• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭৩ বছর

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২৩  

মোংলা বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ শুক্রবার। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এ বন্দর ৭২ বছর আগে এই দিনে দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ব ঐতিহ্যের ধারক সুন্দরবনের পাদদেশে অবস্থিত এ বন্দর ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। একই বছরে ১১ ডিসেম্বর পশুর নদীর জয়মনির ঘোলে ‘দি সিটি অব লিয়নস’ নামক প্রথম ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গরের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি এ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এ মোংলা বন্দরটি। নানা উৎসব ও উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে এ দিনটি পালনে সকল প্রস্তুতি সম্পুর্ন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। 
বন্দর সুত্রে জানা যায়, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে সুন্দরবনের পাশে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা পশুর নদীর পাড়ে স্থাপিত এ সমুদ্র বন্দরটি। প্রথমে চালনা বন্দর নামে মোংলায় যাত্রা শুরু করে দেশের সম্ভাবনাময় এ সমুদ্র বন্দরটি। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর বন্দরে বিদেশি একটি ব্রিটিশ বণিক জাহাজ ‘দি সিটি অব লিয়নস’ মোংলা বন্দরে প্রথম নোঙ্গর করে। সমুদ্রগামী জাহাজ নোঙরের ক্ষেত্রে মোংলা অধিকতর সুবিধাজনক হওয়ায় ১৯৫৪ সালে বন্দরটি চালনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয়। তখন মোংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে চালনা নামেই পরিচিত ছিল। বন্দর প্রতিষ্ঠার পর এটি প্রথমে চালনা অ্যাঙ্কর পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে ‘চালনা পোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং সর্বশেষ ১৯৮৬ সাল থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসাবে যাত্রা শুরু করে।
দীর্ঘতম সময়ের সকল চরাই-উৎরাই পার করে মোংলা বন্দর ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় টায় বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পন্য অঅমদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়। এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা উঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্বোধন করবেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও বন্দর কর্তপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী সহ বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত বছরের বিভিন্ন পন্য বোঝাই দেশী-বিদেশী জাহাজ আগমনের রেকর্ড সৃষ্টি করাসহ নানা বিষয় আলোচনা করবেন মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান। এছাড়া উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে নানা বিষয় আলো হবে অনুষ্ঠানে। 
সকাল সাড়ে ১০ টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, গীতা ও বাইবেল পাঠ, বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলীর শুভেচ্ছা বক্তব্য, অনুষ্ঠানে কেক কাটা, বেলা ১১ টায় সর্বোচ্চ বন্দর ব্যবহারকারীদের ক্রেস্ট প্রদান, কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য নির্বাচিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্রেস্ট প্রদান, বিদায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্রেস্ট প্রদানসহ নানা কর্মসুচি । 
এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিশেষ অতিথি হিসাবেপরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারসহ সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, বন্দরের পদস্থ কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, মোংলা প্রেস ক্লাব সদস্যবৃন্দ, সিবিএ নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়াও মোংলা বন্দরের অগ্রগতি কামনায় দোয়া এবং দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা। 
মোংলা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বন্দরকে আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল বন্দরে রূপান্তিত এবং অচল বন্দরকে সচল ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে বন্দরে ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আরো উদ্যোগী এবং সহনশীল হয়ে বন্দরের সুনাম রক্ষায় সকলকে সহযোগীতা করতে আহবান জানান। 
১৯৫০ সালের এ দিনে চালনা এ্যাংকারেজ পোর্ট নামে মোংলা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় নানা সমস্যা মোকাবেলা করে পণ্য আমদানী রফতানি ও  সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে মোংলা সমুদ্র বন্দর, যা আগামী দিনেও এ উন্নয়ণ ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা