• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

যবিপ্রবিতেও শুরু হতে যাচ্ছে করোনা সনাক্তের কার্যক্রম

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২০  

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে দু’একদিনের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার কাজ। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার (১১ এপ্রিল) এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন। 

করোনাভাইরাস সনাক্তের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি, উচ্চমানের গবেষণাগার ও দক্ষ জনবলের সংকটের বিষয়টি যখন প্রকট হয়ে দেখা দেয়, তখনই যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে ২৪ ঘন্টায় ২০০ রোগীর নমুনা পরীক্ষা সম্ভব বলে সরকারকে জানিয়েছিলেন। 

বেশ কয়েকটি মিডিয়াকেও তিনি বলেছিলেন যে, তার অধীনে যথেষ্ট দক্ষ জনবল আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কেবল ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, নমুনা পরীক্ষার কিট এবং সরকারি অনুমোদন পেলেই তিনি প্রতিদিন অন্তত ২০০টি নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফল দিতে পারবেন। 

যবিপ্রবিকে এই দায়িত্ব দিতে যশোর অঞ্চলের মানুষেরও দাবি ছিল। কারণ এ অঞ্চলের সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য এতদিন ঢাকার আইইডিসিআরের ওপর নির্ভর করতে হতো। সম্প্রতি খুলনাতেও এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু সেটাও বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যবিপ্রবিকে এই দায়িত্ব দেয়ায় যশোর অঞ্চলের মানুষের মনে কিছুটা হলেও কিছুটা স্বস্তি এসেছে। 
কারণ ভারত সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় প্রতিদিনই ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে মানুষ ঢুকছে। তাদের মধ্যে কাউকে করোনা রোগী হিসেবে সন্দেহ করা হলে তাকে হয় ঢাকায় অথবা খুলনা পাঠানো হচ্ছে। এতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, তেমনি সময়ও নষ্ট হচ্ছে। যশোরেই যদি নমুনা পরীক্ষা করা যায়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।  

যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন যে, যেহেতু এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই এই দুঃসময়ে এটিকে জনগণের কাজে লাগাতে তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাবেন। শেষপর্যন্ত সরকার সেই অনুমোদন দেওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘যবিপ্রবি দেশের প্রথম কোন বিশ্ববিদ্যালয়, যারা এই অনুমোদন পেল। এটি যশোরবাসীর জন্য গর্বের’। উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা ক্যাম্পাসে নেই। অনুমোদন পাওয়ায় রবিবারেই সবাই ক্যাম্পাসে ফিরছেন। এরপর ল্যাব পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ আছে। 
দু’একদিনের মধ্যেই এসব কাজ শেষ করে নমুনা পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা করেন। প্রয়োজনীয় কিট কবে নাগাদ পাওয়া যাবে তার ওপরও নমুনা পরীক্ষা শুরুর বিষয়টি নির্ভর করছে। এসব বিষয়ে তার সাথে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে কথা হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য। 

তিনি জানান, যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারে একটি রিয়েল-টাইম পিসিআর আছে যেখানে ৯৬টি নমুনা একযোগে পরীক্ষা করা যায়। আরও দুটি কনভেনশনাল পিসিআর আছে। সবমিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ২০০টি পরীক্ষা করা সম্ভব। যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারটি বায়োসেফটি লেভেল-২ মানের। এখানে জিনোম সিকোয়েন্সের সব ব্যবস্থা আছে। এই জিনোম সেন্টারটি বায়োসেফটি লেভেল-৩ এ উন্নীত করলে এখানে করোনার মতো ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির মতো বিষয় নিয়েও গবেষণা করা সম্ভব হবে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শুধু খুলনায় করোনা সনাক্তের সুযোগ রয়েছে। চলতি মাস থেকে খুলনায় এই কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগ পর্যন্ত এই অনঞ্চলের সন্দেহভাজন করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হতো।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা