তেজগাঁওয়ে ইপিআই স্টোরে। সেখান থেকে কিছু টিকা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় নিয়ে উপহার গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইপিআইর প্রোগ্রাম ম্যানেজার গোলাম মাওলা বলেন, ‘এ স্টোরের তাপমাত্রা মাইনাস ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। সে কারণে এ টিকা এখানে রাখা যাবে।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জানুয়ারি বেক্সিমকোর মাধ্যমে কেনা টিকার চালান এলে কর্মসূচি শুরু হবে।

২৭ কিংবা ২৮ জানুয়ারি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০-২৫ জনকে টিকা দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে কর্মসূচি শুরু হতে পারে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন। ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরুর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৪০০-৫০০ জনকে টিকা দিয়ে সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে।

সরকারের কেনা প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ও ভারতের উপহারের ২০ লাখ মিলিয়ে প্রথম মাসে ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। পরের মাসে দেওয়া হবে ৫০ লাখ ডোজ। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ডোজ অনুযায়ী তৃতীয় মাসে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ৬০ লাখ টিকা দেওয়া হবে। টিকাদানে সরকারি হাসপাতালের বাইরে কোনো কেন্দ্র হবে না। টিকাসংক্রান্ত তথ্য প্রচারে সেল করা হয়েছে। নিয়মিত বুলেটিনের মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে। বেসরকারি অনেক হাসপাতাল টিকাদান কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আবেদন করেছে। তাদের ২০টি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে এবং এখনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা