• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

৪৬৩ জনের পেছনে বেল!

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২০  

প্রায় সাত বছর আগে প্রত্যাশার ডালি সাজিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি দিয়েছিলেন গ্যারেথ বেল। সামর্থ্যের বিচারে সম্ভাবনার কমতি ছিল না; কিন্তু সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছেন কমই। বড় কারণ, চোট। বারবার হয়েছে ছন্দপতন। টানা ব্যর্থতায় জায়গা হারিয়েছেন একাদশে, হয়ে পড়েছেন ব্রাত্য। সব মিলিয়ে ৩০ বছর বয়সেই ওয়েলস ফরোয়ার্ডের ক্লাব ক্যারিয়ার যেন শেষের পথে।

প্রায় তিন মাসের অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি শেষে মাঠে ফিরেছে লা লিগা। দুদিন আগে এইবার ম্যাচ দিয়ে ফিরেছে রিয়াল। প্রত্যাবর্তনের দিনে করিম বেনজেমা-সের্হিও রামোসদের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। এমনকি লম্বা সময়ের চোট কাটিয়ে ফেরা এদেন আজারও দেখিয়েছেন আশা। কিন্তু বেল ছিলেন সেই পুরনো চেহারায়, ছন্দহীন। যেন দল থেকে বিচ্ছিন্ন এক জন।

তাকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজিয়েছিলেন কোচ জিনেদিন জিদান। সুযোগ দেন ১৯ বছর বয়সী রদ্রিগোকে। পরে এই ব্রাজিলিয়ানকে তুলে নিয়েই মাঠে নামান বেলকে। কিন্তু শেষ ৩০ মিনিটে তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি। বেলের ক্যারিয়ারে গত কয়েক মৌসুমে যা স্বাভাবিক চিত্র।

পরিসংখ্যানেও ফুটে ওঠে তা; লা লিগার ২৮ রাউন্ড শেষে বেলের নামের পাশে গোল মাত্র ২টি। গত সেপ্টেম্বরে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে করেছিলেন গোল দুটি। সেদিন তার পারফরম্যান্সে নতুন করে আশা জেগেছিল; হয়তো নতুন করে নতুন রূপে ফিরলেন বেল।

সেল্তা ভিগো, রিয়াল ভাইয়াদলিদ আর ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে বেলের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ ইতিবাচক। মৌসুমের ওই প্রথম তিন ম্যাচে সামর্থ্যের ঝলক দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে, তা মিলিয়ে যেতেও সময় নেয়নি।

১ সেপ্টেম্বরের ওই ম্যাচের পর আর গোলের দেখা পাননি তিনি। স্বাভাবিকভাবে ছিটকে গেছেন কোচের পরিকল্পনা থেকেও। গণমাধ্যমের খবর, জিদান-বেলের সম্পর্কটাও এখন আর স্বাভাবিক নয়।

ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলোয়াড়দের সঙ্গে তুলনা করলে বেলের ব্যর্থতা আরও বড় হয়ে ওঠে। তবে কয়েক মৌসুম আগেও তিনি ছিলেন আক্রমণভাগের কার্যকর অস্ত্র, গোলদাতা। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতেও ১০০টির বেশি গোল আছে তার।

এর মধ্যে আছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মহামূল্যবান কিছু গোলও। আছে ২০১৪ কোপা দেল রে ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে শেষ দিকের জয়সূচক অসাধারণ গোল এবং ২০১৭-১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে জোড়া গোল।

সেই বেলের চেয়ে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মোট ৪৬৩ জন ফুটবলার চলতি মৌসুমে বেশি গোল করেছেন! বায়ার্ন মিউনিখের ফরোয়ার্ড রবের্ত লেভানদোভস্কি যেমন বেলের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে; বুন্ডেসলিগায় ২৮ ম্যাচে করেছেন ৩০ গোল।

শুধু লা লিগা বিবেচনায় নিলে, দুই গোলের চেয়ে বেশি করেছেন ৮২ জন। রিয়ালে বেলের পাঁচ সতীর্থ নিয়মিত গোল পাচ্ছেন-করিম বেনজেমা, সের্হিও রামোস, টনি ক্রুস, কাসেমিরো ও লুকা মদ্রিচ। তরুণ মিডফিল্ডার ফেদে ভালভেরদে ও ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানেও বেলের সমান দুটি করে গোল করেছেন; যেখানে তাদের কাজও নয় গোল করার।

পুরনো সব রেকর্ড ও সাফল্য, সেই সঙ্গে তার আকাশছোঁয়া বেতন বিবেচনায় রেখে নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায়, ইউরোপে তার সমমানের কোনো ‘তারকার’ অবস্থা এমন নয়।

বেলের যে ফর্ম, তা কোনোভাবেই তার নামের প্রতি সুবিচার করে না। একজন তারকার থেকে রিয়াল মাদ্রিদ যা চায়, তাও নয়। তারপরও তিনি রিয়াল মাদ্রিদ তারকা, নাকি তারকা ছিলেন?

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা