• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

ফের ভোট বর্জনের ধারায় বিএনপি

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯  

৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার মধ্যদিয়ে ভোটের লড়াইয়ে ফিরলেও আবারও বর্জনের ধারায় চলে যাচ্ছে বিএনপি।

আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ আর কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না দলটি।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের নীতিনির্ধারকদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি না।

‘আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় এ ধরনের নির্বাচনে প্রহসন ছাড়া অন্য কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ,’ বললেন ফখরুল।

তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। সে কারণে আমরা এ নির্বাচনগুলোতে অংশ নিচ্ছি না। এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। তবে তারপর স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে তারা অংশ নিচ্ছিল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, বৈঠকে তারা আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে একমত হয়েছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া ঠিক হবে না।

এ ক্ষেত্রে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কারাগারে থাকা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে বারবার পেছনে ফেলা হচ্ছে। এ কারণে দলের সব মনোযোগ এখন চেয়ারপারসনের মুক্তির দিকে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই যাব না। এমনকি স্বতন্ত্র কেউ প্রার্থিতা করতে পারবে না। কেন যাব তাদের অধীনে নির্বাচনে? তারা তো সুষ্ঠু নির্বাচন করতে জানে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক : নীতিনির্ধারকদের বৈঠকের আগে গুলশান কার্যালয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামকে পুনর্গঠন করা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আগামী ৩১ জানুয়ারি আবারও বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, সারা দেশে মামলা-হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবী ফোরামকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এজন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে তিনি দায়িত্ব দেন। তিনি এ ফোরামের আইনজীবীসহ অন্যদের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে করণীয় কৌশল নির্ধারণ করে হাইকমান্ডকে অবহিত করেন।

এ নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর বাইরে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে নেতারা আলোচনা করেন। তাকে জামিনে মুক্ত করার জন্য নতুন কৌশলে আইনি তৎপরতা শুরু করার জন্য নীতিনির্ধারকরা আইনজীবীদের পরামর্শ দেন।

বৈঠকের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমরা ম্যাডামের মামলার বিষয়গুলোকে জোর দিচ্ছি।

তার মুক্তির ব্যাপারটিকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় কিভাবে তার জামিন সম্ভব হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেগম জিয়ার জামিনের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। এ কারণে তার জামিন হচ্ছে না। আমাদের আলোচনা হয়েছে, আরও আলোচনা হবে।

অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি সিলেক্টিভ আইনজীবীদের বর্ধিত সভা হবে। সেখানে আরও বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন আবদুর রেজ্জাক খান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, জয়নুল আবেদিন, আমিনুল হক, নিতাই রায় চৌধুরী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা