• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

নতুন রূপে আসছে গুলিস্তান পার্ক

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯  

ঢেলে সাজানো হচ্ছে রাজধানীর গুলিস্তান পার্ক। এতে খরচ হচ্ছে আট কোটি টাকা। সংস্কারকাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এলাকাবাসী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্র এ কথা জানিয়েছে।

এ বিষয়ে স্থপতি ও নগরবিশেষজ্ঞ মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যখনই কোনো উদ্যান বা পার্ক দেয়াল দিয়ে ঘেরাও দিয়ে রাখা হয়, ভেতরে নানা রকম অপরাধ দানা বাঁধে। যখনই উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, তখন সবকিছু নজরদারিতে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন পার্কের মতো এই পার্কটিকেও সেভাবে সংস্কার করার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

জানা গেছে, নগর বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে গুলিস্তান পার্কে দেয়াল রাখা হচ্ছে না।

বঙ্গভবনের পশ্চিমে অবস্থিত পার্কটির পুকুর সংস্কার ছাড়াও হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে), বসার জায়গা, শৌচাগার তৈরি হবে। গত রোববার দেখা যায়, পার্কের ভেতরের পুকুরটির চারদিক বাঁধাইয়ের কাজ চলছে। বিভিন্ন দিকে ঘাটলা তৈরি হচ্ছে। আগে যে হাঁটার পথ ছিল, সেগুলো ভেঙে নতুন করে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ইট–বালু ফেলা হয়েছে। ব্যায়ামাগার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ।

জানা গেছে, পার্কের ভেতরে ব্যাংকের বুথ থাকবে। আগে সারা বছর পুকুরে পানি থাকত না। এখন যাতে সারা বছর পুকুরে পানি থাকে, সে ব্যবস্থা করা হবে। লাগানো হবে নতুন গাছ। হাঁটার পথ আগের চেয়ে অনেক চওড়া করা হবে, যাতে অনেকে একসঙ্গে হাঁটতে পারে। দেয়ালবিহীন পার্কের সৌন্দর্য বাইরে থেকেও উপভোগ করা যাবে।

রোববার দেখা যায়, পার্কে ভবঘুরেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়া পুকুরের পাড়ে টানানো দড়িতে ঝুলছে লুঙ্গি, গামছা, নারীদের পোশাক। মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনের হাঁটার পথ ও আঙিনায় চিপসের খালি প্যাকেট ও আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়। পার্কে আছে ঝাউ, মেহগনি, পাতাবাহার, একাশিয়া, নারকেল, ইউক্যালিপটাস প্রভৃতি গাছ। পার্কে নিয়মিত আসেন, এমন কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে অনেক গাছ ছিল। যেগুলো বিভিন্ন সময়ে কেটে ফেলা হয়েছে।

গুলিস্তান পার্কের আয়তন ছিল ৩৭ দশমিক ৯ বিঘা। এখন আছে ২৯ বিঘার মতো। যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার কথা বলে ১৯৯৫–৯৬ সালে পার্কের অনেক গাছ কেটে দুটি সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়। বর্তমানে বেশির ভাগ সময় এই সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। রোববার দুপুরেও সেখানে ইলিশ পরিবহনসহ একাধিক পরিবহনের অনেকগুলো বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এসব বাসের কারণে এলাকায় নিয়মিত যানজট লেগে থাকে।

১৯৯৭ সালে পার্কের প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট জায়গা নিয়ে ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ‘মহানগর নাট্যমঞ্চ’ নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালে একটি নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হলেও এই মঞ্চে বেশির ভাগ সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের অনুষ্ঠানই শুধু হয়। রোববারও সরকারি দলের একটি অঙ্গসংগঠনের অনুষ্ঠান হতে দেখা যায়। নাট্যমঞ্চের পেছনে পার্কের জায়গায় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ নির্মাণ করা হয়।

পার্ক সংস্কার প্রকল্পের পরিচালক ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পার্কটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে ভবঘুরেদের আড্ডা, মাদকাসক্তদের আসর বা যেকোনো অসামাজিক কাজ এখানে যাতে চলতে না পারে, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা